সাজানো অপহরণ মামলায় জেলে দম্পতি
সৈয়দ মোঃ শহিদুল ইসলাম
🕐 ৯:৫১ অপরাহ্ণ, আগস্ট ২৯, ২০২৩

পারিবারিক শত্রুতা উদ্ধারে সোনাইমুড়ীতে সাজানো অপহরণের অভিযোগে ৪ জনকে আসামী করে মামলা করার অভিযোগ উঠেছে। এ মামলায় দম্পতিকে গ্রেপ্তার করে সংশ্লিষ্ট থানা পুলিশ মঙ্গলবার (২৯ আগস্ট) সকাল ১০টায় আদালতে সোপর্দ করেছে। ভিকটিমকে উদ্ধার করে আদালতে প্রেরণ করার পর সে ২২ ধারায় জবানবন্দী দেয়।
সরজমিনে গিয়ে ভিকটিমের বক্তব্য ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, পাশ্ববর্তী বেগমগঞ্জ উপজেলার মিরআলীপুর গ্রামের কাজী বাড়ির সাফিউদ্দিন পূর্ব আত্বীয়তার সূবাদে সোনাইমুড়ী উপজেলার মাহাতাব পুর গ্রামের ভিকটিম জেমিকে বিবাহ করে। বিবাহের পর শাফি উদ্দিন বিদেশে যায়। বছরখানেক বিদেশে অবস্থানকালে ভিকটিমের পিতার পরিবার ও কাজী সালাউদ্দিনের শ্বশুরের পরিবারের মধ্যে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে চরম বিরোধ দেখা দেয়। ভিকটিম জেমি ও কাজী সালাউদ্দিনের স্ত্রী মরিয়ম বেগম পরস্পর চাচাতো-জেঠাতো বোন এবং একে অপরের জ্যাঁ হয়। পারিবারিক শত্রুতার কারণে শাফিউদ্দিন বিদেশ থেকে দেশে আসার পর ভিকটিম জেমির ইচ্ছার বিরুদ্ধে তার পিতা-মাতা ২৩ মে, ২০২৩ তারিখে নোটারি পাবলিকের মাধ্যমে কথিত তালাক করিয়ে নিলেও স্বামী সাফিউদ্দিন তালাকের নোটিশ পায়নি। ইতিমধ্যে ভিকটিম এইচএসসি পরীক্ষা দিচ্ছিলো। পিতা-মাতা ও পরিবারের লোকজন কর্তৃক ইচ্ছার বিরুদ্ধে তালাকের বিষয়টি ভিকটিম মনে-প্রানে মানেনি। ইতিমধ্যে ভিকটিম অহরহ বিভিন্নভাবে তার স্বামীর সাথে দেখা সাক্ষাত ও যোগাযোগ রক্ষা করতো। বৃহস্পতিবার (১৭ আগস্ট) পরীক্ষা শেষে ভিকটিম নুসরাত জাহান জেমি তার স্বামী সাফিউদ্দিনের সাথে চলে যায়। ঘটনাটি ভিকটিমের পরিবারের লোকজন স্বাভাবিকভাবে মেনে নিতে না পেরে ও পূর্বের পারিবারিক শত্রুতা উদ্ধারে শুক্রবার (১৮ আগস্ট) সন্ধ্যায় অপহরণ কাহিনি সাজিয়ে ভিকটিমের মা ফাতেমা বেগম বাদি হয়ে ১। কাজি সাফি উদ্দিন ২। মরিয়ম আক্তার ডলি (ভিকটিমের জেঠাত বোন) ৩। কাজী সালাউদ্দিন ও অপর এক কিশোরীসহ ৪ জনকে আসামী করে সোনাইমুড়ী থানায় একটি অপহরণ মামলা করে। ঐ দিনই পুলিশ কাজী সালাউদ্দিন ও তার স্ত্রী মরিয়ম আক্তার ডলিকে গ্রেফতার করে কোর্টে সোপর্দ করে। ভিকটিম নুসরাত জাহান জেমিকে উদ্ধারসহ মামলার প্রধান আসামী কাজী সাফিউদ্দিনকে গ্রেফতারের জন্য সংশ্লিষ্ট থানা পুলিশ আইনি সকল কার্যক্রম অব্যাহত রাখে। গতকাল ভোর রাতে সোনাইমুড়ী থানা পুলিশ ভিকটিমকে উদ্ধার ও প্রধান আসামী সাফীউদ্দিনকে গ্রেফতার করে আদালতে প্রেরণ করে। ভিকটিম নুসরাত জাহান জেমি বিজ্ঞ আদালতে ২২ ধারায় জবানবন্দি প্রদান করে। ভিকটিম পরিপক্ক বয়সের বিধায় জবানবন্দী শেষে বিজ্ঞ আদালতের আদেশমতে নিজ জিম্মায় স্বামীর গৃহে চলে যায়।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই মোঃ মাসুম রানা খোলাকাগজকে জানান, ভিকটিমের মা বাদি হয়ে ৪ জনের বিরুদ্ধে অপহরণ মামলা করেছে। ভিকটিমকে উদ্ধার করে রবিবার আদালতে প্রেরন করলে ভিকটিম আদালতে ২২ ধারায় জবানবন্দী প্রদান করে। তবে ভিকটিম প্রদত্ত জবানবন্দীতে স্বেচ্ছায় স্বামীর সাথে গেছে মর্মে স্বীকারোক্তি দেয় এবং স্বামীর সাথে সুখে আছে বলেও জবানবন্দী দেয়। তবে এ মামলাটি নিয়ে অনেক ঝামেলা পোহাতে হয়েছে।
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
