রোহিঙ্গা ক্যাম্পে চাঙ্গা আরসা বাহিনী
কায়সার হামিদ মানিক, উখিয়া (কক্সবাজার)
🕐 ১১:৫৭ পূর্বাহ্ণ, নভেম্বর ১৫, ২০২০
কক্সবাজারের উখিয়ার বিভিন্ন ক্যাম্পে ফের চাঙ্গা রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি (আরসা) বাহিনী। ‘রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী সংগঠন’ নামে পরিচিক আরসা সদস্যরা দিনে-দুপুরে করছে চাঁদাবাজি। শুধু তাই নয়, ক্যাম্পের ভিতরের দোকান, তরকারি বাজার থেকে টাকা তুলে প্রকাশ্যে দিচ্ছে সেই চাঁদা রশিদ। অথচ ক্যাম্প থেকে আরসার নামে রশিদ দিয়ে টাকা উত্তোলনের বিষয় জানেন না বালুখালী ১১নং ক্যাম্পের এপিবিএন ইন্সপেক্টর জাকের হোসেন। আর ‘অভিযোগ করা হয়ে থাকলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। নতুন কোনো অভিযোগ নেই’ বলে জানান উখিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আহমেদ সঞ্জুর মোরশেদ। এদিকে সন্ত্রাসী আরসা বাহিনীর দাপটে অতিষ্ঠ স্থানীয়রা। তাদের মধ্যে দেখা দিয়েছে ক্ষোভ ও উত্তেজনা। থানায় বারবার অভিযোগ করেও মিলছে না প্রতিকার বলে জানান তারা।
স্থানীয়রা জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মানবিকতায় আশ্রয় পেয়ে তারাই এখন দেশের ক্ষতি করতে ব্যস্ত হয়ে উঠেছে। মানবতার সুযোগকে স্থানীয়দের ওপর চালাচ্ছে অত্যাচার নিপীড়নের স্টিম রোলার।
বালুখালীর দোকান মালিকরা জানান, সামাজিক বনায়নের জমিতে দোকান-পাট নির্মাণ করে ভাড়া দিয়ে সংসার চালান ৪০জন স্থানীয় ব্যক্তি। কিন্তু গত কয়েকদিন ধরে আরসা বাহিনীর সদস্যরা হুমকি-ধমকি দিয়ে ১০০টি দোকান থেকে লাখ টাকা চাঁদা আদায় করেছে।
পরে তারা ব্যবসায়ীদের বলে গেছে, এখন থেকে এসব দোকানের মাসিক ভাড়া তারাই উত্তোলন করবে। অন্য কাউকে ভাড়ার টাকা দিলে ‘লাশ গুম করে ফেলা হবে।’
অভিযোগ আছে, বালুখালী ১১ ও ১২ নাম্বার ক্যাম্পের আরসার শীর্ষ নেতা মৌলভী আব্দুর রহমান (৫৫), জুস মোহাম্মদ (৪০), জাকের হোসেন (৪২), মোহাম্মদ ইউনুছ (৩৫), আলম (৩৭), নুর কামালসহ ৩০/৩৫ জনের সংঘবদ্ধ চক্র এই চাঁদাবাজির সঙ্গে জড়িত।
বালুখালী এলাকার স্থানীয় নুরুল হক, হাজী মোহাম্মদ মিয়া, মো. জকরিয়া, আবু তাহের, মো. রফিক ও আলমগীর বলেন, রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীরা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে।
তারা আরও জানায়, ক্যাম্পের ভিতরের স্থানীয় লোকজনের বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান থেকে ভাড়ার টাকা উত্তোলনে বাধা দেওয়া হচ্ছে। গত সোমবার শতাধিক দোকান থেকে লক্ষাধিক টাকা উত্তোলন করেছে আরসার সদস্যরা। এ নিয়ে আমরা বাদী হয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ সরকারি বিভিন্ন দফতরে লিখিত অভিযোগ করেছি। কিন্তু এখনো কোনো প্রতিকার মেলেনি।
বালুখালী ১১নং ক্যাম্পের এপিবিএন ইন্সপেক্টর জাকের হোসেন বলেন, ‘ক্যাম্প থেকে আরসার নামে টোকেন বা রিসিভ দিয়ে টাকা উত্তোলনের বিষয়টি সম্পর্কে আমি অবগত নয়। তবে এখন থেকে এ বিষয়ে খবরাখবর নেওয়া হবে।’
উখিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আহমেদ সঞ্জুর মোরশেদ বলেন, আগে কোনো অভিযোগ দায়ের করে থাকলে অবশ্যই তা খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে নতুন কোনো অভিযোগ আমার হাতে আসেনি।’