সড়কের গাছ কেটে সাবাড়
এম. মনছুর আলম, চকরিয়া
🕐 ২:৫৫ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ১৯, ২০২০
কক্সবাজারের চকরিয়ার পেকুয়া উপজেলার শিলখালী ইউনিয়নের স্কুল স্টেশন এলাকা থেকে জনতা বাজার যাওয়ার পথে একটি সড়কের পাশ থেকে শতাধিক গাছ কেটে সাবাড় করে ফেলেছে একটি প্রভাবশালী চক্র। ব্যক্তি মালিকানাধীন গাছ দাবি করে এসব গাছ কাটা হয়েছে। তবে গাছগুলো কাটতে বনবিভাগ ও স্থানীয় প্রশাসনের কাছ থেকে কোনো ধরনের অনুমতি নেননি ওই প্রভাবশালী চক্র। এতে পরিবেশের ব্যাপক ক্ষতিসাধিত হয়েছে বলে মনে করছেন স্থানীয় লোকজন ও পরিবেশবাদীরা।
গাছগুলোর মালিক দাবিদার ওয়াহিদুজ্জামান চৌধুরী দাবি করেন, ১০-১২ বছর আগে গাছগুলো তার মৎস্য খামারের পুকুর পাড়ে লাগিয়েছিলেন এবং গাছগুলো থেকে ‘নিথিয়াম গ্যাস’ বের হয়ে পুকুরের মাছ আক্রান্ত হওয়ার কারণেই মৎস্য বিশেষজ্ঞদের পরামর্শে তিনি গাছগুলো কেটেছেন।
স্থানীয় ইউপি সদস্য শাহাব উদ্দিন বলেন, ‘গাছগুলো সরকারি সড়কের পাশে হলেও সেগুলো কাঁটা তারের বেড়া দিয়ে ঘেরা ছিল। আর তাই ব্যক্তিগত গাছ কাটছেন মনে করে কেউ বাঁধা দেয়নি। আমরাও পরিবেশের ক্ষতির কথাটা সেভাবে চিন্তা করিনি।’
ইউপি চেয়ারম্যান নুরুল হোছাইন বলেন, ‘গাছগুলোর মালিক নির্বাচনে আমার সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। তাই আমি সে বিষয়ে মন্তব্য করতে চাইনা। তবে একসঙ্গে এতগুলো গাছ কাটায় পরিবেশের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।’
পেকুয়া পরিবেশ সাংবাদিক ফোরামের সভাপতি মীর মোশাররফ হোসেন টিটু বলেন, ‘শিলখালীতে রাস্তার পাশে কেটে ফেলা গাছগুলোর মালিক কে বা কারা সে তর্কে না গিয়ে আমি বলতে চাই গাছগুলো ছিল পরিবেশবান্ধব। যেগুলো পরিবেশের জন্য অত্যাবশ্যকীয়। আর এ গাছগুলো কাটাতে পরিবেশের অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে। প্রশাসন এ বিষয়ে ব্যবস্থা না নিলে বৃক্ষ নিধনকারীরা আরও উৎসাহিত হবে।’
গাছের মালিক দাবিদার ওয়াহিদুজ্জামান চৌধুরী বলেন, ‘আমি ১০-১২ বছর আগে ভারত থেকে পরিবেশবান্ধব গাছগুলো এনে আমার মৎস্য প্রকল্পের পাড়ে রোপণ করি। কিন্তু গাছগুলো থেকে একপ্রকার ‘নিথিয়াম গ্যাস’ নির্গত হয়ে পুকুরের মাছের ক্ষতি হচ্ছে বিধায় প্রজেক্টের সবগুলো গাছ কেটে ফেলি। আমি পুকুর পাড়ে নতুন করে নারিকেল গাছ লাগানোর চিন্তা করছি। গাছগুলো কাটাতে পরিবেশের ক্ষতি হয়েছে কিনা জানতে চাইলে অট্টহাসিতে তিনি বলেন, ‘এখানে পাহাড়ি কোন গাছ ছিল না কমপ্লিটলি আমার নিজের গাছ।’
বনবিভাগের বারবাকিয়া রেঞ্জ অফিসার আবদুল গফুর মোল্লা বলেন, ‘ব্যক্তি মালিকানাধীন হোক আর যাই হোক গাছ কাটার এখতিয়ার কারো নেই। যদি কেটে থাকে তাহলে এটি একটি দণ্ডনীয় অপরাধ। একসঙ্গে এতগুলো গাছ কাটার ফলে পরিবেশের যে কি পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে তা ভাষায় প্রকাশ করতে পারছিনা। পেকুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাঈকা সাহাদাত বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে প্রকৃত বিষয় জেনে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
জেলা পরিবেশ অধিদফতরের সহকারী পরিচালক নাজমুল হুদা বলেন, ‘গাছ কাঁটা পরিবেশ আইনে মারাত্মক অপরাধ। দেশীয় আইনে গাছ কাঁটার অধিকার কাউকে দেওয়া হয়নি।