সিরাজদিখানে মাছ শিকারে মানছে না আইন
আজাদ নাদভী, সিরাজদিখান
🕐 ৮:৪১ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ২০, ২০২২
সিরাজদিখানে নদী, খাল-বিলে নিষিদ্ধ ভেসাল জাল ও ধর্মজাল দিয়ে অবাধে মাছ ধরা চললেও প্রশাসন নির্বিকার। এতে অচিরেই নদী ও খাল বিল থেকে দেশীয় প্রজাতির মাছ বিলুপ্ত হয়ে যাবার শঙ্কা সাধারণ মানুষের।
উপজেলা থেকে ইতোমধ্যে অনেক প্রজাতির মাছ হারিয়ে গেছে। হারানোর পথে আরো অনেক প্রজাতির দেশীয় মাছ। বিভিন্ন খালের মুখ আটকে মাছ ধরায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হচ্ছে বলে মনে করেন সচেতন মহল। ভেসাল জাল নিষিদ্ধ ঘোষিত হলেও উপজেলার সর্বত্রই চোখে পড়ে নিষিদ্ধ এই জাল ব্যবহার করে মাছ শিকারের।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলা মৎস্য অধিদপ্তর থেকে উন্মুক্ত জলাশয়ে মাছের পোনা অবমুক্ত করা হয়েছে। একশ্রেণীর মৎস্যজীবী খাল-বিলে ভেসাল দিয়ে এসব পোনাও ধরে ফেলছেন। মৎস্য আইন অনুযায়ী উন্মুক্ত জলাশয়ে, খাল-বিলে কোনো কিছু দিয়ে আড়াআড়ি বাঁধ দেয়া বা যেকোনো ধরনের ফাঁদ ব্যবহার ও স্থাপনা নির্মাণ এবং ভেসাল ও কারেন্ট জাল দিয়ে মাছ ধরা নিষিদ্ধ। অথচ মৎস্য আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে অবাধে দেশীয় প্রজাতির মাছ শিকার করছে তারা।
সরেজমিনে উপজেলার জৈনসার, মধ্যপাড়া, ইছাপুরা, মালখানগর, রশুনিয়া, বাসাইলসহ বিভিন্ন ইউনিয়নে ভেসাল ও ধর্ম জাল দিয়ে অহরহ মাছ শিকার করতে দেখা গেছে। উপজেলার সিরাজদিখান বাজার সংলগ্ন ইছামতি নদীতে গিয়ে দেখা গেছে, এক কিলোমিটার এলাকাজুড়ে ৩৮ টি ভেসাল জাল বসানো রয়েছে।
এসব ভেসালে বিকেল থেকে শুরু করে ভোররাত পর্যন্ত অবাধে মৎস্য নিধন করা হয়। এছাড়া পোড়াগঙ্গার খাল, কুসুমপুর-তালতলা খালে প্রায় অর্ধশতাধিক ভেসাল ও ধর্ম জাল রয়েছে, যা বেশিরভাগ খালের মধ্যে একটু পর পর দেখা যায়। কোনো তদারকি না থাকায় অবাধে মাছের পোনা নিধন হয়ে যাচ্ছে।
মানবাধিকার সংগঠনের সভাপতি এ এন এম হুমায়ুন কবির সাগর বলেন, দেশীয় প্রজাতির নানা প্রকার মাছ এখন হারিয়ে যেতে বসেছে। দেশীয় প্রজাতির মাছ রক্ষায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করেন তিনি।
ইছাপুরা জনতা সংসদের সাংস্কৃতিক সম্পাদক সাইফুজ্জামান লিটন জানান, বর্ষার পানি নেমে গেলে পুকুর, খাল-বিলে আর আগের মতো মাছ পাওয়া যায় না। আগে উন্মুক্ত জলাশয়ে কৈ, সিং, মাগুর, সরপুঁটি, টেংরা, বাতাশি, খৈলশা, টাকি নানা প্রকার মাছ পাওয়া যেত।
মৎস শিকারীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, দুয়ারী চাই, কারেন্ট জাল, ভেসাল ও ধর্ম জালে মাছের পাশাপাশি অনেক পোনাও আটকা পড়ে। কিন্তু পোনা কোনো কাজে লাগে না বলে মৃত পোনাগুলো ফেলে দেয়া হয়। অচিরেই নিষিদ্ধ এসব জাল দিয়ে মৎস শিকার বন্ধ করার দাবী সিরাজদিখান উপজেলার সচেতন মহলের।
এ বিষয়ে উপজেলার সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মাফরোজা সুলতানা বলেন, ইউএনও মহোদয়ের সাথে কথা বলে এমাসেই অবৈধ ভেসাল উচ্ছেদে অভিযান পরিচালনা করা হবে।