ক্ষোভ থেকেই শিশু তানিশাকে নির্মমভাবে হত্যা
ফেনীর পুলিশ সুপার
ফেনী প্রতিনিধি
🕐 ২:৫১ অপরাহ্ণ, মে ০৮, ২০২১
ফেনীতে শিশু তানিশা ইসলাম (১১) হত্যার লোমহর্ষক বর্ণনা করে নির্মমভাবে গলাকেটে হত্যার দায় স্বীকার করেছে হত্যাকারী শিশু জেঠাতো ভাই নিশান (১৪)। শনিবার দুপুর ১২টায় জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মলনে এ তথ্য নিশ্চিত করেন পুলিশ সুপার খোন্দকার নুরুন্নবী।
এ সময় তিনি জানান, ব্যক্তিগত জীবনে আক্তার হোসেন নিশানের বাবা জীবিত না থাকায় তানিশার পরিবার তাদের কথায় কথায় তুচ্ছতাচ্ছিল্য করতো। এর আক্রোশের জেরে রাগে ক্ষোভে সে তানিশাকে হত্যা করে।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে শিশু তানিশাকে বাসায় একা রেখে মা ও বোন পাশের বাড়িতে যান।সে সুযোগে পরিকল্পিত ভাবে নিশান ঘরে ঢুকে এবং তানিশাকে হত্যার উদ্যেশ্যে তাদের মধ্যে ধস্তাধস্তি হয়।
এক পর্যায় তানিশাকে গলাটিপে হত্যার চেষ্টা করে। পরে তানিশা অজ্ঞান হয়ে পড়লে তাকে টেনে হেছড়ে বাড়ীর দোতলায় নিয়ে সিলিং এর সাথে শক্ত দড়ি বেধেঁ আত্মহত্যা করেছে বলে দড়িতে বাধার চেষ্টা করে কিন্তু এতেও ব্যর্থ হয় নিশান। এসময় পাশে পড়া থাকা একটি আম কাটার ধারালো ছুরি দিয়ে গলায় আঘাত করে হত্যা নিশ্চিত করা হয়। এর ঘন্টা দেড়েক পর ঘরে তানিশাকে না পেয়ে তার মা ছাদের দিকে খুঁজতে গেলে তানিশার গলা কাটা মরদেহ দেখতে পান।
একপর্যায় খবর পেয়ে পুলিশের বিভিন্ন সংস্থা ঘটনাস্থলে পৌঁছে তদন্ত শুরু করে। এসময় ঘরের ছাদ থেকে পাওয়া একজোড়া স্যান্ডেলের সূত্র ধরে তানিশার জেষ্ঠাতো ভাই অষ্টম শ্রেণির ছাত্র নিশানকে আটক করা হয়। তাকে জিজ্ঞাসায় হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত ছুরিটি বাড়ির ছাদ থেকে উদ্ধার করে পুলিশ।
পরে নিহত তানিশার ভাই আশ্রাফুল ইসলাম হাসনাত বাদী হয়ে জেষ্ঠাতো ভাই নিশানকে আসামী করে শুক্রবার সকাণে ফেনী মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করলে দুপুরে নিশানকে আদালতে হাজির করলে সে আদালতে হত্যার কথা ম্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দী দেয়। পরে আদালতের নির্দেশনায় নিশানকে ঢাকায় কিশোর সংশোধনাগারে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে।
উল্লেখ্য: গত বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১১ টায় ফেনী সদর উপজেলার কালিদহ ইউনিয়নের আলী ভুঞা বাড়ির সৌদি প্রবাসী শহিদুল ইসলামের ছোট মেয়ে তানিশা ইসলাম তিশার গলা কাটা লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এরপরই সামাজিক মাধ্যমসহ সব স্থানে ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক বিচার চেয়ে ফুঁসে উঠে সাধারণ মানুষ।