ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

চট্টগ্রামে সাঁড়াশি অভিযান

ইয়াবা-গডফাদার ধরবে বিজিবি-পুলিশ, সন্দেহের লেনদেনে নজরদারি, বসছে কাঁটাতারের বেড়া

চট্টগ্রাম ব্যুরো
🕐 ৯:৩৬ পূর্বাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ২৪, ২০২০

ইয়াবা চোরাকারবারের নেপথ্যে লুকিয়ে থাকা রাঘববোয়ালদের ধরতে খুব শীঘ্রই পরিচালিত হবে সাঁড়াশি অভিযান। কক্সবাজার জেলায় পুলিশে ব্যাপক রদবদলের পর গতকাল বুধবার চট্টগ্রাম আঞ্চলিক টাস্কফোর্স সভা থেকে এই ঘোষণা এলো। ইতোমধ্যেই ঠিক করা হয়েছে বিজিবি-পুলিশ যৌথ কর্মপন্থা।

স্থল ও নৌপথে বৃদ্ধি করা হয়েছে টহল। নজরদারিতে রাখা হচ্ছে সন্দেহজনক লেনদেন। অন্যদিকে ঘুনধুম-বাইশপাড়ি সীমান্তে ১০ কিলোমিটারজুড়ে নেওয়া হয়েছে কাঁটাতারের বেড়া দেওয়ার পদক্ষেপ। 

সভায় জানানো হয়, ইয়াবা ব্যবসার নেপথ্য নায়কদের শনাক্ত করতে ইতোমধ্যে সন্দেহজনক লেনদেন নিয়ে কাজ শুরু করেছে সংশ্লিষ্ট বিভাগ। বাংলাদেশ ব্যাংককে এ প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে।

সহায়তা নেওয়া হবে চেম্বারসমূহের। সভায় অংশগ্রহণকারীরা বলেন, সম্প্রতি কোটি কোটি টাকার ইয়াবার চালান ধরা পড়ায় প্রমাণিত হয় এতে বড় বড় রাঘববোয়ালরা সক্রিয় রয়েছেন। তারা বিভিন্ন পথ ঘুরে ইয়াবার অর্থ মিয়ানমারে পৌঁছায়। তাদের মূলোৎপাটনে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে পারলেই ইয়াবা ব্যবসা বন্ধ হবে। সভায় ইয়াবা ব্যবসা ছাড়াও সীমান্ত চোরাচালানের বিষয় ওঠে আসে।

ইয়াবা চোরাচালান প্রতিরোধে আরও কী কী পদক্ষেপ নেওয়া যায় এ বিষয়ে চট্টগ্রাম চেম্বার সভাপতি মাহবুবুল আলম সভার দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। তিনি মিয়ানমার সীমান্তে চোরাচালান প্রতিরোধে গৃহীত কৌশলে কোনো ঘাটতি আছে কি-না অথবা কার্যকর প্রতিরোধে আর কোনো ব্যবস্থা নেওয়া যায় কি-না এ বিষয়ে আলোচনার দাবি করেন।

রেঞ্জ ডিআইজি মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘ইতোমধ্যে কক্সবাজার জেলায় পুলিশ প্রশাসনে ব্যাপক রদবদল করা হয়েছে। যৌথ কর্মপন্থা ঠিক করতে বিজিবির সঙ্গে মতবিনিময় করা হয়েছে এবং টহল বৃদ্ধি করা হয়েছে।’ বিজিবি চট্টগ্রাম অঞ্চলের ডেপুটি কমান্ডার জানান, বিজিবির প্রত্যেকটি ব্যাটালিয়ন আগের তুলনায় আরও সক্রিয়ভাবে কাজ করার ফলে সম্প্রতি ইয়াবার বেশ কিছু বড় চালান আটক করা সম্ভব হয়েছে। নজরদারি জোরদার করা হয়েছে বলে তিনি সভাকে অবহিত করেন।

বিজিবির কক্সবাজার অঞ্চলের কমান্ডার জানান, ইয়াবা চোরাচালান আটক প্রতিমাসেই বৃদ্ধি পাচ্ছে। তবে অভ্যন্তরীণ বাজারের চাহিদা হ্রাস করতে না পারলে ইয়াবা চোরাচালান প্রতিরোধ কষ্টকর হয়ে পড়বে। তবে ইয়াবা ব্যবসার সঙ্গে জড়িত স্থানীয়রা টহলের গতিবিধি চোরাচালানিদের জানিয়ে দেওয়ায় অনেক সময় নিশ্চিত চোরাচালানও আটক করা সম্ভব হচ্ছে না বলে অভিযোগ করেন তিনি।

তিনি বলেন, ‘এ কাজে তারা মিয়ানমারের মোবাইল সিম ব্যবহার করে।’

সভায় কোস্টগার্ডের কক্সবাজার অঞ্চলের কমান্ডার জানান, নদীপথে চোরাচালান প্রতিরোধে টহল জোরদার করা হয়েছে। বিভিন্ন পয়েন্টে কোস্টগার্ড আকস্মিক অভিযান বৃদ্ধি করবে বলেও তিনি সভাকে অবহিত করেন।

সভায় র‌্যাবের ডেপুটি সিইও জানান, ইয়াবা চোরাচালান প্রতিরোধে বহনকারীর পাশাপাশি সন্দেহজনক লেনদেন ও লেনদেনের নতুন নতুন কৌশল উদ্ঘাটনে র‌্যাব কাজ করছে। ইতোমধ্যে বেশ কিছু সন্দেহজনক লেনদেন শনাক্ত করা হয়েছে।

সিএমপি কমিশনার সালেহ মোহাম্মদ তানভীর বলেন, মাদকে অর্থ লগ্নীকারীদের শনাক্তে বিশেষ পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

সভাপতির বক্তব্যে বিভাগীয় কমিশনার এবিএম আজাদ বলেন, ‘ইয়াবা চোরাচালানে অর্থ লগ্নীকারীদের আইনের আওতায় আনতে সর্বাত্মক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। একই সঙ্গে সীমান্ত এলাকায় চোরাচালানের কুফল নিয়ে ব্যাপক জনসচেতনতা তৈরি করতে সকল বাহিনীর সমন্বিত পদক্ষেপ নিতে হবে।’

 
Electronic Paper