ফাঁসছেন ইসি কর্মকর্তারা
রোহিঙ্গাদের এনআইডি সরবরাহ
আহসান হাবিব, চট্টগ্রাম
🕐 ১১:১৫ পূর্বাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ২৫, ২০১৯
বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের জালিয়াতির মাধ্যমে ভোটার এবং তাদের জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) কার্ড সরবরাহ চক্রের সঙ্গে জড়িত নির্বাচন কমিশনে (ইসি) অফিসের বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা ও কর্মচারী ফেঁসে যাচ্ছেন। এই ঘটনায় গ্রেফতার হওয়া চট্টগ্রাম জেলা ইসির কর্মচারী জয়নাল আবেদিনের জবানবন্দিতে ইতোমধ্যে ঢাকা ও চট্টগ্রামের কয়েকজন কর্মকর্তার নাম উঠে এসেছে।
পুলিশ, দুদক ও ইসির তদন্ত কমিটি সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরেই ইসির মধ্যেই একটি শক্তিশালী জালিয়াতি চক্রের তৎপরতা চলছে। কিন্তু সেদিকে কারও নজরদারি ছিল না। চক্রটি ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্তি ও জাতীয় পরিচয়পত্র পাইয়ে দিতে জনপ্রতি রোহিঙ্গাদের কাছ থেকে নিয়েছে ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকা। এতে মধ্যস্ততা করতেন জয়নাল আবেদীন। ভুয়া এনআইডি তৈরির জন্য টাকার ভাগ পেতেন মধ্যস্থতাকারীরা। এক সময় এ অবৈধ টাকার ভাগ-বাটোয়ারা নিয়ে দ্বন্দ্বেও জড়িয়ে পড়েছিলেন ইসি কর্মীরা। সেই দ্বন্দ্ব থেকেই ফাঁস হয়ে যায় রোহিঙ্গাদের নিয়ে এই জালিয়াতির ঘটনা, যা থানা-পুলিশ পর্যন্ত গড়ায়। দ্বন্দ্ব এমন পর্যায়ে চলে যায় যে, গ্রেফতার হওয়া দুজন নির্বাচন অফিসের কর্মচারী একে অপরের সিন্ডিকেটে থাকা সদস্যদের নাম প্রকাশ করে দিচ্ছেন তদন্ত কর্মকর্তার কাছে। এর ফলে চট্টগ্রাম জেলা ও উপজেলা এবং ঢাকায় ইসি সচিবালয়ের অন্তত ২৫ জনকে নজরদারির আওতায় এনেছে কাউন্টার টেররিজম ইউনিট। এই নজরদারির মধ্যে ইসির কয়েকজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাও রয়েছেন।
এ কাজে জড়িতদের মধ্যে এ পর্যন্ত গ্রেফতার হয়েছে ডবলমুরিং থানা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়ের অফিস সহায়ক জয়নাল আবেদিন ও বোয়ালখালী থানায় ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রম-২০১৯ প্রকল্পে যুক্ত টেকনিক্যাল সাপোর্ট মো. মোস্তফা ফারুক। জয়নাল আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন।
তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, জবানবন্দিতে জয়নাল জালিয়াতির সঙ্গে যুক্ত ১৬ জনের নাম প্রকাশ করেছেন, যারা মোস্তফা ফারুকের ঘনিষ্ঠ। এছাড়া জয়নাল তার ১২ সঙ্গীর নাম প্রকাশ করেছেন। এ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের পরিদর্শক রাজেশ বড়ুয়া খোলা কাগজকে বলেন, জয়নালের জবানবন্দিতে অনেকের নাম উঠে এসেছে। তাদেরও আইনের আওতায় আনা হবে।
এদিকে গত রোববার দুপুরে চট্টগ্রাম আঞ্চলিক সার্ভার স্টেশন থেকে ইসির ৩ কর্মীকে গ্রেফতার আটক করে কাউন্টার টেররিজম ইউনিট। তারা হলেন- কোতোয়ালি থানার ডাটা এন্ট্রি অপারেটর মো. শাহীন, বন্দর থানার ডাটা এন্ট্রি অপারেটর মো. জাহিদ এবং ডবলমুরিং থানার ডাটা এন্ট্রি অপারেটর পাভেল বড়–য়া।