হালদায় প্রাকৃতিক বিপর্যয়
ডিম উৎপাদন কমে এক-তৃতীয়াংশে
চট্টগ্রাম ব্যুরো
🕐 ১২:৫৯ অপরাহ্ণ, মে ২৭, ২০১৯
প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র চট্টগ্রামের হালদা নদীতে ডিম ছেড়েছে মা মাছ। জেলেরা নদীতে দুই ঘণ্টায় আট হাজার কেজি ডিম সংগ্রহ করেছেন। গত শনিবার রাত থেকে ডিম আহরণকারীরা ডিম সংগ্রহ করেছেন। রাত সাড়ে ৯টায় হালদা নদীতে ৪০০ জেলে ডিম সংগ্রহে নামেন। দুই ঘণ্টায় অন্তত আট হাজার কেজি ডিম পেয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছেন জেলেরা। তবে সংশ্লিষ্টরা জানান, এ বছর ডিম সংগ্রহের পরিমাণ অন্যান্য বছরের চেয়ে অনেক কম, তা কমে এক তৃতীয়াংশে নেমেছে
হালদা থেকে ২০১৮ সালে ২২ হাজার ৬৮০ কেজি, ২০১৭ সালে এক হাজার ৬৮০ কেজি, ২০১৬ সালে ৭৩৫ (নমুনা ডিম) কেজি, ২০১৫ সালে দুই হাজার ৮০০ কেজি এবং ২০১৪ সালে ১৬ হাজার ৫০০ কেজি ডিম সংগ্রহ করা হয়।
জানতে চাইলে গতকাল রোববার এ বিষয়ে হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুহুল আমিন বলেন, প্রায় ৪০০ জন ডিম সংগ্রহকারী প্রত্যেকে ১৫-১৬ কেজি করে ডিম সংগ্রহ করেছেন। কেউ কেউ এর চেয়ে বেশিও করেছেন। দুই ঘণ্টায় প্রায় আট হাজার কেজি ডিম সংগ্রহ হয়েছে। এর আগে ডিম ছাড়ার খবর পেয়ে খলিফার ঘোনা, রামদাশ মুন্সির হাট থেকে মদুনাঘাট পর্যন্ত জেলেরা ডিম সংগ্রহ করা শুরু করেন।
হাটহাজারীর উত্তর মাদার্শার ডিম সংগ্রহকারী বখতেয়ার বলেন, শনিবার সারা দিন হাটহাজারী ও রাউজান অংশের হালদা নদীর বিভিন্ন ঘাটে নমুনা ডিম পাওয়া গেছে। রাত সাড়ে ৯টার দিকে আস্তে আস্তে নদীর আজিমের ঘাট, অঙ্কুরীঘোনা, মদুনাঘাট, বাড়িয়াঘোনা, মাছুয়াঘোনা হাট, সিপাহীর ঘাট, গড়দুয়ারা এলাকায় ডিম সংগ্রহকারীরা ভালোভাবে ডিম পাওয়ার খবর দিতে থাকেন।
জানা গেছে, বর্ষণের ফলে হালদার সঙ্গে সংযুক্ত খাল, ছরা ও নদীতে ঢলের সৃষ্টি হয়। সাধারণত চৈত্র ও বৈশাখ মাসে প্রবল বর্ষণ হলে মা মাছ ডিম ছাড়ে। কিন্তু এবার বৃষ্টির পরিমাণ কম থাকায় ঢলের প্রকোপ হয়নি। বৈশাখ মাসের মাঝামাঝিতে নদীতে মা মাছ সামান্য পরিমাণ ডিম ছেড়েছিল। গত শুক্রবার সন্ধ্যার পর থেকে বজ্রসহ প্রবল বর্ষণ শুরু হলে নদীর পাড়ে অবস্থান নেন ডিম আহরণকারীরা। বর্ষণের ফলে হালদার সঙ্গে সংযুক্ত খাল, ছরা ও নদীতে ঢলের সৃষ্টি হয় এবং রুই জাতীয় (রুই, মৃগেল, কাতল, কালিবাউশ) মাছ নমুনা ডিম ছেড়েছে।
সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, নিয়মিত অভিযান চালিয়ে মা মাছ সংরক্ষণ, ডিম থেকে রেণু তৈরির কুয়া সংস্কার, কুয়ায় নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের ব্যবস্থাসহ নানা উদ্যোগের কারণে হালদায় ডিম সংগ্রহের পরিমাণ এবার অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে যেতে পারে।