অধ্যক্ষের নোটিশেও সরছে না দখলদাররা
কিশোরগঞ্জে হাসপাতালের যাত্রী ছাউনি ব্যবসায়ীদের কব্জায়
মো: আল-আমীন, কিশোরগঞ্জ
🕐 ৯:৩০ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ০২, ২০২২
কিশোরগঞ্জে শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের যাত্রী ছাউনিটি অবৈধভাবে দখল করে রেখেছেন স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যবসায়ীরা। হাসপাতালের প্রবেশ পথে অবাধে গাড়ি পার্কিং করায় লেগে থাকে যানজট। ফলে, চলাচল করতে গিয়ে প্রতিনিয়তই বিপাকে পড়ছেন সাধারণ নাগরিকরা। কর্তৃপক্ষ বলছে, যাত্রী ছাউনি থেকে ৭ দিনের মধ্যে অবৈধ স্থাপনা সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দেয় মেডিকেল কলেজ। কিন্তু, মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষের নির্দেশও সরছে না অবৈধ দখলদাররা। এদিকে, লিখিত অভিযোগ পেলে অবৈধ দখলদারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক।
জানা যায়, ২০১৯ সালে যাত্রীদের সার্বিক দিক চিন্তা করে যাত্রী ছাউনি করার উদ্যোগ নেয় যশোদল ইউনিয়ন পরিষদ। পরে তাদের অর্থায়নেই দুই লাখ টাকা ব্যয়ে মেডিকেল কলেজ গেইটে সাধারণ যাত্রী ও কলেজের শিক্ষার্থীদের জন্য ছাউনি নির্মাণ করা হয়। যাত্রী ছাউনি নিমার্ণের পর নানা কারণে সেটি উদ্বোধন করা হয়নি। এই সুযোগে ছাউনিটি দখল করে গড়ে তুলে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। এরপর স্থাপনা সরিয়ে নিতে নির্দেশ দিলেও তা মানেনি দখলদাররা।
সূত্র জানায়, ২০২০ সালের ১লা ডিসেম্বর তৎকালীন জেলা প্রশাসক মো. সারোয়ার মুর্শেদ চৌধুরীর নির্দেশে সহকারি কমিশনার মাহমুদুল হাসানের নেতৃত্বে এসব স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছিল। পরবর্তী মেডিকেল কলেজের সম্মুখের কিছু অসাধু ব্যবসায়ীরা সরকারি স্থাপনা নষ্ট করে পুনরায় কলেজ ও হাসপাতাল গেইটের দেয়ালের পাশে ব্যবসা শুরু করে। এতে একদিকে যেমন কলেজ ও হাসপাতালের সৌন্দর্য্য নষ্ট হচ্ছে, অন্যদিকে সরকারি সম্পত্তিও অবৈধভবে ব্যবহার করছে ব্যবসায়ীরা।
স্থানীয়দের ভাষ্য, শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে প্রতিদিন সেবা নিতে আসেন প্রায় তিন-চার হাজার মানুষ। এতে হাসপাতাল প্রবেশ পথে ঢুকতে গিয়ে ভোগান্তিতে পড়েন রোগীর স্বজনরা। কিন্তু, যাত্রীদের সেবার জন্য যে ছাউনিটি নির্মাণ করা হয় সেটিই দখল করে ব্যবসা করছেন স্থানীয়রা।
মেডিক্যাল শিক্ষার্থীরা জানান, পড়াশোনার মান, সুন্দর পরিবেশ ও সুগঠিত ক্যাম্পাসের চিন্তা করেই শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি হন শিক্ষার্থীরা। কিন্তু, কলেজ থেকে পৌর শহরে যাতায়াত ব্যবস্থা, সংকুচিত রাস্তা ও কলেজ হাসপাতালের সামনের পরিবেশ অত্যন্ত নাজুক। ফলে সঠিক ব্যবস্থাপনা ও পরিচর্যা না থাকায় প্রতিষ্ঠানটির দুর্নাম হচ্ছে বলে মনে করছেন শিক্ষার্থীরা।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক মেডিক্যাল শিক্ষার্থী জানায়, কলেজ গেইটে নির্মিত যাত্রী ছাউনিটি একদিনের জন্যও ব্যবহার করা হয়নি। ছাউনিটি নির্মাণ করার মাঝেই কিছু অসাধু ব্যবসায়ী ছাউনি দখল করে রেখেছে। এমন অবস্থায় দীর্ঘদিন ধরে কলেজ গেইটটিও বন্ধ করে রেখেছে কলেজ প্রশাসন।
এ বিষয়ে কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. মো. নজরুল ইসলাম খোলা কাগজকে জানান, কলেজের সুন্দর পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে আমরা কাজ করছি। কলেজ ক্যাম্পাসে বহিরাগতদের প্রবেশ, টিকটকার ও ইভটিজারদের যন্ত্রণায় কলেজ গেইটটি বন্ধ রাখা হয়েছিল। শনিবার থেকে কলেজ গেইট পুনরায় খোলা রাখা হয়েছে। আর গেইটের সামনে অবৈধ স্থাপনা শিগগিরই উচ্ছেদ করা হবে।
কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শামীম আলম খোলা কাগজকে বলেন, হাসপাতাল ও কলেজ কর্তৃপক্ষ লিখিতভাবে সহযোগিতা চাইলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।