সাভারে পাঁচ দিনে সাত লাশ
সাভার প্রতিনিধি
🕐 ১২:৫০ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ১৫, ২০১৮
সাভারের আশুলিয়ায় গত পাঁচ দিনে ডাকাতিসহ পৃথক ঘটনায় সাতটি লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এছাড়াও প্রতিনিয়ত ঘটছে চুরির ঘটনাও। এসব বিষয়ে জনসাধারনের মনে দেখা দিয়েছে আতঙ্ক।
স্থানীয় বাসিন্দা খায়রুল ইসলাম জানান, লাশটি কয়েকদিন আগের বলে ধারণা করছে পুলিশ। সকালে লাশ উদ্ধারের খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে এসে ৮টুকরো মরদেহ দেখতে পাই। এসময় নিহতের পরনে কোন কাপড় ছিল না। ঘটনাস্থলের প্রায় ১০০ গজ দূরে পরিত্যক্ত অবস্থায় একটি গ্রীল কাটার মেশিন ও এক জোড়া স্যান্ডেল দেখতে পায় স্থানীয়রা।
চলন্তবাসে ডাকাতিসহ হত্যা আতঙ্কের রেশ না কাটতেই গত ১২ নভেম্বর মিরপুরের ইস্টার্ন হাউজিং সংলগ্ন বেড়িবাধ এলাকায় বেশ কয়েকটি চলন্ত গাড়ি থামিয়ে ডাকাতরা লুট করে নেয় যাত্রীদের মোবাইল ফোন, টাকাসহ মূল্যবান মালামাল।
কাভার্ড ভ্যান চালক শওকত হোসেন জানান, ভোরে দূর্গাপুর এলাকায় গাড়ি থামিয়ে ডাকাতরা তার কাছ থেকে নগদ ১২’শ টাকা ও মোবাইল ফোন লুট করে। এসময় আরও ৬টি গাড়ি থামিয়ে লুটপাট করে ডাকাতরা।
একই দিন আশুলিয়ার বাড়ইপাড়া এলাকায় স্ত্রীকে শ্বাসরোধে হত্যার পর স্বামী সিরাজুল ইসলাম পালিয়ে যায়। নিহতের ভাই দুদু মিয়া বলেন, তার বোনকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। একই দিনে আশুলিয়ার বাংলাবাজার এলাকা থেকে ফুলমতি (১১) নামে এক শিক্ষার্থীর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
গত শুক্রবার সকালে মেয়েকে নিয়ে আশুলিয়ার গাজিরচট এলাকায় তার নাতনীর বাসায় বেড়াতে আসেন বৃদ্ধা আকবর আলী মন্ডল। সন্ধ্যায় সিরাজগঞ্জ নিজ বাড়ি ফেরার উদ্দেশ্যে আশুলিয়ার ইউনিক থেকে টাঙ্গাইলগামী একটি বাসে উঠেন বাবা ও মেয়ে। তবে বাসটি টাঙ্গাইলের দিকে না গিয়ে বাইপাইল মোড় হতে ঘুরে আবার আশুলিয়ার দিকে চলে আসে। পরে বাসটি আশুলিয়ার মরাগাঙ্গ এলাকায় পৌঁছালে তাকে মারধর করে এবং তার সঙ্গে থাকা মোবাইল ফোন ও নগদ টাকা ছিনিয়ে নিয়ে চলন্ত বাস থেকে তাকে ফেলে দিয়ে মেয়েকে অপহরণ করে। বিষয়টি টহল পুলিশকে জানালে প্রায় তিন ঘণ্টা পর দুই কিলোমিটার সামনে গিয়ে মহাসড়কের পাশ থেকে মেয়ে জরিনা খাতুনের মরদেহ উদ্ধার করেন পুলিশ।
এঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই গত রোববার ভোররাতে ১০-১২ জনের ডাকাতদল একতলা বাড়ির জানালার গ্রিল কেটে ভিতরে প্রবেশ করে বাড়ির সবাইকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি রেখে বাসার মূল্যবান মালামাল লুট করতে থাকে। এসময় বাধা দিলে গৃহকর্তা আবুল সরকারকে গুলি ও কুপিয়ে হত্যা করে পালিয়ে যায়। একই দিন রাতে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে ভাইকে হত্যা করে অস্ত্র নিয়ে থানায় এসে পুলিশের কাছে আত্মসমর্পন করেন ছোট ভাই।
ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার শাহ মিজান শাফিউর রহমান বলেন, কয়েকদিনে আশুলিয়ায় ডাকাতিসহ একের পর এক খুনের ঘটনা সম্পর্কে বিচ্ছিন্ন বলে উল্লেখ্য করেছেন। জনগণের নিরাপত্তা দিতে পুলিশ সর্বদা সচেষ্ট থাকে। ডাকাতির ঘটনার পাশাপাশি ডাকাতদের গ্রেপ্তারের ঘটনাও ঘটে। পরিস্থিতি পুলিশের নাগালের মধ্যেই রয়েছে।