কুমিল্লা সচল হবে কাল
জাকারিয়া মানিক, কুমিল্লা
🕐 ৭:৫৯ পূর্বাহ্ণ, মে ৩১, ২০২০
সরকারের নির্দেশনায় আজ রোববার সারা দেশ সচল হলেও কাল সোমবার সচল হবে কুমিল্লা। গত প্রায় তিন মাস একটানা বন্ধ ছিল বড় ছোট সব শপিংমল, দোকান। রমজানে দোকানপাট খোলার বিষয়ে সরকার নির্দেশনা দিলেও ব্যত্যয় ছিল কুমিল্লায়। করোনায় আক্রান্ত এবং মৃত্যুর সংখ্যা অব্যাহত বাড়তে থাকায় কুমিল্লা দোকান মালিক সমিতির সিদ্ধান্তে বন্ধ থাকে সব ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান।
এদিকে, আজ রোববার থেকে সারা দেশে সীমিত আকারে মার্কেট, শপিংমল এবং অন্যান্য দোকান খোলার সিদ্ধান্তে অচল কুমিল্লা আবার সচল হবে! যদিও, এ উদ্যোগ নিয়ে ব্যবসায়ী এবং জনসাধারণের মাঝে আতঙ্কের মাত্রা কমেনি।
এমন পরিস্থিতিতে করোনার সংক্রমণ রোধে কুমিল্লা জেলা প্রশাসন এবং কুমিল্লা দোকান মালিক সমিতি নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। স্বাস্থ্যবিধি শতভাগ প্রতিপালন করা হলে এই করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধ করা সম্ভব হবে; নতুবা কুমিল্লায় মহামারি আকার ধারণ করতে পারে বলে মতামত ব্যক্ত করেছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। জানা গেছে, কুমিল্লা দোকান মালিক সমিতির এক বিজ্ঞপ্তিতে সরকারের স্বাস্থ্যবিধি মেনে সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত দোকান ও শপিংমল খোলার কথা বলা হয়েছে। এতে বেশকিছু নির্দেশনা দেওয়া হয়। ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান পরিচ্ছন্ন করার এবং সার্বিক প্রস্তুতি নেওয়ার জন্য সরকারের নির্দেশনার একদিন পর কুমিল্লায় ব্যবসা-বাণিজ্যে গতি পেতে যাচ্ছে।
এ বিষয়ে কুমিল্লার জেলা প্রশাসক মো. আবুল ফজল মীর খোলা কাগজকে বলেন, কুমিল্লায় করোনার প্রভাব হ্রাস পাচ্ছে না সত্যি, তবে দীর্ঘ লকডাউনের ফলে মানুষের জীবন জীবিকা স্থবির হয়ে পড়েছে। তাই সরকারের সিদ্ধান্ত মতে, কুমিল্লায় দোকানপাট খোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, স্বাস্থ্যবিধি যথাযথ প্রতিপালনের জন্য জেলা তথ্য অফিসের মাধ্যমে ব্যাপক প্রচারণা চালানো হচ্ছে এবং সার্বক্ষণিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা হবে।
এ বিষয়ে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজের পরিচালক ডা. মো. মুজিবুর রহমান বলেন, স্বাস্থ্যবিধি শতভাগ প্রতিপালন করা হলে কুমিল্লায় করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব হবে। নতুবা ভয়ানক পরিস্থিতির মুখোমুখি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
কুমিল্লা দোকান মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আতিকউল্লাহ খোকন বলেন, জীবন ও জীবিকা দুটোই গুরুত্বপূর্ণ। তবে, আগে জীবন। সেই বিবেচনায় এবং ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলোচনাক্রমে এবারের ঈদ মৌসুমে সব ধরনের মার্কেট, শপিংমল বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিতে আমরা বাধ্য হয়েছিলাম। কিন্তু এখন আর সেটি ধরে রাখা সম্ভব হচ্ছে না।
ইতোমধ্যেই ব্যবসায়ীরা ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছেন। প্রায় সাত হাজার ব্যবসায়ী ছাড়াও ক্ষতির শিকার হয়েছেন বার হাজারের মতো কর্মচারী। এর মধ্যে অনেকে পুঁজি হারিয়ে ফেলেছেন। এতে স্থানীয় অর্থনীতি স্থবির হয়ে পড়েছে।
সরকারের সিদ্ধান্ত মেনে মার্কেট, শপিংমল খোলার বিষয়ে সবাইকে অবগত করা হয়েছে এবং সব মার্কেট, শপিংমলের প্রবেশপথে ক্রেতাসাধারণকে জীবাণুমুক্ত করা ও স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালনের জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। কেউ স্বাস্থ্যবিধি অমান্য করলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের কাছে আহ্বান জানানো হয়েছে।