করোনাকালেও চিকিৎসা বর্জ্য সঠিক ব্যবস্থাপনার বাইরে
নিজস্ব প্রতিবেদক
🕐 ১০:২৬ পূর্বাহ্ণ, অক্টোবর ০৬, ২০২০
দেশে করোনাভাইরাস সংক্রান্ত স্বাস্থ্য সুরক্ষা ও চিকিৎসা বর্জ্যরে মাত্র ৬.৬ ভাগের সঠিক ব্যবস্থাপনা হয়। বাকি ৯৩.৪ ভাগ বর্জ্যই সঠিক ব্যবস্থাপনার আওতায় নেই। সারা দেশে চিকিৎসাসেবা কেন্দ্রগুলো থেকে প্রতিদিন প্রায় ২৪৮ টন বর্জ্য উৎপন্ন হয়, যার মাত্র ৩৫ টন (১৪.১ শতাংশ) সঠিক নিয়মে ব্যবস্থাপনার আওতায় ছিল। এর অধিকাংশই আবার ঢাকা শহরে সীমাবদ্ধ। তাও আবার মাত্র একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে অপসারণ ও শোধন করা হয়। বর্জ্য আলাদা করার ব্যবস্থাপনা থাকলেও, তা বিনষ্ট বা শোধন করার নিজস্ব কোনো ব্যবস্থাপনা নেই স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রগুলোর।
ব্র্যাক জলবায়ু পরিবর্তন কর্মসূচি পরিচালিত এ সংক্রান্ত এক গবেষণায় এ তথ্য উঠে এসেছে। গতকাল সোমবার এক ওয়েবিনারের মাধ্যমে এ তথ্য প্রকাশ করা হয়।
গবেষণায় উল্লেখ করা হয়, বর্তমানে স্বাস্থ্য সুরক্ষা সামগ্রী থেকে প্রতিদিন ২৮২.৪৫ টন বর্জ্য উৎপন্ন হয়। যার পুরোটাই গৃহস্থালি বর্জ্যরে সঙ্গে অপসারণ করা হয়। মাস্কসহ অন্য স্বাস্থ্য সুরক্ষা সামগ্রী ব্যবহার করেন ৭১ ভাগ মানুষ, যার সিংহ ভাগই শহুরে। যারা স্বাস্থ্য সুরক্ষা সামগ্রী ব্যবহার করেন সঠিক ব্যবস্থাপনার অভাবে তাদের ১০০ ভাগই গৃহস্থালি বর্জ্যরে সঙ্গে তা অপসারণ করেন।
পরিচ্ছন্নতা কর্মীরাও জানিয়েছেন তারা প্রায় সব বাড়ি থেকেই গৃহস্থালি বর্জ্যরে সঙ্গে স্বাস্থ্য সুরক্ষা পণ্যের বর্জ্য পান। যদিও ৮১.৪ ভাগ উত্তরদাতা মনে করেন এসব বর্জ্য থেকে সংক্রমণ ছড়ানোর আশঙ্কা আছে এবং ৯০.৬ ভাগ মানুষ মনে করেন এসব বর্জ্য স্বাস্থ্য ও পরিবেশের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ।
৮৪ ভাগ চিকিৎসাকর্মী মনে করেন, বর্তমান মেডিকেল বর্জ্য ব্যবস্থাপনা অত্যন্ত নাজুক। এই সমস্যা সমাধানে একটি সমন্বিত ও অংশগ্রহণমূলক পরিকল্পনা এবং তা বাস্তাবায়ন দরকার বলে মনে করেন ৯০.৩ ভাগ চিকিৎসা কর্মী।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, মেডিকেল বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় একটি আধুনিক ও সমন্বিত নীতিমালা প্রণয়ন, অর্থায়ন এবং তা বাস্তবায়ন জরুরি।
এ প্রসঙ্গে ব্র্যাকের নির্বাহী পরিচালক আসিফ সালেহ বলেন, গত মে মাসে শুধু ঢাকাতেই ৩ হাজার টন মেডিকেল বর্জ্য উৎপাদন হয়েছে। এ থেকেই বোঝা যায়, পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক হুমকি হয়ে দাঁড়াচ্ছে।
ওয়েবিনারে সভাপতিত্ব করেন ব্র্যাকের চেয়ারপারসন ড. হোসেন জিল্লুর রহমান। বক্তব্য দেন, প্রধান অতিথি স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী তাজুল ইসলাম, পরিবেশ অধিদফতরের মহাপরিচালক ড. এ কে এম রফিক আহাম্মদ প্রমুখ।