মৃত স্ত্রীকে নিয়ে হাসপাতালে স্বামী
সুমিত সরকার সুমন, মুন্সীগঞ্জ
🕐 ৫:৩০ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ০৭, ২০২২
মুন্সীগঞ্জে বর্ষা (২৬) নামে দুই সন্তানের জননীর নিহতের খবর পাওয়া গেছে।
মঙ্গলবার রাতে মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলার বজ্রযোগীনি ইউনিয়নের আজিমপুর এলাকায় বর্ষা মারা যান বলে জানা যায়।
রাতে বর্ষার স্বামী তাকে নিয়ে মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে এলে জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষনা করেন।
এই ঘটনায় নিহতের মা পারুল বেগম বাদী হয়ে আত্মহত্যার প্ররোচনায় মুন্সীগঞ্জ সদর থানায় মামলা করলে পুলিশ রাতেই স্বামী আমিনুল ইসলামকে আটক করে।
মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডাঃ সৈবাল বসাক জানান, রাতে নিহতের স্বামীসহ শশুরবাড়ির লোকজন মৃত অবস্থায় তাকে হাসপাতালে নিয়ে আসে। তার গলায় দাগ রয়েছে।
জানা গেছে, ১১ বছর আগে সদর উপজেলার আজিমপুর এলাকার সৌদি প্রবাসী আমিনুল ইসলামের সাথে তার পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। নিহত বর্ষার স্বামী সৌদি প্রবাসী কিছুদিন যাবৎ দেশে এসেছেন।
নিহতের স্বামী আমিনুল ইসলাম জানান, আমার সাথে বর্ষার কথা কাটাকাটি হয়। আমি রাগের মাথায় ঘর থেকে বেড়িয়ে যাই। কিছুক্ষণ পরে এসে দেখি আমার স্ত্রী ঘরের দরজা লাগিয়ে রেখেছে। আমি এসে ডাক দিলে সে অনেকক্ষণ যাবৎ কোন শব্দ না করায় আমি দরজা ভেঙে দেখি সে ফ্যানের সাথে দড়ি দিয়ে গলায় ফাঁস লাগিয়ে ঝুলছে। পরে তাকে দ্রত হাসপাতালে নিলে ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষনা করে।
নিহত বর্ষার স্বজন হাবিবুর রহমান ও তার পরিবার জানায়, দীর্ঘদিন যাবৎ পারিবারিক কলহের জের ধরে বর্ষাকে তার শাশুড়ি, ভাসুর ও ভাসুরের স্ত্রী নির্যাতন করে আসছিল। এই বিরোধ নিয়ে স্থানীয়ভাবে কয়েকবার সমাধান করা হলেও বর্ষার উপর নির্যাতন থামায়নি তার শ্বশুরবাড়ির লোকজন।
বর্ষার মা পারুল বেগম অভিযোগ করে বলেন, মেয়ের শাশুড়ি, ভাসুর ও ভাসুরের স্ত্রী পারিবারিক বিভিন্ন বিষয়কে কেন্দ্র করে বর্ষাকে সব সময় নির্যাতন করত। শেষ পর্যন্ত বর্ষা নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছে। আত্মহত্যার আগে যারা তাকে নির্যাতন করত তাদের নাম লিখে একটি চিরকুট রেখে গেছেন। মেয়ের মৃত্যুর জন্য যারা দায়ী তাদের বিচার চাই।
এ বিষয়ে মুন্সীগঞ্জ হাতিমারা তদন্তকেন্দ্রের পুলিশ পরির্দশক অমল দাশ জানান, এই ঘটনায় লাশ ময়নাতদন্তে সম্পন্ন ও এ ঘটনায় নিহতের স্বামীকে আটক করা হয়েছে। স্বামীর বাড়ি থেকে একটি চিরকুট পাওয়া গেছে চিরকোঠটি পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। সেখানে যারা তাকে নির্যাতন করতো তাদের নাম লেখা রয়েছে।