ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ | ৭ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

কালো ধোঁয়ায় বিপন্ন পরিবেশ

মো. নেজাম উদ্দিন, কক্সবাজার
🕐 ৫:৫৩ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ২৩, ২০২১

কালো ধোঁয়ায় বিপন্ন পরিবেশ

কক্সবাজারে অবৈধভাবে গড়ে ওঠা ইটভাটার কালো ধোঁয়ায় বিপন্ন হচ্ছে পরিবেশ। জেলায় ১১১টি ইটভাটা থাকলেও পরিবেশ অধিদফতরের বৈধতা আছে ৪৩টির। অবৈধ ইটভাটায় গিয়ে জরিমানা করাও হচ্ছে কিন্তু বন্ধ করার কোনো পদক্ষেপ দৃশ্যমান নয় বলে স্থানীয়দের ধারণা। লোক দেখানো কয়েকটি অভিযানের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে এইসব কার্যক্রম।

পরিবেশবাদীরা বলছেন, নিয়মনীতি না মেনেই অবৈধভাবে গড়ে ওঠা ইটভাটার কালো ধোঁয়ায় বিপন্ন হচ্ছে পরিবেশ। 

অবৈধভাবে কৃষি জমিতে ইটভাটা তৈরির কারণে কমছে চাষাবাদের জমি। এছাড়া, ইট পোড়ানোর কাজে জ্বালানি হিসেবে কাঠ ব্যবহারে কমছে গাছ। ফলে কমে যাচ্ছে বনাঞ্চল। পরিবেশ আইন, ইট প্রস্তুত ও ভাটা প্রস্তুত আইন অনুযায়ী সরকারি বা ব্যক্তি মালিকানাধীন বন, অভয়ারণ্য, বাগান বা জলাভূমি ও কৃষি জমিতে ইটভাটা তৈরি করা যাবে না। এ ছাড়া সিটি করপোরেশন, পৌরসভা, উপজেলা সদর এলাকায়ও ইটভাটা তৈরি করা যাবে না। অন্যদিকে ইট তৈরির জন্য কৃষিজমি, পাহাড়, টিলা থেকে মাটি কেটে কাঁচামাল হিসেবে এবং জ্বালানি হিসেবে কাঠ ব্যবহারও নিষিদ্ধ।

বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) কক্সবাজার অঞ্চলের সভাপতি ফজলুল কাদের চৌধুরী জানান, কক্সবাজার এখন ইটভাটার শহরে পরিণত হয়েছে। পরিবেশ আইন অমান্য করে তারা ইটভাটা তৈরি করছে। এদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ করছি। অন্যথায় বাপা আন্দোলনের ডাক দেব।

জানা যায়, ইটভাটায় জ্বালানি হিসেবে কাঠ ও অতিরিক্ত মাত্রার সালফারযুক্ত কয়লা ব্যবহার হচ্ছে। কাঠ ব্যবহারের ফলে গাছের সংখ্যা কমছে। নষ্ট হচ্ছে পরিবেশের ভারসাম্য। পরিবেশ আইন অমান্য করে গড়ে ওঠা এসব ইটভাটার কারণে কমে যাচ্ছে পাখির অভয়ারণ্য, কৃষিজমি ও উজাড় হচ্ছে বিশাল বনভূমি। ফলে পরিবেশগত বিপর্যয়সহ জনস্বাস্থ্যের মারাত্মক ক্ষতি হচ্ছে। ইটভাটার কালো ধোঁয়ার কারণে ফুসফুসের সমস্যা, শ্বাসকষ্টসহ নানা রোগ হতে পারে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন বয়স্ক ও শিশুরা। এদিকে মৌসুমভিত্তিক অভিযানে গত বুধবার সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত টেকনাফের হোয়াইক্যংয়ে ৬টি অবৈধ ইটভাটা ধ্বংস করা হয়েছে।

পরিবেশ অধিদফতরের সিনিয়র সহকারী সচিব ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সাদিকুর রহমান সবুজ জানান, পরিবেশ ছাড়পত্র ও ইট পোড়ানোর ছাড়পত্র না থাকায় অবৈধ ইটভাটা ধ্বংসে দেশব্যাপী অভিযান চলছে। এর অংশ হিসেবে কক্সবাজারের অভিযান শুরু হয়েছে। পর্যায়ক্রমে সকল অবৈধ ইটভাটার বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত থাকবে।

কক্সবাজার পরিবেশ অধিদফতরের সহকারি পরিচালক মো. নাজমুল হুদা জানান, জেলার ৮ উপজেলায় ১১১টির মত ইটভাটা আছে। এর মধ্যে ৬১ দশমিক ২৬ শতাংশের পরিবেশের ছাড়পত্র ও অনুমোদন নেই। জেলায় অবৈধ ও বৈধ ইটভাটার পরিসংখ্যান হলো কক্সবাজার সদরে ১৯টির মধ্যে বৈধ মাত্র ৩টি। রামুর ৫২টির মধ্যে বৈধ ২৩টি। পেকুয়ার ৬টির মধ্যে বৈধ মাত্র ১টি।

 

 
Electronic Paper