জনবল সংকটে উখিয়া বনবিভাগ
নেজাম উদ্দিন, কক্সবাজার
🕐 ৮:৩৭ অপরাহ্ণ, মার্চ ০৩, ২০২১
কক্সবাজার থেকে প্রায় ৩০ কিলোমিটার দুরে উখিয়া উপজেলা। উখিয়া বাজার থেকে ৫মিনিটের দুরুত্বে পাহাড়ের উপর উখিয়া রেঞ্জ অফিস। অফিসে উঠতেই বুঝা গেল লোকবল কম। উঠতে সিড়ি অপরিস্কার। পাহাড়ে উঠে নজরে আসলো দক্ষিন পাশে জরাজীর্ণ কয়েকটি ভবন। রেঞ্জ কর্মকর্তার ছোট অফিসটি নতুন করা হয়েছে।
কক্সবাজার দক্ষিণ বনবিভাগের অধিনে উখিয়া রেঞ্জ অফিস ও ৮টি বিট অফিস চলছে মাত্র ২১ জন কর্মকর্তা কর্মচারি নিয়ে। ২১ জন বনকর্মীরা সরকারের উখিয়া রেঞ্জ এর ৯৩৭৮.৫১ হেক্টর বনভূমি রক্ষার্থে কাজ করে যাচ্ছে প্রতিনিয়ত। এরই মধ্যে বেশ কয়েকটি অভিযান পরিচালনা করে করাতকলসহ অবৈধ ডাম্পার জব্দ করেছে। গত মঙ্গলবার উখিয়াতে অভিযান পরিচালনা করে বনবিভাগের বেশকিছু বনভূমি উদ্ধার করা হয়েছে।
কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলা মায়ানমার সীমান্তবর্তী এলাকা হিসাবে ও বর্তমান রোহিঙ্গা অধ্যুষিত এলাকা হিসাবে বেশ সমালোচিত। উখিয়া বিশে^র কাছে পরিচিত একটি নাম। ২০১৭ সালে মায়ানমারের নির্যাতিত রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে প্রবেশ করতে থাকলে প্রতিনিয়ত এলাকার পাহাড় বন দখল করে ঘরবাড়ি তৈরি হতে থাকে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উখিয়া রেঞ্জ-র অধিনে হলদিয়া পালং বিটে কর্মরত তিনজন, ভালুকিয়া বিটে দুজন, ওয়ালাপালং বিটে দুজন, উখিয়া সদর বিটে একজন, দৌছড়ি বিটে তিনজন, উখিয়ার ঘাট বিটে দুজন, থাইংখালী বিটে তিন, মোচার খোলা বিটে দুই ও রেঞ্জ অফিসে তিনজন আছে।
স্থানীয়রা বলছেন, উখিয়াতে রোহিঙ্গা বসবাস বেশি। এখন যারা নতুন এসেছে তারা বনভূমি কেটে সাবাড় করে ফেলেছে। বনবিভাগের লোকজন কম থাকায় তাদের এই বনভূমি রক্ষা কঠিন।
উখিয়ার বাপ্পি নামে আরেক ব্যক্তি অভিযোগ তুলেছে, বর্তমান বন বিভাগের রেঞ্জ কর্মকর্তা মোট অঙ্কের টাকার বিনিময়ে বনবিভাগের জায়গা দখল দিচ্ছে। যদি কেউ কিছু বলতে চায় তাকে মামলার হুমকী দিয়ে মুখ বন্ধ করে রাখে। সম্প্রতি বনবিভাগের জায়গায় একটি ভবন তৈরি হচ্ছে তা জানার পরেও রেঞ্জ কর্মকর্তা কোন ধরনের পদক্ষেপ নেননি।
স্থানীয় কালাম জানান, ২০১৭ সালের আগে উখিয়াতে বেশ বনভূমিতে গাছ ছিল তারা সামাজিক বনায়নও করেছিল। কিন্তু রোহিঙ্গা আসার কারণে সব বনাঞ্চল কেটে সাবাড় করে ফেলেছে।
বাপা জেলা সাধারণ সম্পাদক কলিম উল্লাহ কলিম জানান, রোহিঙ্গা অধ্যূষিত এলাকায় বনবিভাগের আরেকটু সচেতন থাকা দরকার। যেহেতু সেখানে বর্তমানে পৃথিবীর সবচাইতে বড় রোহিঙ্গা ক্যাম্প। রোহিঙ্গারা যেন বনবিভাগের গাছ কাঠতে না পারে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। এবং তাদের মাধ্যমে বনবিভাগকে গাছ লাগানোর জন্য তাদের অনুপ্রাণীত করতে হবে।
উখিয়া রেঞ্জ কর্মকর্তা শফিউল আলম জানান, আমার অধীনে ৮টি বিট রয়েছে আমার সর্বশেষ সীমানা হ্নীলা পর্যন্ত। এই বিশাল বনভূমি রক্ষার জন্য আমার আছে মাত্র ২১জন কর্মকর্তা কর্মচারি। আমরা বন বা বনের জমি রক্ষায় কাজ করছি।
কক্সবাজার বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (দক্ষিণ) হুমায়ন কবির জানান, আমাদের প্রত্যেকটি রেঞ্জ এ জনবল সংকট রয়েছে। তার পরেও আমরা জীবনের মায়া ত্যাগ করে সরকারি দায়িত্ব পালন করে আসছি। তবে অন্য রেঞ্জ থেকে উখিয়া রেঞ্জে লোকবল বেশি আছে। অন্য রেঞ্জে তার চাইতে কম জনবল নিয়ে বনবিভাগের কাজ চলমান।