ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪ | ১০ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

গাজীপুরে নিত্যপণ্যের বাজারে ক্রেতাদের নাভিশ্বাস

গাজীপুর প্রতিনিধি
🕐 ১০:০১ অপরাহ্ণ, মে ১৮, ২০১৮

গাজীপুরে মাত্র এক সপ্তাহের ব্যবধানে নিত্যপণ্যের বাজারে অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। বিভিন্ন ধরনের সবজির দাম কেজিতে বেড়েছে ১০-৩০ টাকা পর্যন্ত। পবিত্র রমজান মাসে হুট করে সবজির মূল্যবৃদ্ধিতে ক্ষোভ জানিয়েছেন ক্রেতারা। তাদের অভিযোগ, সবজির আড়ত ও বাজারে পর্যাপ্ত সবজি থাকার পরও মূল্যবৃদ্ধি অযৌক্তিক।

তবে কাঁচামাল আড়ত ব্যবসায়ীদের দাবি, ‘টানা বর্ষণ, কালবৈশাখী ও শিলাবৃষ্টিতে ফসলি জমির ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।  মোকামেই সবজির দাম বেশি। চাহিদার তুলনায় সরবরাহ হচ্ছে কম। তবে আগামী কয়েকদিনের মধ্যে সবজির দাম ক্রেতাদের হাতের নাগালে আসবে বলে আশা করছেন তারা। তবে প্রতিবছর রমজান মাসে গাজীপুরে নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি পাওয়া এখন নিয়মে পরিণত হয়েছে। এদিকে, গত বছরের ২১ মে দৈনিক খোলা কাগজে ‘রমজানের আগেই গাজীপুরে বেড়েছে নিত্যপণ্যের দাম’ শীর্ষক একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছিল।
গতকাল শুক্রবার গাজীপুরের বিভিন্ন কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা যায়, এক সপ্তাহের ব্যবধানে আলু (ডায়মন্ড) কেজিতে বেড়েছে পাঁচ টাকা। বেগুনের কেজি এক লাফে ৪০টাকা থেকে ৭০টাকা। এছাড়া পটল, ঝিঙ্গা, চিচিংগা, কাঁকরোল, করলা, শসা, পেঁপে, বরবটি, ঢেঁড়স, কাঁচামরিচ, এমনকি কচুর লতির কেজিও ৪০ টাকা থেকে বেড়ে ৬০ টাকা হয়েছে। ছোট আকারের একটি লাউ ৬০-৭০ টাকা দাম হাঁকছেন খুচরা বিক্রেতারা। টমেটো গত সপ্তাহে ৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হলেও বর্তমান মূল্য ৫০ টাকা। হঠাৎ করে সবজির মূল্যবৃদ্ধি পাওয়ায় জেলার অধিকাংশ কাঁচাবাজারে ক্রেতাসংখ্যা কমে গেছে।
অন্যদিকে, এক সপ্তাহের ব্যবধানে চিনি ৫৫ টাকা থেকে ৬০, মুড়ি ৬০-৬৫, সয়াবিন ৯০-৯৫, আখের গুড় ৭০-৮০, রসুন (বিদেশি) ১০০-১২০, আদা ১০০-১২০, মসুর ডাল (হাইব্রিড) ৬০-৭০, শুকনা মরিচ (দেশি) ১৫০-১৬০ টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে। এছাড়া বয়লার মুরগি ১৩০ টাকা কেজি থেকে ১৪০, লেয়ার মুরগি ১৬০-১৭৫ টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে।
ভোগড়া বাইপাস কাঁচামাল আড়তের পাইকারি বিক্রেতা আবুল হাসেম জানান, ‘চাহিদার তুলনায় সবজি সরবরাহ হচ্ছে কম। দেশের বিভিন্ন মোকামেই সবজির দাম বেশি। হঠাৎ করে দাম বেড়ে যাওয়ায় বিক্রি না হওয়ার আশঙ্কায় অনেক পাইকারি বিক্রেতাই মালামাল কম করে কিনছেন। রমজানে চাহিদার তুলনায় বেগুনের সরবরাহও অনেক কম।’
গাজীপুর মহানগরীর বাসন সড়ক কাঁচাবাজারের সবজি বিক্রেতা সোলাইমান জানান, তাকে এক পাল্লা (পাঁচ কেজি) বেগুন ৩২৫ টাকায় কিনতে হয়েছে। কাঁকরোলের পাল্লা ২৭৫ টাকা। ছোট আকারের একেকটি লাউ কিনেছেন ৪৫ টাকা দরে, জালি কুমড়া মাঝারি আকারের একেকটি কিনেছেন ৫০ টাকা দরে। ক্রয়মূল্য বেশি হওয়ায় তাকে বাড়তি দামেই বিক্রি করতে হচ্ছে।  
বেসরকারি ব্যাংক কর্মকর্তা দোলোয়ার হোসেন খান জানান, রমজান মাস ছাড়াও সারা বছরেই সব শ্রেণি-পেশার মানুষদের দৈনিক খাবারের মেনুতে সবজি প্রথম স্থানে থাকে। প্রতিবছর রমজানে নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির পর প্রশাসনের টনক নড়ে। অথচ আগে থেকেই নিয়মিত বাজার মনিটর করলে মূল্য অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব হতো। একবার মূল্য বৃদ্ধি পেলে তা নিয়ন্ত্রণে আনতে বেশ কয়েকদিন সময় লেগে যায়। ততদিনে ক্রেতাদের মাসিক বাজেটে ভর্তুকি গুনতে হয়।
গাজীপুর জেলা বাজার কর্মকর্তা আবদুছ ছালাম জানান, গত রোববার দুপুরে গাজীপুর জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে জেলার বিভিন্ন আড়ত ও বাজার কমিটির নেতৃবৃন্দের সঙ্গে জেলা প্রশাসনের বৈঠক হবে। এ সভায় নিত্যপণ্যের মূল্য নিয়ন্ত্রণ, ভেজালবিরোধী অভিযানসহ আরও বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করা হবে। সারা দেশেই সবজির মূল্যবৃদ্ধি পেয়েছে। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিয়মিত ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান চলছে বলে জানান তিনি।

 
Electronic Paper