শিক্ষক সংকটে ব্যাহত পাঠদান
রেজাউল করিম, পেকুয়া (কক্সবাজার)
🕐 ৪:৪০ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ২৫, ২০২১
কক্সবাজারের পেকুয়ায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক সংকট কাটছে না। এতে করে ব্যাহত হচ্ছে শ্রেণিকক্ষের পাঠদান। তবে এ নিয়ে শিক্ষা কর্মকর্তাদের কোন মাথা নেই।
জানা গেছে, পেকুয়ায় সর্বমোট প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা ৫৬টি। এসব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকের পদসংখ্যা ৩৮০টি। শিক্ষার্থী সংখ্যা ১৯ হাজার ৯৭৩ জন। ৫৬ বিদ্যালয়ে সমপরিমাণ প্রধান শিক্ষকের পাশাপাশি রয়েছে ৩২৪ জন সহকারী শিক্ষকের পদ। শিক্ষার্থী অনুপাতে শিক্ষকের চাহিদা আরও প্রায় ৮০ জনের। কিন্তু বর্তমানে কর্মরত রয়েছেন ৩২১ জন। এরমধ্যে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক দিয়ে চলছে ২০ বিদ্যালয়। সহকারী শিক্ষকের পদ শূণ্য আছে ২৭ বিদ্যালয়ে।
কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলার রাজাখালীর হাজ্বী শের আলী সিকদার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সংখ্যা ২৫৭ জন। বিপরীতে শিক্ষকের পদ সংখ্যা ৫ জন হলেও বর্তমানে ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কর্মরত রয়েছেন মাত্র ২ জন। প্রধান শিক্ষকের পদটি খালী পড়ে আছে ২০১৫ সাল থেকে। এতে পাঠদানে হিমসিম খেতে হচ্ছে কর্মরত শিক্ষকদের। বাধ্য হয়ে বিভিন্ন সময়ে খণ্ডকালীন ২-৩ জন শিক্ষক দিয়ে পাঠদান চালিয়ে যাচ্ছে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
বিদ্যালয় সরকারিকরণ হওয়ার পর থেকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকের দায়িত্ব পালন করে আসছেন জিসি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো. সুজাগীর। তার মতে এই বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর অনুপাতে আরও ৪ জন শিক্ষকের চাহিদা রয়েছে। রাজাখালীর বিদ্যালয়সহ উপজেলার ৩১ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাঠদান চলছে ৫৯ শিক্ষক ছাড়াই। শিক্ষক সংকটের এই সমস্যা শিক্ষায় পিছিয়ে পড়া জনপদগুলো আরও পিছিয়ে পড়ার কারণ হচ্ছে বলে মনে করেন করিয়ারদিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হামিদ হোছাইন।
শিক্ষকদের এ সংকট নিরসনে নিয়োগ প্রক্রিয়ার নীতিমালা পরিবর্তনে মত দিয়েছেন সিনিয়র শিক্ষক ও উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি হানিফ চৌধুরী। তিনি বলেন, নিয়োগ প্রক্রিয়ার (খ) ধারা প্রযোজ্য হওয়াতে ভিন্ন উপজেলা, জেলা এমনকি অন্য বিভাগের মানুষও নিয়োগ প্রাপ্ত হয় এবং সহজ শর্তে তাঁরা নিজ এলাকায় পদায়িত হতে পারে।
উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. ছালামত উল্লাহ বলেন, সরকার দীর্ঘদিন নিয়োগ না দেওয়া এই শিক্ষক সংকটের অন্যতম কারন। তাছাড়া শিক্ষার্থী অনুপাতে শিক্ষকের যে ঘাটতি তা কমিয়ে আনতে শিক্ষক নিয়োগ নীতিমালায় কিছু পরিবর্তন আনা জরুরি বলে মনে করি।
জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান চৌধুরী জানান, শিক্ষক সংকটের কারণে শিক্ষার্থীরা তাদের প্রাপ্য শিক্ষা যথাযথভাবে পাচ্ছে না। তবে এই শিক্ষক সংকট কবে নাগাদ পূরণ করা সম্ভব হতে পারে সেটা ঢাকা অফিসের সাথে যোগাযোগ করে বিস্তারিত জানানোর কথাও বলেন তিনি।