ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪ | ১২ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

গাজীপুর ট্রাফিকের মাসোহারা বাণিজ্য

তানজেরুল ইসলাম, গাজীপুর
🕐 ১১:২০ পূর্বাহ্ণ, নভেম্বর ১৪, ২০১৮

গাজীপুর মেট্রোতে সিএনজিচালিত অটোরিকশা মাসোহারা করার হিড়িক হয়েছে। অবৈধ এ বাণিজ্যের কলকাঠি নাড়ছে মেট্রো ট্রাফিক পুলিশ বিভাগের অসাধুরা। সহযোগিতায় গাজীপুর মহানগর সিএসজিচালিত অটোরিকশা মালিক সমিতি।

জানা গেছে, মেট্রোর উত্তর ও দক্ষিণে পরিবহন সেক্টরে শৃঙ্খলা রক্ষায় কাজ করছে মেট্রো ট্রাফিক পুলিশ বিভাগ। তবে মেট্রোর শুরুতেই মাসোহারায় মত্ত মেট্রো ট্রাফিক বিভাগ সিএনজি মালিক-চালকদের মাথাব্যথা বাড়িয়েছে।

সিএনজি অটোরিকশা মালিক-চালক ও সিএনজি অটোরিকশা স্ট্যান্ড সংশ্লিষ্টরা জানায়, চলতি মাস থেকে সিএনজি অটোরিকশা প্রতি আটশ টাকা মাসোহারা ধার্য হয়েছে।

অগণিত সিএনজি অটোরিকশা মাসোহারা করে স্টিকার সাঁটানো হয়েছে। সিএনজি অটোরিকশা মাসোহারা করে অল্প দিনেই মেট্রোতে ব্যাপক পরিচিতি পেয়েছেন ট্রাফিক সার্জেন্ট রফিক। তবে মেট্রো শুরুর প্রথম দিকে বেশ কয়েকজন ট্রাফিক সার্জেন্ট বিচ্ছিন্ন ভাবে সিএনজি অটোরিকশা মাসোহারা শুরু করেছিলেন। এতে বেঁকে বসে গাজীপুর মহানগর সিএনজিচালিত অটোরিকশা মালিক সমিতি। দুর্নামের শঙ্কায় মেট্রো ট্রাফিক পুলিশ ও মালিক সমিতির লিয়াজু হয়। মাসোহারা উত্তোলনের দায়িত্বে আসে মালিক সমিতি।

সিএনজি অটোরিকশাচালক মোসলেম জানান, তিনি অক্টোবর মাসে এক হাজার টাকা দিয়ে সার্জেন্ট রফিকের কাছে মাসোহারা করেছেন। তবুও মামলার ভয়ে আছেন।

সিএনজি অটোরিকশাচালক জিয়া জানান, মাসোহারা বেড়েছে তাই মালিক দৈনিক জমা বাড়তে পারেন। তবে উটকো এ বোঝা যাত্রীদের ঘাড়েই পড়বে।

সিএনজি অটোরিকশাচালক ওমর আলী জানান, মালিক সমিতি ও ট্রাফিক পুলিশ মিলেমিশে মাসোহারা ধার্য করেছে। তিনি মাসোহারা করে স্টিকার সাঁটিয়েছেন।

সিএনজি অটোরিকশা মালিক সিরাজ জানান, তাকে স্টিকার নিতে মালিক সমিতি ডেকেছে। তবে এ লেজেগোবরে অবস্থায় তিনি সিএনজি অটোরিকশা বেঁচে দিয়ে পরিত্রাণ চাইছেন।

অনুসন্ধান বলছে, গাজীপুর মেট্রোসহ জেলার উপজেলাগুলোতে আড়াই হাজারের মতো সিএনজি অটোরিকশা চলছে। মেট্রোতেই রয়েছে প্রায় এক হাজার। হিসাব মতে, সিএনজি অটোরিকশাগুলোর মাসোহারা দাঁড়ায় ২০ লাখ টাকা। ইতোমধ্যে গাজীপুর মহানগর সিএনজিচালিত অটোরিকশা মালিক সমিতি (রেজি: নং-৪১৪৩) নামে স্টিকার ছাপিয়ে অগণিত সিএনজি অটোরিকশায় সাঁটানো হয়েছে।

গাজীপুর মহানগর সিএনজিচালিত অটোরিকশা মালিক সমিতির সভাপতি আরিফ হোসেন সেন্টু জানান, মাসোহারার ব্যাপারে তিনি তেমন কিছুই জানেন না। এ ছাড়া মালিক সমিতি মাসোহারা উত্তোলনের দায়িত্ব নেয়নি বলে তিনি দাবি করেন। মালিক সমিতির নাম ভাঙিয়ে কারা স্টিকার সাঁটাচ্ছেন এ ব্যাপারেও তিনি মুখ খোলেননি। তবে এ ব্যাপারে তিনি ট্রাফিক পুলিশকে দায়ী করেছেন।

ট্রাফিক সার্জেন্ট রফিক জানান, সব যখন জানেন তবে মাসোহারার কথা জিজ্ঞেস করছেন কেন? সিএনজি অটোরিকশা মালিক সমিতি ও মালিক-চালকরা আপনার কথা জানিয়েছে।

এছাড়া তাদের কাছে আপনার মোবাইল নাম্বার আছে এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘আমি গাজীপুরে চাকরি করি। আমার নাম্বার তাদের কাছে থাকতেই পারে। আপনি আমার সঙ্গে দেখা করেন।’

গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার ওয়াই এম বেলালুর রহমান জানান, মাসোহারার বিষয়টি তিনি জানেন না। কারা স্টিকার সাঁটাচ্ছেন আর কারাই বা মাসোহারা করছেন এ ব্যাপারে খোঁজ নিয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানান তিনি।

 
Electronic Paper