ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ | ৭ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

ঘুমধুমের কুমির যাবে বিদেশে

কায়সার হামিদ মানিক, উখিয়া (কক্সবাজার)
🕐 ১০:৩৫ পূর্বাহ্ণ, অক্টোবর ২০, ২০২০

এটা এক দশকের গল্প। যদিও পরিকল্পনা তার দুই বছর আগের কুমির চাষ করতে হবে, বানাতে হবে খামার। কুমিরের খামার। যেই কথা সেই কাজ। অস্ট্রেলিয়া ও মালয়েশিয়া থেকে আনা হলো অর্ধশত অস্ট্রেলীয় প্রজাতির কুমির। এক একটির দাম সাড়ে তিন লাখ টাকা। তাতে কী? ব্যয় করে আয় বাড়াতে হবে। রাখতে হবে দেশের কাজে। শুরু হয়ে গেল খামার। এরই মধ্যে চারটি কুমির মারা গেল। বেঁচে রইল ৩১টি মাদি কুমির, আর ১৫টি পুরুষ। আর এখন সেই খামার থেকে আগামী ডিসেম্বর মাসের মধ্যে চার শতাধিক কুমির মালয়েশিয়ায় রপ্তানির টার্গেট চলছে। কক্সবাজারের উখিয়ার নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুমে কুমির চাষের এই বিস্ময়কর সাফল্য স্বাভাবিকভাবেই নাড়া দিয়েছে দেশের বিজনেস জগতে। তবে মোটা অংকের পুঁজি নিশ্চয় দরকার।

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, বেসরকারিভাবে গড়ে ওঠা কুমির চাষ প্রকল্পটি সঠিকভাবে পরিচর্যা করা হলে আরও বেশি কুমির বিদেশের মাটিতে রপ্তানি করে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের সম্ভাবনা রয়েছে। একই সঙ্গে ব্যাপক কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হবে বলেও মনে করছেন তারা।

সরেজমিন ঘুরে জানা যায়, নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম মৌজার ২৫ একর পাহাড়ি জমিতে গড়ে তোলা হয়েছে কুমিরের খামারটি। বাণিজ্যিকভাবে এখানে ২০১০ সালে কুমিরের চাষ শুরু হয়। আমদানি করা কুমির থেকে শুরু হয় প্রজনন। জানা যায়, একেকটি কুমির প্রাপ্তবয়স্ক হতে সময় লাগে প্রায় ৮-১০ বছর। প্রাপ্তবয়স্ক একেকটি মাদি কুমির সাধারণত বর্ষাকালে ৪০-৮০টি করে ডিম দেয়। ডিম ৩২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় রেখে ৮০-৯০ দিনে ইনকিউবেটরে বাচ্চা ফোটানো হয়। বর্তমানে খামারে বাচ্চাসহ ছোট-বড় কুমিরের সংখ্যা ৩৪০০টি। খামারে উন্মুক্ত জলাশয় ও খাঁচার ভিতরে- দুভাবেই কুমির রাখা যায়। আকিজ ওয়াইল্ড লাইফ ফার্ম লিরুমটেড নামের খামারে এই দুভাবেই রাখা হয়েছে।

প্রকল্পের উপদেষ্টা ঝুলন কান্তি দে বলেন, আগামী ডিসেম্বর মাসের মধ্যে চার শতাধিক কুমির মালয়েশিয়ায় রপ্তানির টার্গেট রয়েছে। এসব কুমির রপ্তানি করলে ৪০০ কোটি টাকা আয় করা সম্ভব হবে। তিনি আরও বলেন, রপ্তানির জন্য প্রস্তুত প্রতিটি কুমির ৫ ফুট লম্বা, ওজন ২০-২৫ কেজি। চামড়া ছাড়াও কুমিরের প্রতি কেজি মাংস বিদেশে ৩০ ডলারে বিক্রি হয়।

স্থানীয় নুর মোহাম্মদ জানান, ঘুমধুমে কুমির খামারটি গড়ে উঠায় স্থানীয়দের কর্মসংস্থানের পথ সৃষ্টি হয়েছে। বর্তমানে খামারে ২০ কর্মচারী ও দুজন প্রকল্প কর্মকর্তা রয়েছেন। কুমির খামার প্রকল্পের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা আদনান আজাদ জানান, মিডিয়াকে তথ্য দেওয়া নিষেধ। তবে পরিধি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আরও কর্মসংস্থানের সুযোগ রয়েছে।

 
Electronic Paper