ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে দেড় ঘণ্টার পথ ৯ ঘণ্টায়
নজিরবিহীন যানজট
নিজস্ব প্রতিবেদক
🕐 ১০:৫০ অপরাহ্ণ, মে ১৪, ২০১৮
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক চারদিন ধরে কার্যত অচল হয়ে পড়ে আছে। গত শুক্রবার সকাল থেকেই যানজট তীব্র হতে শুরু করে। দুপুর ১২টায় এই যানজট ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের বাড়বকুণ্ড এলাকায় এসে পৌঁছে।
মহাসড়কের ফেনী অংশের পাশাপাশি কুমিল্লার মীরসরাই উপজেলার বড় দারোগারহাট পার হয়ে সীতাকুণ্ডের বাড়বকুণ্ড পর্যন্ত ২৫ কিলোমিটার জুড়ে যানজটে আটকা পড়ে হাজারো যাত্রী। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে থাকে এই ভয়ানক যানজট। বাড়তে বাড়তে গতকাল সোমবার পর্যন্ত এটি ৭০ কিলোমিটারের অধিক পর্যন্ত পৌঁছায়।
ফেনী জেলা পুলিশ পরিদর্শক (ট্রাফিক) মীর গোলাম ফারুক বলেন, ‘মহাসড়কের উত্তরে চৌদ্দগ্রাম এবং দক্ষিণে সীতাকুণ্ড পর্যন্ত প্রায় ৭৮ কিলোমিটার যানজট ছড়িয়ে পড়েছে। আগামীকাল (আজ মঙ্গলবার) কুমিল্লার লাকসাম দিয়ে চট্টগ্রামমুখী যাত্রীবাহী গাড়ি চালু করলে যানজট ধীরে ধীরে কমে আসবে।’
ঘণ্টার পর ঘণ্টা যানবাহনে বসে থেকে অতিষ্ঠ হয়ে ওঠেন যাত্রী ও চালকরা। সড়কের উভয়পাশে দূরপাল্লার বাস ও পণ্যবাহী ট্রাক, কাভার্ডভ্যানসহ হাজার হাজার গাড়ি থমকে আছে। সীতাকুণ্ড এলাকায় উল্টোপথে যান চলাচল করায় যানজট তীব্র আকার ধারণ করেছে। ৩০ মিনিটের পথ চলতে ৮-১০ ঘণ্টারও বেশি লেগে যাচ্ছে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, ফেনীর ফতেহপুর এলাকার রেলওয়ে ক্রসিংয়ের ওভারপাস নির্মাণকাজের কারণেই তৈরি হচ্ছে এ যানজট। ফেনীর ফতেহপুর রেলওয়ে ক্রসিংয়ের ওভারপাস নির্মাণকাজ শুরুর আগে দুপাশে বাইপাস নির্মাণ করার বিধান থাকলেও শুধু একপাশে তা রয়েছে। সেই পাশ ও প্রায় ৬০০ মিটার সড়ক খানাখন্দে ভরা, যা যান চলাচলের অনুপযোগী।
মহীপাল হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ আবদুল আউয়াল জানান, ‘ফতেহপুর রেলওয়ে ওভারপাসের নির্মাণকাজ চলায় যানজট দিন দিন তীব্র আকার ধারণ করছে। টানা কয়েক দিনের বৃষ্টিতে নষ্ট হয়েছে পুরো ১ কিলোমিটার রাস্তা। পাশাপাশি চার লেনের গাড়িগুলো চলছে এক লেনে। ফলে যানজট লাঘব করা সম্ভব হচ্ছে না। তবুও মহাসড়কে যানজটমুক্ত করতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে পুলিশের একাধিক টিম।’
গত রোববার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘ঢাকা-চট্টগ্রাম রোডে ফেনীর রেলওয়ে ওভারপাসের কারণে যানজট হচ্ছে, এতে মানুষের কষ্ট হচ্ছে। বিকল্প কোনো পথ নেই। সবাইকে একটু ধৈর্য ধরতে হবে। আমি এজন্য দুঃখিত।’
কাদের বলেন, ‘বিকল্প ব্যবস্থার জন্য আমি যথাসাধ্য চেষ্টা করছি। এখন বর্ষাকাল, অন্য সময় হলে হয়তো ম্যানেজ করা যেত। কোনো উপায় নেই। যাত্রী-মালামাল পরিবহনে সময় নষ্ট হচ্ছে জানি। একটু অপেক্ষা করতে হবে।’
কুমিল্লা হাইওয়ে পুলিশ সুপার নজরুল ইসলাম বলেন, ‘সাধারণ যাত্রীদের দুর্ভোগের কথা বিবেচনা করে যাত্রীবাহী গাড়ি লাকসাম ও নোয়াখালী হয়ে বিকল্প সড়ক দিয়ে চট্টগ্রামের দিকে পার করিয়ে দিচ্ছি।’