ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

ইলিশ কিনতে ঘাটে ক্রেতাদের ভিড়

জাহিদ হাসান হৃদয়, আনোয়ারা (চট্টগ্রাম)
🕐 ৩:৪৭ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ২৪, ২০২১

ইলিশ কিনতে ঘাটে ক্রেতাদের ভিড়

চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলায় তাজা ইলিশ কিনতে দূর দূরান্ত থেকে সমুদ্রের উপকূলবর্তী এলাকার ঘাটগুলোয় ভিড় করছেন লোকজন।

ক্ষতিকর উপাদান ও বরফ ছাড়া ঘাটে জেলেদের কাছ থেকে মাছ কিনতে পেরে একদিকে খুশি ক্রেতারা, অন্যদিকে মধ্যস্বত্বভোগী ছাড়া সরাসরি ইলিশ বিক্রি করতে পারায় লাভবান হচ্ছেন জেলেরাও। তবে ক্রেতার কাছে সরাসরি জেলেদের এই মাছ বিক্রিতে বিপাকে পড়েছেন ইলিশের মৌসুমি ব্যাপারীরা।

জানা যায়, এই মৌসুমে উপকূলে প্রায় ৬শ টি নৌকা মাছ ধরার জন্য সাগরে নেমেছে। এর মধ্যে উঠান মাঝির ঘাটে ২৮০টি, সাত্তার মাঝির ঘাটে ৪৫টি, ফকিরহাটে ১৭০টি, গলাকাটা ঘাটে ৩৫টি, পিচের মাথায় ৩৫টি ও বাছা মাঝির ঘাটে ৪০টি। অন্য নৌকাগুলো পারকি ও জুঁইদন্ডী এলাকার। এসব নৌকায় রয়েছে প্রায় ১০ হাজার মতো জেলে।

গত মঙ্গলবার আনোয়ারায় সমুদ্রের উপকূলে দৌভাষী ঘাট ও উঠান মাঝি ঘাট দু’টি ঘুরে খো যায়, ইলিশ কিনতে সেখানে ভিড় জমিয়েছেন উপজেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা শত শত মানুষ। জোয়ার-ভাটা হিসাব করে সকাল ও বিকেল দিনে দু'বার ইলিশ বেচাকেনা হচ্ছে এসব ঘাটে।

ইলিশ নিয়ে নৌকা আসতেই হাঁকডাকে সরগরম হয়ে ওঠে পুরো ঘাট এলাকা। নৌকায় থাকতেই ঝুড়িতে সাজিয়ে রাখা ইলিশ বিক্রির তোড়জোড় শুরু হয়। দর-কষাকষি চলে ক্রেতা-বিক্রেতার মাঝে। এখানে মাছ ওজন মেপে বিক্রি হয় না। ঝুড়িসহ মাছের ওজন অনুমান করে দর দেন জেলেরা। উন্মুক্ত দর-কষাকষি চলে। যাঁর দর বেশি ওঠে, তিনি পান মাছ। মাছের আকার ও ওজন অনুপাতে ঘাটে প্রতি ঝুড়ি মাছ এক হাজার থেকে সাত হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি হতে দেখা যায়।

উপজেলার হাইলধর ইউনিয়ন থেকে মাছ কিনতে আসা নাছির জানান, সাত হাজার টাকায় দুই ঝুড়ি ইলিশ কিনেছি। ঘাটে সরাসরি ইলিশ কেনা যায় বলে বাজারের তুলনায় দাম কিছুটা কম পড়ে। তা ছাড়া ফরমালিন ও বরফ ছাড়া তাজা ইলিশের নিশ্চয়তা তো আছেই। আমার কেনা দুই ঝুড়িতে ১৫ থেকে ১৬ কেজি ইলিশ হবে। নিজেরা খাব। আত্মীয়দেরও দেব কিছু।

উঠান মাঝি ঘাট বাজারের ইলিশ বিক্রেতা ওসমান জানান, আমরা যারা সমুদ্রে মাছ ধরি তারা ঘাটেই বিক্রি করি। এ নিয়ম চিরকালের। আগে ঘাটে সাধারণ মানুষ আসত না। তাই একতরফা দামে ব্যাপারীদের কাছে মাছ বিক্রি করতে হতো। এখন বিভিন্ন এলাকা থেকে অনেক মানুষ মাছ কিনতে আসে ঘাটে। এতে কিছুটা বেশি দামে মাছ বিক্রি করতে পারি আমরা।

মৌসুমি ইলিশ ব্যবসায়ী মেহাম্মদ আব্দুল গফুর বলেন, সাধারণ মানুষের টানাটানিতে এ বছর ঘাটে কোনো ইলিশই কেনা যাচ্ছে না। ইলিশ কিনতে প্রত্যেক ঘাটে কয়েক শ মানুষ ভিড় করছেন প্রতিদিন। বরফ, গাড়িভাড়াসহ ব্যবসায়ীদের যা খরচ হয়, তাতে সাধারণ ক্রেতাদের দামে ব্যবসায়ীরা মাছ কিনতে পারেন না। তাই এবার অনেক ইলিশ ব্যবসায়ী ঘাটেই যাচ্ছেন না। আর যে ক'জন ব্যবসায়ী মাছ কিনে আনছে তাতে দাম একটু বেশি হওয়ায় বাজারে তেমন ক্রেতা পাওয়া যাচ্ছে না।

এ বিষয়ে উপজেলার সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা রাশিদুল হক বলেন, এই মৌসুমে আজব্দি প্রায় ১শ টন মতো আনোয়ারার উপকূল থেকে ইলিশ সংগ্রহ করা হয়েছে। প্রথম দিকে একটু কম হলেও এখন দৈনন্দিন প্রায় দেড় টন করে ইলিশ আহার করা হচ্ছে। যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো হওয়ায় কয়েক বছর ধরে এখানকার মানুষের ঘাটে গিয়ে ইলিশ কেনার প্রবণতা বাড়ছে।

 

 
Electronic Paper