ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

নুসরাত হত্যার ৩৯ দিন

সিনেমা-নাটক না বানানোর অনুরোধ

আবদুল্লাহ আল-মামুন, ফেনী
🕐 ১১:১৩ পূর্বাহ্ণ, মে ১৯, ২০১৯

ফেনীর সোনাগাজীতে যৌন হয়রানির প্রতিবাদ করায় আগুনে পুড়িয়ে হত্যার শিকার মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফির মা শিরিন আক্তার বলেছেন, আমার মেয়ে আল্লাহর রাস্তায় শহীদ হয়েছেন। শুনছি কেউ কেউ নাকি আমার মেয়েকে নিয়ে সিনেমা ও নাটক বানানোর প্রস্তুতি নিয়েছেন। দয়া করে আমার মেয়েকে নিয়ে কেউ সিনেমা বা নাটক বানাবেন না। নুসরাতের পরিবার কেমন আছে জানতে গেলে তার বাড়িতে রাফির মা এই প্রতিবেদককে এসব কথা বলেন।

শিরিন আক্তার বলেন, নুসরাত শহীদ হয়ে গোটা বিশ্বের মানুষের মনে দাগ কেটেছে। সে কবরে চিরনিদ্রায় শায়িত আছে। সিনেমা নাটক বানিয়ে তাকে দয়া করে দোজখে নিবেন না। তাকে নিয়ে সিনেমা ও নাটক বানালে তার আত্মা কষ্ট পাবে। আমরা আখিরাতে তার কাছে জবাব দিতে পারব না। আমার মেয়ে একটি নিষ্পাপ ফুল। এই ফুলকে কষ্ট দেবেন না। আমরা অর্থের দিক দিয়ে গরিব হতে পারি। কিন্তু ধর্মের দিক দিয়ে আমরা গরিব নই। আমার মেয়েকে প্রথমে নূরানী মাদ্রাসায়, পরে খাদিজাতুল কোবরা মহিলা মাদ্রাসায় এবং সেখান থেকে দাখিল পাস করার পর সোনাগাজী ফাজিল মাদ্রাসায় ভর্তি করাই। নুসরাতের বাপ, দাদা, চাচা ও ভাই সবাই আলেম। দুনিয়াতে কিছু না পেলেও আখিরাতে আমার মেয়ে শহীদি মর্যাদা পাবে।

পবিত্র রমজান মাস যাচ্ছে। আমার কাছে যেন কেয়ামত যাচ্ছে। কারণ সাহরি ও ইফতারের সময় আমার মেয়ে নুসরাত আমাদের সঙ্গে খেতে বসত। গল্প করত। গরম পানি করত। আজকে আমার মেয়ে নেই। সবই আছে। রোজাও আছে। আমার মেয়েকে নিয়ে অনেকে ওয়াজ ও গজল বানিয়েছেন। আরো বানাতে পারেন। কিন্তু কোনো সিনেমা বা নাটক বানিয়ে আমার মেয়ের আত্মাকে কষ্ট দেবেন না।

তিনি আরো বলেন, আমরা ভালো আছি। আমরা জীবিত অবস্থায় নুসরাতের খুনিদের বিচার দেখে যেতে চাই। তাহলে আমার মেয়েটির আত্মা শান্তি পাবে।

উল্লেখ্য, সোনাগাজী মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে হত্যার ঘটনা নিয়ে সিনেমা বানাতে যাচ্ছেন দেশের খ্যাতিমান চলচ্চিত্র নির্মাতা দেলোয়ার জাহান ঝন্টু। সিনেমার নামও তিনি রেখেছেন ‘নুসরাত’। গত বুধবার দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করেন দেলোয়ার জাহান ঝন্টু।

ফেনীর সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলার বিরুদ্ধে যৌন হেনস্তার মামলা করায় গত ৬ এপ্রিল নুসরাতের গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয় দুর্বৃত্তরা। এতে তার শরীরের ৭৫-৮০ ভাগ পুড়ে যায়। ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন থাকা নুসরাত গত ১০ এপ্রিল মারা যান।

 
Electronic Paper