ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ | ৭ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

চরক্লার্কে শিম চাষে সাফল্য

আবদুল কাইয়্যুম, সুবর্ণচর, নোয়াখালী
🕐 ১১:৫৩ পূর্বাহ্ণ, জানুয়ারি ২৭, ২০২০

বছর দশেক আগে ভোলার চরফ্যাশন ছেড়ে স্ত্রী আর ২ সন্তান নিয়ে পাড়ি জমিয়েছেন নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলার চরক্লার্ক ইউনিয়নের চর বায়েজিদ গ্রামে। স্ত্রী আর সন্তানদের নিয়ে খুব কষ্টে কাটত মো. সালাউদ্দিন মিয়ার সংসার। নুন আনতে পান্তা ফুরানো এ সংসারে এখন আর অভাব নেই। বরং তার সবজি খামারে জীবিকা নির্বাহ হয় আরও পাঁচ পরিবারের।

এ বিষয়ে বুধবার (২৫ ডিসেম্বর) সরেজমিন গিয়ে কথা হয় মো. সালাউদ্দিনের সঙ্গে। তিনি জানান, তিন বছর আগে এলাকার কয়েকজনের সঙ্গে উদ্যোগ নেন শিম চাষের। মাত্র তিন মাসে সাফল্যের দেখা পান সালাউদ্দিন। ১৩ হাজার টাকা পুঁজি নিয়ে তিন মাসের মাথায় লাভ গোনেন দেড় লাখ টাকা। এরপর আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি। এবার দুই একর জমিতে শিম চাষে তার খরচ হয়েছে ৩০ হাজার টাকা। ভালো পরিবেশ পেলে বিক্রি হবে ২ লাখ টাকার বেশি। একই এলাকার চাষি মো. জামাল ফরায়েজি ও আলী আহম্মদ জানান, শিম চাষে তাদের তেমন অভিজ্ঞতা না থাকলেও নিজের মতো করে চাষ করছেন। তবে উপজেলা কৃষি অফিস থেকে ভালো পরামর্শ পেলে আরও ভালো ফলন পাওয়া সম্ভব হতো। দুর্গম এলাকা হওয়ায় শিমের ভালো দর পাওয়া যায় না।

উপজেলার মোহাম্মদপুর ইউনিয়নের আরেক শিম চাষি মো. শাহাদাৎ হোসেন মুরাদ বলেন, পরিবেশ এ বছর অনুকূলে থাকায় প্রতি মণ শিম ১ হাজার থেকে ১২শ’ টাকা বিক্রি হচ্ছে। এতে প্রায় চারগুণ লাভ হচ্ছে আমাদের। তবে মাঝে মাঝে সাদা মাছির আক্রমণে ভোগান্তি পোহাতে হয়। এ ব্যাপারে সরকারি কোনো সহায়তা এখন পর্যন্ত পাওয়া যায়নি।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের সূত্রমতে, চলতি মৌসুমে নোয়াখালীতে ৪০ হাজার হেক্টর জমিতে মোট ৮০ হাজার ৩২৬ মেট্রিক টন শিম চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। আশা করা যাচ্ছে এ বছর লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে।

এ বিষয়ে সুবর্ণচর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. শাহেদুল ইসলাম বলেন, সুবর্ণচর উপজেলা এমনিতেই উর্বর এবং এখানকার মানুষ পরিশ্রমী, যার কারণে সুবর্ণচরে কৃষিতে ভালো ফলন পাওয়া যায়। আর আমরা সুবর্ণচরের প্রতিটি গ্রামে কৃষকদের পরামর্শ দেওয়ার কারণে এখানে সব ধরনের কৃষি পণ্যের ভালো ফলন সম্ভব হয়েছে। যার কারণে সুবর্ণচর এখন সারা দেশের মডেল হিসেবে উপস্থাপিত হয়েছে।

এদিকে সাগরিকা সমাজ উন্নয়ন সংস্থার কর্মকর্তা কৃষিবিদ শিবব্রত ভৌমিক বলেন, কৃষির জন্য নোয়াখালীতে আবহাওয়া মোটামুটি অনুকূল ও মাটির গুণগত মান ভালো। মানুষ পরিশ্রমী হওয়ায় কৃষিতে ভালো ফলন পেতে সক্ষম হয়েছে। এ ছাড়াও সরকারিভাবে কৃষকদের উন্নত প্রশিক্ষণ দিলে নোয়াখালী থেকে আরও অধিক ফলন পাওয়া সম্ভব হবে।

 
Electronic Paper