নেই সীমানা প্রাচীর * দখলে নিয়েছে বখাটেরা
সোনাগাজীর বীজাগার
ফেনী প্রতিনিধি
🕐 ৯:৪৩ অপরাহ্ণ, মে ২৬, ২০১৮
ফেনীর সোনাগাজী উপজেলায় কৃষি বিভাগের ইউনিয়ন বীজাগারগুলো জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে। সীমানা প্রাচীর না থাকায় ভবনগুলো রীতিমতো বখাটে ও মাদকাসক্তদের আস্তানায় পরিণত হয়েছে। ভবনগুলোর ছাদের পলেস্তারা খসে পড়ছে।
দরজা-জানালাগুলো কোনো রকম রশি দিয়ে লাগানো। থাকা ও রান্নার কক্ষগুলোতে উইপোকার মাটির বড় বড় স্তূপ। কোথাও কোথাও ইঁদুর, সাপের উপদ্রব দেখে মনে হয় ভুতুড়ে ঘর। ভেতরে প্রবেশ তো দূরের কথা উঁকি মেরে তাকাতেও যেন ভয় লাগে। সম্প্রতি উপজেলার মঙ্গলকান্দি মির্জাপুর ব্লক ইউনিয়ন বীজাগার কাম উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তার কার্যালয়ে গিয়ে এ অবস্থা দেখা যায়।
উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা ও উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, ষাটের দশকে সবুজ বিপ্লব কর্মসূচির আওতায় ফেনীর ফুলগাজী উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়নে একটি করে বীজাগার স্থাপন করা হয়েছিল। স্বাধীনতার পরবর্তী সময়ে ১৯৮৭ সালে উপজেলার নয়টি ইউনিয়নে নয়টি কার্যালয়ের মধ্যে মাত্র দুটি কার্যালয়ের যৎসামান্য ক্ষুদ্র মেরামত ও সংস্কার করা হয়। বাকি সাতটি কার্যালয় অদ্যাবধি কোনো সংস্কারের মুখ দেখেনি। উপজেলার বক্তারমুন্সী বাজারের পাশে অবস্থিত মঙ্গলকান্দি ইউনিয়নের মির্জাপুর ব্লক অফিসের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা আবু তৈয়ব জানান, তার অফিসটি জরাজীর্ণ ও ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে।
ভবনটিতে ঠিকমতো অফিসের কার্যক্রম পরিচালনা করা যাচ্ছে না। দৈনন্দিন দাপ্তরিক কার্যক্রম পার্শ্ববর্তী চায়ের দোকান, কিংবা কৃষকদের বাড়ির আঙিনায় বসে সমাধান করতে হচ্ছে। সীমানা প্রাচীর না থাকায় ভবনের বেশ কিছু জায়গা বখাটেরা দখলে নিয়ে মাদকের আস্তানায় পরিণত করেছে। এমনকি ভবনটির কিছু কিছু অংশ জরাজীর্ণ ও ব্যবহার অনুপযোগী হওয়ায় এক শ্রেণির প্রভাবশালী মহলও দখলের পাঁয়তারা করছে।
তিনি বলেন, ‘বাজারের ব্যবসায়ীরা অফিসের চারপাশে ময়লা ফেলে আবর্জনার স্তূপে পরিণত করেছেন। রাতের বেলায় অফিস ও অফিস সংলগ্ন এলাকা মাদকাসক্তদের আখড়ায় পরিণত হয়ে যায়। সংস্কারের জন্য বারবার লিখে ও মুখে বলে এ যাবৎ কোনো সরকারি বরাদ্দ পাওয়া যায়নি। ফলে তাদের কর্মস্থল থেকে অনেক দূরে বিশেষ করে পরিবার-পরিজন নিয়ে অন্যত্র বাসা ভাড়া নিয়ে অবস্থান করতে হচ্ছে। এতে কর্মকর্তা ও সেবা প্রত্যাশী কৃষকদের বিভিন্ন সমস্যা পোহাতে হচ্ছে।
উপজেলা কৃষি অফিসের উপ-সহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা আকরাম উদ্দিন জানান, কৃষকদের কৃষি বিষয়ক সেবা ও পরামর্শ প্রদান, কৃষি কার্ড বিতরণ, উপ-সহকারী কর্মকর্তাদের দৈনন্দিন কার্যক্রম পরিচালনা, নতুন নতুন প্রযুক্তিগুলো কৃষকদের কাছে পৌঁছে দেওয়ার জন্য এসব ভবন ব্যবহার হয়ে থাকে। প্রতিটি ভবনে চারটি থাকার ঘর, দুটি রান্নার কক্ষ, দুটি বাথরুম এবং একটি অফিস কক্ষ রয়েছে। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য অধিকাংশ ভবন জরাজীর্ণ ও ঝুঁকিপূর্ণ।
এ ব্যাপারে সোনাগাজী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাজ্জাদ হোসেন মজুমদার বলেন, ‘জরাজীর্ণ ভবনগুলো সংস্কার এবং সীমানা প্রাচীর নির্মাণের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে বারবার আবেদন করেও কোনো সমাধান পাওয়া যায়নি। তবে প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ পাওয়া গেলে গুরুত্বপূর্ণ এ অফিস ও কৃষকদের উন্নয়নে ভবনগুলো সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হবে। পরিত্যক্ত ভবনগুলো নতুন করে নির্মাণের জন্য লিখিত আবেদনও পাঠানো হয়েছে।’