ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪ | ১২ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

সংসারের দায়িত্ব নেয়া হলো না সুমনের

নোয়াখালী প্রতিনিধি
🕐 ১০:১৫ অপরাহ্ণ, জুলাই ১৫, ২০১৮

ক্ষেতে খামারে কাজ করে সংসার আর চলছে না। সামান্য উপার্জনে ৬ জনের মুখে তিন বেলা খাবার তুলে দেওয়া যেন দিগন্ত জোড়া এক দীর্ঘশ্বাস। এত কষ্টের মাঝেও দুচোখে স্বপ্ন ছিল অবিরত। ছেলে বড় হয়ে প্রবাসে যাবে, একদিন সংসারের দায়িত্ব নেবে, সকলের মুখে হাসি ফুটাবে।

বাবার স্বপ্ন আর পূরণ করতে পারলো না গরীব বাবার অবলম্বন পূর্বচরবাটা স্কুল অ্যান্ড কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্র মো. সুমন চৌধুরী (১৭)। যাকে নিয়ে একটি পরিবারের ছিলো বুকভরা স্বপ্ন একটি সড়ক দুর্ঘটনা কেড়ে নিয়েছে তার জীবন প্রদীপ। মুহূর্তের মধ্যে ওই পরিবারের দীর্ঘদিনের স্বপ্নের করুণ মৃত্যু হয়েছে। সুমনের আর বিদেশ যাওয়া হলো না।
রোববার বিকাল সাড়ে ৩টায় সোনাপুর- চেয়ারম্যান ঘাট সড়কের ভাটিরটেক তেরিজড়োল নামক স্থানে একটি মাইক্রোবাসের সাথে ধাক্কা লেগে এ দুর্ঘটনা ঘটে। মো. সুমন চৌধুরী সুবর্ণচর উপজেলার পূর্ব চরবাটা স্কুল অ্যান্ড কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্র।
নিহত মো. সুমন চৌধুরী (১৭) উপজেলার পূর্ব চরবাটা ইউনিয়নের পূর্ব চরবাটা গ্রামের খালেক মাঝির বাড়ির কৃষক শেখ ফরিদ এর ছেলে।
সুমন এর বাবা মো. শেখ ফরিদ  জানান, সুমন ২০১৮ সালে পূর্ব চরবাটা স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে এসএসসি পাশ করে একই প্রতিষ্ঠানে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি হয়। পবিবারের অভাব অনটন দেখে সে আর পড়ালেখা করতে চাইছে না। তার ইচ্ছামতে তাকে প্রবাসে পাঠানোর জন্য চেষ্টা করে সৌদি আরবের একটি ভিসা পায়। ভিসা পেয়ে আজ সকালে মাইজদীতে ডাক্তারি পরীক্ষা দিয়ে সিএনজি চালিত অটোরিক্সা যোগে বাড়ি ফেরার পথে চরক্লার্ক ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মো. সাহাব উদ্দিন এর মাইক্রোবাসের সাথে ধাক্কা লাগলে সে ঘটনাস্থলে মারা যায়।
মাইক্রোবাস মালিক চরক্লার্ক ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মো. সাহাব উদ্দিন জানান, আমি সুবর্ণচরে আসছিলাম। আমার সামনে একটি পিকআপ হঠাৎ থামলে আমিও ব্রেক করি। আমার পেছন দিক থেকে বেপরোয়া গতিতে আসা একটি সিএনজি আমার মাইক্রোর পেছনে ধাক্কা দেয়। আমি আহতের উদ্ধার করে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে গেলে ডাক্তার সুমনকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ দিকে সুমনের মৃত্যুর খবরে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। সকালে হাসিমুখে বের হয়ে দুপুরে লাশ হয়ে ফেরার এ মর্মান্তিক দৃশ্য যেন কেউ স্বাভাবিকভাবে মেনে নিতে পারছে না। স্বজনরা বলছেন, কি হতে গিয়ে কি হয়ে গেলো। নিয়তি বড়ই নিষ্ঠুর। মুহূর্তের মধ্যে তরতাজা একটি যুবক নিথর হলো। এমনটি আসলেই মেনে নেয়া কষ্টদায়ক। মিষ্টভাষী সুমনকে ভুলতে পারছেন না কেউ।

 
Electronic Paper