ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

সম্পদের পাহাড় প্রদীপ দম্পতির

উখিয়া (কক্সবাজার) প্রতিনিধি
🕐 ৯:৪৭ অপরাহ্ণ, আগস্ট ০৬, ২০২০

সেনাবাহিনীর সাবেক মেজর সিনহা মো. রাশেদ খানের মৃত্যুর ঘটনায় করা মামলার আসামি টেকনাফ থানার ওসি প্রদীপ কুমার দাশ ও তার স্ত্রী চুমকীর কারণের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ অনুসন্ধান করছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) চট্টগ্রাম কার্যালয়। নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, সাম্প্রতিক এ অভিযোগটির অনুসন্ধান শুরু হয়। অনুসন্ধানের একপর্যায়ে তাদের কাছে স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের হিসাব চেয়ে নোটিস পাঠানো হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে এ দম্পতি আলাদাভাবে তাদের সম্পদের হিসাব কমিশনে জমা দিয়েছেন।

জানা যায়, দুদকের অনুসন্ধানে ওসি প্রদীপ কুমার ও তার স্ত্রীর নামে-বেনামে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ থাকার প্রমাণ মিলেছে। এর মধ্যে স্ত্রীর নামে চট্টগ্রাম মহানগরে ছয়তলা বাড়ি, প্লট, ফ্ল্যাট, একাধিক গাড়ি ও অন্যান্য সম্পদের প্রমাণ পাওয়া যায়।

এদিকে নিহত সাবেক সেনা কর্মকর্তা সিনহা মো. রাশেদ খানের বোন শারমিন শাহরিয়ার ফেরদৌস বাদী হয়ে গত বুধবার ওসি প্রদীপ কুমার দাশসহ নয়জনকে আসামি করে কক্সবাজার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হত্যা মামলা করেছেন। মামলায় টেকনাফের বাহারছড়া পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ ও পুলিশ পরিদর্শক লিয়াকত আলীকে প্রধান আসামি করা হয়েছে। দ্বিতীয় আসামি ওসি প্রদীপ কুমার দাশ।

মামলায় তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত। এর আগে গত বুধবার রাতে তাকে প্রত্যাহার করা হয়। এ নিয়ে এ ঘটনায় মোট ১৫ জনকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা সিনহা একটি তথ্যচিত্র ধারণের কাজ করছিলেন।

৩১ জুলাই রাতে ওই দিনের শুটিং শেষ হলে তিনি টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ দিয়ে ফিরছিলেন। শামলাপুর তল্লাশি চৌকিতে তার গাড়ির গতিরোধ করা হলে তিনি অবসরপ্রাপ্ত মেজর পরিচয় দিলেও পুলিশ পরিদর্শক তাকে গুলি করলে তার মৃত্যু হয়।

গত শুক্রবার রাত ৯টার দিকে টেকনাফের বাহারছড়ায় কক্সবাজার- টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের শামলাপুর তল্লাশি চৌকিতে পুলিশের গুলিতে মারা যান অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা রাশেদ খান। প্রদীপ কুমার সিএমপিতে কর্মরত থাকা অবস্থায় নানা অভিযোগে সাময়িক বরখাস্ত হন। ২০১৮ সালের মে মাস থেকে এ পর্যন্ত এ দুই পুলিশ কর্মকর্তার নেতৃত্বে মাদকবিরোধী অভিযানে ১৬১ জন বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছেন।

বন্দুকযুদ্ধে সর্বোচ্চ বিপিএম পদক পান ওসি প্রদীপ : কথিত বন্দুকযুদ্ধের জন্য ২০১৯ সালে পুলিশের সর্বোচ্চ পদক ‘বাংলাদেশ পুলিশ পদক’ বা বিপিএম পেয়েছিলেন বহুল আলোচিত ওসি প্রদীপ কুমার দাশ। পদক পাওয়ার জন্য তিনি পুলিশ সদর দফতরে ছয়টি কৃতিত্বপূর্ণ অবদানের কথা উল্লেখ করেন। সব ক’টি ঘটনাতেই আসামি নিহত হন।

প্রদীপ কুমার দাশ প্রায় ২৫ বছরের চাকরিজীবনের বেশির ভাগ সময় কাটিয়েছেন চট্টগ্রাম অঞ্চলে। বছর দুয়েক আগে টেকনাফ থানায় যোগ দেন। এ দুই বছরে দেড় শতাধিক ‘বন্দুকযুদ্ধ’ ঘটেছে এ থানা এলাকায়। সর্বশেষ ভিডিও বার্তায় তিনি চলতি বছরের ১৬ ডিসেম্বরের মধ্যে টেকনাফকে মাদকমুক্ত করতে মাদক ব্যবসায়ীদের বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ ও হামলার হুমকি দিয়ে আলোচনায় আসেন।

 
Electronic Paper