ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ | ৭ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

পাহাড় কাটায় জরিমানা ১০ কোটি টাকা

চট্টগ্রাম ব্যুরো
🕐 ৯:৫৫ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ২৯, ২০২০

রাস্তা নির্মাণের জন্য পরিবেশ অধিদফতরের অনুমোদনের চেয়ে বেশি পাহাড় কাটায় চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষকে (সিডিএ) ১০ কোটি ৩৮ লাখ ২৯ হাজার ৫৫৩ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। ঢাকায় অধিদফতরের প্রধান কার্যালয়ে বুধবার শুনানি শেষে এ জরিমানা করেন মনিটরিং অ্যান্ড এনফোর্সমেন্ট বিভাগের পরিচালক রুবিনা ফেরদৌসী।

পাহাড় কেটে জীববৈচিত্র্য ধ্বংস, পাহাড়ের উপরিভাগের মাটি এবং ভূমির বাইন্ডিং ক্যাপাসিটি নষ্টসহ পরিবেশ-প্রতিবেশের অপূরণীয় ক্ষতি সাধন করায় এ জরিমানা করা হয়। অধিদফতরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানানো হয়েছে।

ঢাকা ট্রাংক রোড থেকে বায়েজিদ বোস্তামী পর্যন্ত একটি লিংক রোড করছে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ। প্রকল্পটি প্রায় শেষ পর্যায়ে। এজন্য পরিবেশ অধিদফতর থেকে প্রয়োজনীয় অনুমোদনও নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু গত ২৫ জানুয়ারি পরিবেশ অধিদফতরের মহাপরিচালক ড. এ কে এম রফিকুল ইসলাম প্রকল্প এলাকা পরিদর্শন করে অনুমোদনের বাইরে পাহাড় কাটার প্রমাণ পান। ওইদিন তিনি চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষকে ঢাকায় শুনানিতে হাজির হওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন।

অধিফতরের চট্টগ্রাম মহানগরের পরিচালক আজাদুর রহমান মল্লিক বলেন, রাস্তা নির্মাণের জন্য অনুমোদনের বাইরে বেশি পাহাড় কাটার প্রমাণ পাওয়ায় তাদের ঢাকায় ডাকা হয়েছিল। সেই তলবের ভিত্তিতেই গতকাল শুনানি শেষে জরিমানার আদেশ দেওয়া হয়।

পরিবেশ অধিদফতরের মনিটরিং অ্যান্ড এনফোর্সমেন্ট বিভাগের পরিচালক রুবিনা ফেরদৌসী বলেন, সিডিএ পাহাড় কেটে রাস্তা করছে। এজন্য ১০ কোটি ৩৮ লাখ ২৯ হাজার ৫৫৩ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

তিনি বলেন, প্রকল্প প্রস্তাবনায় যত ঘনফুট পাহাড় কাটার অনুমোদন তারা নিয়েছিল, বাস্তবে তার থেকে ৬৯ হাজার ২১৯ দশমিক ৭০২ বর্গফুট বেশি কেটেছে। যে এঙ্গেলে কাটার কথা ছিল। সেভাবে না কেটে ৯০ ডিগ্রি এঙ্গেলে খাড়াভাবে কেটেছে। ফলে যেকোনো মুহূর্তে পাহাড় ধসে মানুষের জীবনহানি ঘটতে পারে।

২০১৭ সাল থেকেই তাদের সতর্ক করা হচ্ছিল। আগেও তাদের সতর্ক করে ১০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ ধার্য করা হয়েছিল। তারপরও তারা থামেনি। এখন প্রকল্প প্রায় শেষের দিকে।

জরিমানার অর্থ পরিশোধের বিষয়ে এক প্রশ্নে তিনি বলেন, তারা ১৫ দিন সময় চেয়েছে। আমরা সময় দিয়েছি। সিডিএ এবং বিশেষ করে এর প্রকল্প পরিচালককে জরিমানা দিতে বলা হয়েছে। তারা এখন কোন খাত থেকে দেবে সেটা তাদের বিষয়।

অধিদফতরের ওই কর্মকর্তা বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যেই ক্রাইটেরিয়া রক্ষা করে পাহাড় কাটতে বলেছিলেন, তারা সেটা মানেনি। ফলে মানুষের জীবন হুমকির মুখে পড়েছে। পরিবেশ অধিদফতরের কর্মী হিসেবে তাদের নিবৃত্ত করা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব।

এদিকে ওই লিংক রোড প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক সিডিএর প্রকৌশলী রাজীব দাস বলেন, প্রকল্পের কাজ এখনো শেষ হয়নি। আমরা পরিবেশ অধিদফতরের শর্ত প্রতিপালন করব। তবে শুনানিতে একচেটিয়াভাবে আমাদের জরিমানা করা হয়েছে। আমরা এর বিরুদ্ধে আপিল করব।

প্রসঙ্গত, নগরের বায়েজিদ বোস্তামী থেকে ফৌজদারহাট পর্যন্ত ছয় কিলোমিটারের এই সড়ক তৈরি করতে কাটা হয়েছে ১৫টি পাহাড়। ছোট্ট একটি সড়ক করতে এত বেশি পাহাড় কাটার ঘটনা অতীতে কখনোই ঘটেনি। পরিবেশ অধিদফতর বারবার জরিমানা করার পরও ফৌজদারহাট-বায়েজিদের এ সংযোগ সড়ক তৈরি থেকে পিছু হটেনি সিডিএ। আইনের তোয়াক্কা না করেই সরকারি এ সংস্থাটি প্রকল্পটি প্রায় শেষ করে ফেলেছে।

 
Electronic Paper