ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪ | ১২ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

টোকেন দিয়ে চাঁদাবাজি

সাভার প্রতিনিধি
🕐 ৯:৪২ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ২০, ২০১৯

সাভার উপজেলার নরসিংহপুর এলাকায় টোকেন নম্বর দিয়ে অটোরিকশা ও মাহেন্দ্র থেকে যুবলীগ নেতা কবির সরকার ও তার লোকজনের বিরুদ্ধে চাঁদা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। নরসিংহপুর থেকে কাসেমপুর এলাকা পর্যন্ত চলাচলরত বিভিন্ন অটোরিকশা থেকে প্রতিদিন ১০০ টাকা করে চাঁদা আদায় করা হয়। এমনকি তাদের হাত থেকে বাদ যায়নি লেগুনা, মিনিবাস ও মাহেন্দ্র। এসব গাড়ি থেকেও প্রতিদিন ৫০-১০০ টাকা পর্যন্ত চাঁদা আদায় করা হয়।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নরসিংহপুর বাসস্ট্যান্ড থেকে কাসেমপুর পর্যন্ত ওই সড়কে দুই শতাধিক অটোরিকশা চলাচল করে। প্রতিদিন এসব রিকশা থেকে ৫০-১০০ টাকা করে চাঁদা আদায় করে আশুলিয়া থানা যুবলীগের আহ্বায়ক কবির সরকারের লোকজন। এমনকি আব্দুল্লাহপুর-বাইপাইল মহাসড়কে নরসিংহপুর বাসস্ট্যান্ড এলাকা দিয়ে চলাচলরত দেড় শতাধিক মিনিবাস ও লেগুনাকে প্রতিদিন ৫০ টাকা চাঁদা দিতে হয়। এ ছাড়াও কাসেমপুর সড়ক দিয়ে চলাচল করে প্রায় অধর্শত মাহেন্দ্র। প্রতিদিন এসব মাহেন্দ্র থেকে ১০০ টাকা আদায় করা হয়।

মাহেন্দ্র থেকে টাকা আদায়ের দায়িত্বে থাকা লাইনম্যান বাবু বলেন, প্রতিটি মাহেন্দ্র থেকে ১০০ টাকা করে আদায় করেন। আর দিনশেষে ওই টাকা স্থানীয় যুবলীগ নেতা আপেলের হাতে তুলে দেন। এ ছাড়াও প্রতি মাসে প্রতিটি মাহেন্দ্র থেকে জমা বাবদ ১২শ টাকা ও ভর্তির (সড়কে মাহেন্দ্র চালানোর অনুমতি) জন্য পাঁচ হাজার টাকা নেওয়া হয় বলেও তিনি জানান। তবে মাহেন্দ্র স্ট্যান্ডের বিষয়ে তিনি যুবলীগ নেতা কবির সরকারের সঙ্গে কথা বলার জন্য বলেন।

এ ছাড়াও নরসিংহপুর এলাকায় যুবলীগ নেতা বেলায়েত, রাসেল, সোহেল ও ইয়ারপুর ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য বকুল এসব যানবাহন থেকে টাকা আদায় করেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

আব্দুল্লাহপুর-বাইপাইল মহাসড়কে চলাচলরত বিভিন্ন লেগুনা ও মিনিবাস থেকে জিপি বাবদ নরসিংহপুর বাসস্ট্যান্ড এলাকা থেকে প্রতিদিন ৫০ টাকা আদায় করার অভিযোগ রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে।

এতে করে ওই এলাকার অটোরিকশা, মাহেন্দ্র, মিনিবাস ও লেগুনা থেকে মাসে প্রায় ১৫ লাখ টাকা চাঁদা আদায় করা হচ্ছে। লেগুনাচালক হান্নান বলেন, তিনি বাইপাইল থেকে আশুলিয়া বাজার এলাকা পর্যন্ত লেগুনা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন। তিনি প্রায় পাঁচ বছর ধরে এ এলাকায় লেগুনা চালিয়ে আসছেন। নরসিংহপুর বাসস্ট্যান্ড এলাকায় তাকে প্রতিদিন ৫০ টাকা চাঁদা দিতে হয়। যুবলীগ নেতার লোক সোহেল এ টাকা আদায় করেন বলে তিনি জানান।

কবির ও মুকছেদ বলেন, তারা মাথার ঘাম পায়ে ফেলে অনেক কষ্টে অটোরিকশা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন। প্রতিদিন অটোরিকশা চালিয়ে যে আয় হয় তাতে করে তাদের সংসার চালাতে অনেক সময় হিমশিম খেতে হয়। অথচ যুবলীগ নেতার লোকজন প্রতিদিন তাদের কাছ থেকে ৫০ টাকা ও প্রতি মাসে ১০০ টাকা করে চাঁদা আদায় করে বলে অভিযোগ করেন তারা।

মনির ও জামান বলেন, যুবলীগ নেতার লোকজনকে টাকা দিলে তারা অটোরিকশায় একটি টোকেন নম্বর লিখে দেওয়া হয়। ওই টোকেন না থাকলে কেউ নরসিংহপুর-কাসেমপুর সড়কে অটো চালাতে পারে না। এ ছাড়াও টাকা না দিলে তাদের অটোরিকশা আটকে রাখা হয় বলেও অভিযোগ করেন।
তাছাড়া তাদের নিয়মিত চাঁদা না দিলে অটোরিকশা চালানোই বন্ধ করে দেওয়া হয়। আর তাদের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ দিলে তো এলাকায় থাকতেই দেবে না।

ঢাকা জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক জিএস মিজান বলেন, এ ধরনের বিষয় তার জানা নেই। তবে তার দলের কেউ চাঁদা আদায়ের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা তিনি জানান।

আশুলিয়া থানার পরিদর্শক (ওসি তদন্ত) জাবেদ মাসুদ বলেন, বিষয়টি সম্পর্কে খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও তিনি জানান।

 
Electronic Paper