সৌন্দর্যের লীলাভূমি মারাইং তং
সুশান্ত কান্তি তঞ্চঙ্গ্যাঁ, আলীকদম
🕐 ১২:১২ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ২৫, ২০২১
ট্রেকিং প্রিয়দের কাছে পাহাড় মানেই ভিন্ন আকর্ষণ। দেশের পাহাড়ি দর্শনীয় স্থানগুলোর মধ্যে সাজেক, নীলগিরি বা নিলাচল জনপ্রিয় হলেও বর্তমানে ‘মারাইং তং’ পর্যটকদের নজর কেড়েছে। বান্দরবানের আলীকদমে অবস্থিত ‘মারাইং তং’, উচ্চতা ১৬৪০ ফুট। অনেকে এ পাহাড়কে মারায়ন তং বা মারায়ন ডং নামেও ডেকে থাকেন।
সৌন্দর্যের লীলাভূমি ‘মারাইং তং’। পাহাড়ের উপর থেকে যত দূর দৃষ্টি যায়, শুধু পাহাড় আর পাহাড়। এসব পাহাড়ের ফাঁকে রয়েছে আদিবাসীদের ছোট ছোট ঘরবাড়ি, রাস্তা, ফসলের জমি। এ ছাড়াও নিচে সাপের মতো এঁকে-বেঁকে বয়ে চলেছে মাতামুহুরী নদী। সব মিলিয়ে স্থানটি বেশ রোমাঞ্চকর অনুভূতি সৃষ্টি করবে। এছাড়া এ পাহাড়ের চূড়ায় রয়েছে একটি বৌদ্ধ মন্দির। এখানে রয়েছে বুদ্ধের এক বিশাল মূর্তি। মারাই তংয়ে যাওয়ার সবচেয়ে ভালো সময় হলো আগস্ট থেকে অক্টোবর মাস।
মারাই তং পাহাড়ে বিভিন্ন আদিবাসী সম্প্রদায়ের বসবাস। এদের মধ্যে ত্রিপুরা, মারমা ও মুরং অন্যতম। পাহাড়ের ঠিক নিচের অংশে বসবাস মারমাদের। পাহাড়ের বিভিন্ন খাঁজে মুরংদের পাড়া। পাহাড়ের ঢালে তারা বাড়ি বানিয়ে বসবাস করেন। মাটি থেকে সামান্য ওপরে এদের টঙঘর।
এসব ঘরের নিচে থাকে বিভিন্ন গবাদিপশু যেমন-গরু, ছাগল, শূকর, মুরগি। কখনো গবাদি পশুর পাশাপাশি প্রয়োজনীয় জ্বালানি কাঠও রাখা হয় স্তূপ করে। এ পাহাড়ের চূড়ায় উঠতে সময় লাগে তিন ঘণ্টারও বেশি। তবুও প্রতিদিন আদিবাসীরা প্রতিকূল এ পরিবেশে জীবনধারণ করছে। যা সত্যিই বিস্ময়কর। মারাই তংয়ে গেলে আপনি আদিবাসীদের দৈনন্দিন কাজকর্ম ও তাদের জীবনধারণ পদ্ধতি সম্পর্কেও জানতে পারবেন।
পাহাড়িদের পাশাপাশি বাঙালিরাও তাদের নিত্যদিনের আয়-রোজগারের জন্য এই পাহাড়ের ওপর নির্ভরশীল। বাঙালিদের অনেকেই পাহাড়ে জন্মানো মুলি বাঁশ বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করে। এই অঞ্চলে প্রচুর পরিমাণে তামাক চাষ হয়। ধান চাষের চেয়েও এখানে তামাক চাষ বেশি।