বিএনপির বিরুদ্ধেও শুদ্ধি অভিযান হবে: ওবায়দুল কাদের
চট্টগ্রাম প্রতিনিধি
🕐 ৬:১৪ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ২৭, ২০১৯
সেতুমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, শুদ্ধি অভিযান শুধু আওয়ামী লীগের লোকের বিরুদ্ধে নয়, এ অভিযান সবার বিরুদ্ধে চালানো হবে। বিএনপির নেতাকর্মীরা কে, কী করছেন? কোথায় বসে কী অপকর্ম করছেন? সব খোঁজ-খবর নেওয়া হচ্ছে। সময়মতো টের পাবেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজের ঘরটা শেষ করে অপরটা ধরবেন। নেটের জালে সবার অপরাধ ধরা পড়বে।
রোববার (২৭ অক্টোবর) দুপুরে নগরের দি কিং অব চিটাগাং-এ চট্টগ্রামে বিভাগের ৬ জেলা আওয়ামী লীগের তৃণমূলের নেতাকর্মীদের প্রতিনিধি সভায় তিনি এ কথা বলেন।
ওবায়দুল কাদের হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, অপকর্মকারীরা সাবধান হয়ে যান, চিহ্নিত সন্ত্রাসীরা সাবধান হয়ে যান- শেখ হাসিনার অ্যাকশন ডাইরেক্ট অ্যাকশন।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু নেই কিন্তু আওয়ামী লীগ আছে। ঝড়ের বিরুদ্ধে, দুর্যোগের বিরুদ্ধে, অন্ধকারের বিরুদ্ধে, অমানিশার বিরুদ্ধে সাহস নিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার নাম আওয়ামী লীগ। আমরা মৃত্যুর মিছিলে দাঁড়িয়ে বিজয়ের জয়গান গাই। আমরা ধ্বংসস্তুপের উপর দাঁড়িয়ে সৃষ্টির পতাকা উড়াই। আমরা আওয়ামী লীগ, আমরা উত্তাল সমুদ্রের, অমানিশার অন্ধকারেও মানুষের জয়গান গাই। বীরের রক্ত ছুঁয়ে এগিয়ে যাই।
মন্ত্রী বলেন, আমরা বঙ্গবন্ধুর সৈনিক, শেখ হাসিনার কর্মী। এই চট্টগ্রাম বিপ্লবী সূর্যসেনের দেশ, অনেক স্মৃতি, অনেক সংগ্রাম আছে এই বীর চট্টলায়। এই চট্টগ্রাম আঘাতে আঘাতে বিপর্যস্ত হয়েছে, পর্যুদস্ত হয়েছে- কিন্তু পরাজয় মেনে নেয়নি। আওয়ামী লীগ পরাজয় মানে না। আওয়ামী লীগ ধ্বংস হয়ে যেতে পারে কিন্তু পরাজয় মেনে নেয় না।
ওবায়দুল কাদের আরো বলেন, পৃথিবীতে মুক্তির সংগ্রামে এত ত্যাগ, এত নির্যাতন সম-সাময়িক বিশ্বে আর কোনো রাষ্ট্রনায়ককে সহ্য করতে হয়নি। কিন্তু নেত্রী শেখ হাসিনা ওই পরিমাণ ত্যাগ-তিতিক্ষা স্বীকার করেছেন। একসময় আওয়ামী লীগের অস্তিত্ব থাকবে কিনা- এরকম ভবিষ্যৎবাণী করেছিল অনেকে। ১৯৮১ সালে শেখ হাসিনা হাল ধরে সেই সংগঠনকে এগিয়ে এনেছেন।
তিনি বলেন, শেখ হাসিনা শুধু রাজনীতিক নন, তিনি একজন রাষ্ট্রনায়ক। রাজনীতিকরা চিন্তা করেন পরবর্তী নির্বাচন নিয়ে কিন্তু রাষ্ট্রনায়কের চিন্তা পরবর্তী জেনারেশন নিয়ে। ভিশন ২০২১, ২০৪১ ও একশ বছরের মহাপরিকল্পনা নিয়ে শেখ হাসিনা এগিয়ে যাচ্ছেন। বাংলাদেশ জিডিপিতে এশিয়ায় সবার শীর্ষে। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আরও এগিয়ে যাবে দেশ।
সেতুমন্ত্রী বলেন, আজকে বাংলাদেশ ভারত, শ্রীলংকা ও পাকিস্তানকে আর্থসামাজিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে পেছনে ফেলেছে। এ কৃতিত্ব শেখ হাসিনার। গত ৪৪ বছরে সবচেয়ে জনপ্রিয়, সাহসী ও দূরদর্শী নেত্রীর নাম শেখ হাসিনা। তিনি প্রমাণ করেছেন দুর্নীতির বিরুদ্ধে, টেন্ডারবাজির বিরুদ্ধে, অনিয়মের বিরুদ্ধে নিজের দলকেও ছাড় দেওয়া হবে না। এটাই হলো সত্য।
বিএনপির প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, শেখ হাসিনা শুদ্ধি অভিযান শুরু করেছেন নিজের ঘর থেকে। বিএনপির ফখরুলরা বড় বড় কথা বলেন, অথচ তারা পরপর পাঁচবার দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। তাদের কথা ‘ভূতের মুখে রাম রাম’। এই বিএনপিই দুর্নীতির বিরুদ্ধে বলে! লুটপাটের হাওয়া ভবন, না খাওয়া ভবন? দেশের মানুষ ভুলে যায়নি। লন্ডনের টেমস নদীর পাড়ে বসে বসে একজন দেশকে নিয়ে ষড়যন্ত্র করছে। দেশের রাজনীতিকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে। বিএনপি একটাই প্রমাণ দেখাক যে, দলের অপরাধীদের একজনেরও শাস্তি তারা দিয়েছে?
তিনি বলেন, চট্টগ্রামে জামাল উদ্দিন হত্যার বিচার পরিবার পায়নি। অথচ বিএনপি নেতাকর্মীরা তাকে অপহরণ করেছিল। আমরা লোক দেখানো শুদ্ধি অভিযান করছি না। শেখ হাসিনা প্রমাণ করবেন, অনিয়মের বিরুদ্ধে কতো কঠোর আছেন তিনি।
তিনি দলীয় নেতাকর্মীর উদ্দেশ্যে বলেন, ক্ষমতা চিরস্থায়ী নয়। ক্ষমতার দাপট দেখাবেন না। আওয়ামী লীগ মানুষের দল। মানুষের ভালোবাসা হারিয়ে ফেললে বেঁচে থাকা দায়। তাই সময় থাকতে ভালো হয়ে যান। দলে বসন্তের কোকিলের আগমন ঘটাবেন না। তারা কিন্তু মৌসুম আসলে আসবে, আবার মৌসুম চলে গেলে তারাও চলে যাবে।