জিও ব্যাগ ফেলেও থামানো যাচ্ছে না পদ্মার ভাঙন
গোয়ালন্দ (রাজবাড়ী) প্রতিনিধি
🕐 ৭:১৬ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ৩০, ২০২২
রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়ার পদ্মা নদীর ভাঙন অব্যাহত রয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড জরুরি ভিত্তিতে বালুভর্তি জিও ব্যাগ ফেলা শুরু করলেও ভাঙন রোধ করা যাচ্ছে না। বরং বছরের পর বছর ভাঙনে দৌলতদিয়া ইউনিয়নের প্রায় এক তৃতাংশ নদী ভাঙনে বিলীন হয়ে গেছে। জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙন রোধের চেষ্টা করা হলেও মুলত জিওব্যাগ কোন কাজেই আসছে না। তাছাড়া স্রোতে জিওব্যাগ ফেললে সেগুলো স্রোত টেনে নিয়ে যাচ্ছে।
এদিকে নতুন করে ভাঙন দেখা দেওয়ায় গত বুধবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে পদ্মা নদীর ভাঙনে দৌলতদিয়া ৩ নম্বর ফেরিঘাট ও ঘাটের পাশে অবস্থানরত পাঁচটি পরিবারের বসতঘর নদীগর্ভে চলে গেছে। সেই সঙ্গে বিলীন হয়ে গেছে সালাম বেপারীর রান্নাঘর। বসতঘরও ঝুঁকিতে রয়েছে। এরপর থেকে বন্ধ রয়েছে দৌলতদিয়ার ৩ নম্বর ফেরিঘাট। অন্যত্র ঘরবাড়ি সরিয়ে নিচ্ছে ঘাটের আশপাশে বসবাসরত পরিবারগুলো।
এছাড়াও পদ্মা নদীর ভাঙনের কারণে গত ৬ সেপ্টেম্বর দৌলতদিয়ার ৫ নম্বর ফেরিঘাট নদীগর্ভে চলে যায়। ওই ফেরিঘাট প্রায় এক মাস ধরে বন্ধ রয়েছে। বর্তমানে দৌলতদিয়া ঘাটে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) সাতটি ঘাট রয়েছে। এর মধ্যে ১ ও ২ নম্বর ফেরিঘাট কয়েক বছর ধরে বিকল। চলতি মাস থেকে ৫ নম্বর ফেরিঘাট বন্ধ রয়েছে। বৃহস্পতিবার ভোর থেকে ৩ নম্বর ফেরিঘাটের কিছু অংশ নদীগর্ভে চলে যাওয়ায় বন্ধ রয়েছে। সচল রয়েছে ৪, ৬ ও ৭ নম্বর ফেরিঘাট। জরুরিভাবে নদী শাসনের কাজ না করলে দৌলতদিয়া ফেরিঘাট নদীগর্ভে চলে যাবে।
দৌলতদিয়া ভাঙন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, শুক্রবার ফেরিঘাট রক্ষার্থে বালভর্তি জিওব্যাগ ফেলার কাজ চলছে। বুধবার দিবাগত রাত ৩টার পর থেকে হঠাৎ ৩ নম্বর ফেরিঘাট ও ঘাটের নিচের কিছু অংশ নদীতে বিলীন হয়ে যায়। জরুরিভাবে ফেরিঘাট রক্ষার্থে বালভর্তি জিওব্যাগ ফেলার কাজ চলছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, স্থানীয় এমপি নদীশাসনের কার্যকর কোনো ভূমিকা পালন করছেন না। যখন ভাঙন শুরু হয়, তখন আশ্বাস পাই নদী শাসন করা হবে। ১০-১৫ কেজি চাল দিয়েই তাঁরা দায়িত্ব শেষ করে দেন।
অন্যদিকে, পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর ঘাটকেন্দ্রিক অনেক কর্মজীবী মানুষ বেকার হয়েছেন। অথচ তিনি আজ পর্যন্ত তাঁদের কর্মসংস্থান তৈরির বিকল্প কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছেন না। দ্রুত নদীশাসনসহ ঘাট এলাকার বেকার হয়ে পড়া মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে অনুরোধ জানাই।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) আরিচা কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. জহিরুল ইসলাম বলেন, ‘ভাঙনের খবর শুনে আমরা ঘাট এলাকায় যাই। গিয়ে ভাঙনকবলিত স্থানে বালুভর্তি জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙন ঠেকানোর চেষ্টা চালাচ্ছি। আমাদের পর্যাপ্ত বাজেট আছে। ভাঙন ঠেকাতে যত বালুভর্তি জিও ব্যাগ লাগে আমরা ফেলব।’