ঢাকা, বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪ | ১০ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

গ্রামের বিচারিক ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করেছে গ্রাম আদালত: জেলা প্রশাসক

চট্টগ্রাম ব্যুরো
🕐 ৪:৫৯ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ২৫, ২০২১

গ্রামের বিচারিক ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করেছে গ্রাম আদালত: জেলা প্রশাসক

ইউনিয়ন পরিষদে গ্রাম আদালত নামে সরকারের যে একটি আদালত আছে সে বিষয়েই গ্রামের মানুষ জানেন না বলে মন্তব্য করেছেন চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মমিনুর রহমান। তিনি বলেন, বিচার ব্যবস্থার ব্যাপক উন্নয়ন হলেও গ্রামের জনগণের মধ্যে বিচার ব্যবস্থার হতাশা আছে। গ্রামের বিচারিক ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করার জন্য সরকার গ্রাম আদালত প্রতিষ্ঠা করেছে।

বৃহস্পতিবার নগরীর সার্কিট হাউজে গ্রাম আদালত আইন ও নারীবান্ধব গ্রাম আদালত সম্পর্কে গণমাধ্যম কর্মীদের অবহিতকরণ সভার প্রধান অতিথির বক্তব্য এসব কথা বলেন।

চট্টগ্রাম জেলা স্থানীয় সরকার উপ-পরিচালক বদিউল আলম এর সভাপতিত্বে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সুমনী আক্তার, চট্টগ্রামের স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীগণ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

জেলা প্রশাসক বলেন, গ্রামীন সমাজের বিচার ব্যবস্থায় মানুষ সন্তষ্ট নয়। গ্রামের বিচার ব্যবস্থার উপর মানুষ আস্থা হারিয়েছেন। গ্রাম আদালত যারা করবেন তাদের অনিহা রয়েছে। গ্রাম আদালতের কার্যকারিতা সম্পর্কে সাধারণ জনগণকে জানাতে হবে।

সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন- অনুষ্ঠানের সভাপতি ও স্থানীয় সরকারের উপপরিচালক বদিউল আলম।

তিনি বলেন, ন্যায় বিচারের উপর মানুষের দৃশ্যমান হতে হবে। স্বল্প সময়ে, কম খরচে ন্যায় বিচার পেলেই মনে করতে হবে দেশে ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। বাংলাদেশে গ্রাম আদালত হচ্ছে সরকারের ইনোভেশন। প্রান্তিক জনগোষ্ঠির জীবন-মান উন্নয়ন ও বিচারিক সেবা প্রাপ্তির অন্যতম মাধ্যম গ্রাম আদালত। সমস্যার সমাধান স্থানীয় পর্যায়ে হলে বাদী-বিবাদী উভয়ের জন্য সুবিধা বলে তিনি মন্তব্য করেন।

তিনি আরো বলেন, অবকাঠামো উন্নয়নই টেকসই উন্নয়ন নয়। বিচার বিভাগের অবকাঠামোগত ত্রুটির কারণে গ্রামের নিম্ন আয়ের মানুষের বিচার পেতে বিলম্ব হয়। সে ক্ষেত্রে গ্রাম আদালত কার্যকর ভূমিকা রাখছে। আইনজীবী ছাড়া শালিশি ব্যবস্থার মাধ্যমে নিস্পত্তি করে গ্রাম আদালত। এ সময় তিনি উপস্থিত গণমাধ্যমকর্মীদের গ্রাম আদালতের বিচারিক ব্যবস্থা মনিটরিং করারও নির্দেশ দেন।

বাংলাদেশে গ্রাম আদালত সক্রিয়করণ (২য় পর্যায় প্রকল্প) অগ্রগতি ও বাস্থবায়নের তথ্যচিত্র পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশনের মাধ্যমে উপস্থাপন করেন ডিষ্ট্রিক ফেসিলেটেটর (জেলা সমন্বয়কারী) উজ্জ্বল কুমার দাস চৌধুরী।

তিনি জানান, চট্টগ্রাম জেলার ৫টি উপজেলায় ৪৬টি ইউনিয়নে এ প্রকল্পের আওতায় সাধারণ জনগণ সেবা পাচ্ছেন।

তিনি আরো জানান, চট্টগ্রাম জেলার সকল উপজেলায় এ প্রকল্প বাস্তবায়নের পরিকল্পনা আছে। সারা বাংলাদেশে ৮ বিভাগে ২৭টি জেলায় ১২৮ উপজেলায় ১ হাজার ৮০টি ইউনিয়নে এ প্রকল্প বাস্তবায়ন হচ্ছে। তাদের মামলা নিস্পত্তির হার ৯৭ শতাংশ।

ডিষ্ট্রিক ফেসিলেটেটর আরো জানিয়েছেন, স্থানীয়ভাবে সহজে কম খরচে দ্রুত এবং স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় বিরোধ নিস্পত্তি করা এবং অন্যায়ের প্রতিকার লাভের জন্য তৃণমূলের দরিদ্র ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠি ও নারীদের সক্ষমতা বৃদ্ধি করা।

তিনি আরও জানিয়েছেন, ১৯৭৬ সালের গ্রাম আদালত অধ্যাদেশ অনুসারে ২০০৬ সালে গ্রাম আদালত আইন প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। তবে এ আইনে যৌতুক মামলা নিষ্পত্তির বিধান নেই। দেওয়ানী ও ফৌজদারি মামলায় নারী সংগঠিত বিষয় হলে বিচারিক প্যানেলে নারী সদস্য রাখার নির্দেশনা রয়েছে বলে জানান তিনি।

গ্রাম আদালতের বিচারাধীন মামলার শুনানী ৭ দিনের বেশি রাখার বিধান নেই। মামলা দায়েরের ১৫ দিনের মধ্যে মামলার শুনানী করার বিধান রয়েছে। ৫ সদস্য বিশিষ্ঠ গ্রাম আদালত কর্তৃক সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও চেয়ারম্যান কর্তৃক প্রকাশ্যে সিদ্ধান্ত দেওয়ার বিধান রয়েছে।

 
Electronic Paper