মাতামুহুরীতে ভাঙন আতঙ্ক
এম মনছুর আলম, চকরিয়া (কক্সবাজার)
🕐 ৫:১৮ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ১৯, ২০১৯
কক্সবাজারের চকরিয়ায় খরস্রোতা মাতামুহুরী নদী একসময় জনগণের ভাগ্য উন্নয়নে আশীর্বাদ হলেও বর্তমানে মরণদশায় পরিণত হয়েছে তা। নদীর উজানে বান্দরবানের লামা ও আলীকদম উপজেলার পাহাড় থেকে পাহাড়ে নির্বিচারে বৃক্ষ নিধন ও অপরিকল্পিত পাথর আহরণের ফলে প্রতিবছর বর্ষাকালে বৃষ্টির পানির সঙ্গে নেমে আসা পলি জমে মাতামুহুরী নদী ভরাট হয়ে যাচ্ছে। প্রাকৃতিক বৈরী আচরণের ফলে মাতামুহুরী নদী বর্তমানে ভয়াবহ নাব্য সংকটে পড়েছে।
এ অবস্থার কারণে নদীর গভীরতা কমে যাওয়ায় প্রতিবছর বর্ষাকালে দুই তীর উপচে লোকালয়ে প্রবাহিত হচ্ছে ঢলের পানি।
অপরদিকে কয়েকদিন পর লোকালয় থেকে ঢলের পানি নামতে শুরু হলে রুদ্রমূর্তি ধারণ করে মাতামুহুরী। ওইসময় নদীর দুই তীরে শুরু হয় ভাঙন।
বছর বছর ভাঙনে তীর এলাকায় বসবাসরত লক্ষাধিক জনসাধারণ চরম আতঙ্কে রয়েছেন। প্রতিবছর ভাঙন ঠেকাতে পানি উন্নয়ন বোর্ড কোটি কোটি টাকা বরাদ্দে বেসুমার উন্নয়ন কাজ অব্যাহত রাখলেও জনগণের সুরক্ষা নিশ্চিতে স্থায়ীভাবে টেকসই কোনো ধরনের প্রকল্প বাস্তবায়ন হচ্ছে না।
উপজেলার লক্ষ্যারচর ইউপি চেয়ারম্যান গোলাম মোস্তাফা কাইছার জানান, এলাকার শত শত একর ফসলি জমি, ৩৩ হাজার কেভির বিদ্যুৎ লাইনের টাওয়ার, খতিবে আজমসহ বেশ কটি সড়ক, স্কুল, মসজিদ, মাদ্রাসা, এতিমখানাসহ অসংখ্য গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা।
স্থানীয়রা জানান, চলতি বর্ষার আগে তীরবর্তী জনপদের এলাকায় জরুরিভিত্তিতে ভাঙন প্রতিরোধে টেকসই উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে ব্যবস্থা নেওয়া না হলে অবশিষ্ট জনবসতি, জমিজমা ও মসজিদ-মাদ্রাসাসহ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং গ্রামীণ জনপদের বিভিন্ন সড়ক নদীতে বিলীন হয়ে যাবে।
কক্সবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) চকরিয়া উপজেলার চিরিঙ্গা শাখা কর্মকর্তা (এসও) এস এম তারেক বিন সগীর বলেন, ইতোমধ্যে অনেক প্রকল্প প্রস্তাবনা তৈরি করে অর্থ বরাদ্দের জন্য সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন দফতরে সারসংক্ষেপ পাঠিয়েছে।
চকরিয়া উপজেলা পরিষদের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান ফজলুল করিম সাঈদী বলেন, গত ২৭ বছরে ভাঙনের তাণ্ডবে শিকার হয়ে উপজেলার অন্তত ১০ হাজার পরিবার ভিটেবাড়ি হারিয়ে গৃহহারা হয়েছে।