মিরসরাই মডেল মসজিদে চলছে তুলির শেষ আঁচড়
ইকবাল হোসেন জীবন, মিরসরাই (চট্টগ্রাম)
🕐 ৪:১৬ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ১৫, ২০২১
মুজিব বর্ষের উপহার হিসেবে প্রথম ধাপের ৫০টি মডেল মসজিদ ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের মধ্যে একটি বাস্তবায়ন হচ্ছে চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলায়। ইতোমধ্যে এটির নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে। এখন চলছে শুধু রঙের শেষ তুলির আঁচড়। দেশে ইসলামের প্রচার, প্রসার ও উন্নয়নে জেলা-উপজেলায় মোট ৫৬০টি এ ধরনের মসজিদ তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।
জানা গেছে, সারা দেশে নির্মাণাধীন মডেল মসজিদের ভৌত অবকাঠামো গণপূর্ত অধিদপ্তরের মাধ্যমে বাস্তবায়ন হচ্ছে। বাস্তবায়নকারী সংস্থা ইসলামিক ফাউন্ডেশন। এটির উদ্যোগ নেয় সরকারের ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়। সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ইসলামের ভ্রাতৃত্ব ও মূল্যবোধের প্রচার, উগ্রবাদ ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে ইসলামের প্রকৃত মর্মবাণী সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছাতেই এসব প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে।
দৃষ্টিনন্দন নির্মাণাধীন এ মডেল মসজিদ ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্র ঘুরে দেখা গেছে, মিরসরাই উপজেলা চত্বরে নির্মাণাধীন এ মসজিদের নির্মাণ কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। এখন চলছে সৌন্দর্যবর্ধন ও রঙের কাজ। গত ১১ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মিরসরাইয়ের মডেল মসজিদসহ সারা দেশে একযোগে ৫০টি মডেল মসজিদ উদ্বোধন করার কথা থাকলেও ওইদিন তা উদ্বোধন হয়নি। ইতোমধ্যে মিরসরাইয়ের মসজিদটির ৯৫ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে।
জানা গেছে, মিরসরাই উপজেলা মডেল মসজিদ ও ইসলামী সাংস্কৃতিক কেন্দ্রটি বি-ক্যাটাগরি হিসেবে ৪০ শতাংশ জমির উপর নির্মিত হচ্ছে। তিনতলার ভিত্তিবিশিষ্ট তৃতীয়তলা মডেল মসজিদ (টাইপ-বি) প্রতি ফ্লোরের আয়তন ১ হাজার ৬৮০ দশমিক ১৪ বর্গমিটার। ভবনের মোট আয়তন ২৯ হাজার ৬০০ বর্গফুট। বাস্তবায়ন ব্যয় ১৩ কোটি ৪১ লাখ ৮০ হাজার টাকা। সারা দেশে নির্মাণাধীন মডেল মসজিদের ভৌত অবকাঠামো গণপূর্ত অধিদপ্তরের মাধ্যমে বাস্তবায়িত হচ্ছে। মিরসরাই উপজেলা মডেল মসজিদে একসঙ্গে ৯০০ মানুষের নামাজ আদায়ের ব্যবস্থা থাকবে।
মসজিদের নির্মাণ কাজে নিয়োজিত ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স জাকির হোসেন-মহসিন-জব্বারিয়া (জেভি)-এর প্রকৌশলী ওমর ফারুক জানান, আধুনিক সুযোগ-সুবিধা সম্বলিত সুবিশাল মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কমপ্লেক্সে নারী ও পুরুষের আলাদা ওজু ও নামাজ আদায়ের ব্যবস্থা রয়েছে, লাইব্রেরি, গবেষণা কেন্দ্র, ইসলামিক বই বিক্রয় কেন্দ্র, কোরআন হেফজ বিভাগ, শিশু শিক্ষা, অতিথিশালা, বিদেশি পর্যটকদের আবাসন, মৃতদেহ গোসলের ব্যবস্থা, হজযাত্রীদের নিবন্ধন ও প্রশিক্ষণ, ইমামদের প্রশিক্ষণ, অটিজম কেন্দ্র, গণশিক্ষা কেন্দ্র, ইসলামী সংস্কৃতি কেন্দ্র থাকবে। এছাড়া ইমাম-মুয়াজ্জিনের আবাসনসহ সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য অফিসের ব্যবস্থা এবং গাড়ি পার্কিং সুবিধা রাখা হয়েছে।
প্রকল্প পরিচালক মো. নাজিবার রহমান বলেন, জাতির পিতার পদচিহ্ন অনুসরণ করে ও ইসলামের চেতনায় অনুপ্রাণিত হয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সারা দেশে ৮ হাজার ৭২২ কোটি টাকা ব্যয়ে ৫৬০টি মডেল মসজিদ নির্মাণের ভাবনা নিয়ে প্রকল্প হাতে নিয়েছেন। মডেল মসজিদগুলো শুধু নামাজ পড়ার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে না। এখানে ইসলামী সংস্কৃতি চর্চার পাশাপাশি জ্ঞান অর্জন ও গবেষণার সুযোগ থাকবে, প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা থাকবে।
গৃহায়ণ ও গণপূর্ত বিভাগ চট্টগ্রাম-৩ এর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মইনুল ইসলাম জানান, মিরসরাই মডেল মসজিদের ৯৫ ভাগ কাজ সমাপ্ত হয়েছে। এখন শুধু রঙ আর সামান্য মার্বেল পাথরের কাজ বাকি রয়েছে। খুব শিগগিরই দৃষ্টিনন্দন মডেল মসজিদ মুসল্লিদের নামাজের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে। সারা দেশের মতো মিরসরাইবাসীও প্রধানমন্ত্রীর মুজিব বর্ষের এ উপহার পেয়ে খুশি হবে।
মিরসরাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মিনহাজুর রহমান জানান, মিরসরাই মডেল মসজিদ ও ইসলামী সাংস্কৃতিক কেন্দ্র নির্মাণের কাজ দ্রুততার সঙ্গে এগিয়ে চলছে। একসাথে এতগুলো মসজিদ আর কখনো কোথাও হয়নি। এখানে ইসলামের পরিপূর্ণ জ্ঞান অর্জনের জন্য সব ধরনের সু-ব্যবস্থা থাকবে। মানুষ ধর্মীয় জ্ঞান অর্জন করে সে মোতাবেক জীবনযাপন করলে সমাজে কোনো ধরনের অশান্তি থাকবে না।