ফলোআপ
ইউএনও’র “সামাজিক ও সম্প্রীতি” কমিটিতে মাদককারবারী, আ.লীগের ক্ষোভ
জামালুদ্দিন হাওলাদার, চট্টগ্রাম
🕐 ৮:২৩ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ১২, ২০২২
বির্তক ও মাদককারবারি মুক্ত “সামাজিক ও সম্প্রীতি” কমিটি গঠনের দাবি জানিয়েছেন চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগ। সোমবার দৈনিক খোলা কাগজের সঙ্গে আলাপকালে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সালাহ উদ্দিন হিরু সংগঠনিটর পক্ষে এ দাবি জানান। এরআগে সোমবার দৈনিক খোলাকাগজ ছাপা ও অনলাইন পোর্টালে “ইউএনও’র সামাজিক ও সম্প্রীতি কমিটিতে মাদককারবারী” শিরোনামে সংবাদ প্রকাশ হয়। এরপরই এ উপজেলার সর্বত্রে শুরু হয়েছে সমালোচনার ঝড়।
সালাহউদ্দিন হিরু বলেন, প্রধানমন্ত্রীর র্নিদেশিত “সামাজিক ও সম্প্রীতি” কমিটিকে প্রশ্নবিব্ধ করতে তালিকাভুক্ত মাদককারবারি ও সরকার বিরোধীদের নিয়ে স্থান দেওয়া হয়েছে। এই কমিটি ধর্মীয় উগ্রবাদ, জঙ্গীবাদ, সহিংসতা ও সন্ত্রাসবাদ প্রতিহত এবং অসাম্প্রদায়িক চেতনায় ধর্মীয় এবং সামাজিক বন্ধন কতটুকু এগিয়ে নিতে পারবে তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন ক্ষমতাসীন দলের এই নেতা।
এদিকে মাদক কারবারি, সরকার বিরোধী ও বিতর্কিত ব্যাক্তিদের নিয়ে “সামাজিক ও সম্প্রীতি কমিটি” গঠন করা হয়েছে অভিযোগে ক্সোভ প্রকাশ করেছেন ওই উপজেলা বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ও সচেতন মহলের মাঝে। তাদের ভাষ্য, তালিকাভুক্ত মাদককারবারি ও সরকার বিরোধীদের হাতে যখন সমাজের শৃঙ্খলার দায়িত্ব তুলে দেওয়া হয়, সেখানে শান্তি শৃঙ্খলা থাকবেই বা কতটুকু!
লোহাগাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার শরীফ উল্লাহ জানান, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে পাঠানো ফরমেট অনুযায়ি দেশের অন্যান্য জেলা ও উপজেলার ন্যায় চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলা প্রশাসনও গত ১লা সেপ্টেম্বর “সামাজিক ও সম্প্রীতি” নামক একটি কমিটি গঠন করেছে। এতে স্থানীয় সংসদ সদস্য প্রফেসর ড. আবু রেজা মোহাম্মদ নদভীকে প্রধান উপদেষ্টা এবং লোহাগাড়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জিয়াউল হক চৌধুরী বাবুলকে উপদেষ্টা করা হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে সভাপতি করে মোট ৪৬ সদস্য বিশিষ্ট্য এই কমিটি গঠন করা হয়।
ইউএনও বলেন, ধর্মীয় উগ্রবাদ, জঙ্গীবাদ, সহিংসতা ও সন্ত্রাসবাদ প্রতিহত এবং অসাম্প্রদায়িক চেতনায় ধর্মীয় ও সামাজিক বন্ধন এগিয়ে নিতে প্রধানমন্ত্রী কার্যালয় থেকে এই কমিটি গঠন করা হয়েছে।
তবে সচেতন মহলের অভিযোগ, কমিটির ১২ নম্বরের থাকা মোহাম্মদ মিজানুর রহমান স্থানীয়ভাবে বিতর্কিত এবং মাদক কারবারি হিসেবে চিহ্নিত। ইতিপূর্বে তার মাদক বিকিকিনির ফোনালাপ নিয়ে বিভিন্ন সময় গণমাধ্যমে সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশ হযেছে। এছাড়া কমিটির ৪১ নম্বরে থাকা আমিনুল ইসলাম জামায়াতের ছাত্রসংগঠন ইসলামী ছাত্রশিবিরের কর্মী তারা দাবিকরেন।
লোহাগাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সালাহ উদ্দিন হিরু বলেন, কমিটিতে আমাকে সদস্য করা হয়েছে শুনেছি তবে এ কমিটির বিষয়ে কিছুই জানতান মান। তবে ফেসবুকের মাধ্যমে এধরনের একটি কমিটি দেখেছি, যা নিয়ে এলাকায় ব্যাপক সমালোচনা হচ্ছে। এসব সমালোচনার পক্ষে সত্যতাও আছে। কিন্তু কিভাবে সরকারের এমন একটি কমিটিতে মাদককারবারি ও বিতর্কিতরা স্থান পায় আমার বোধগম্য হচ্ছে না।
তিনি আরও বলেন, উপজেলা নির্বাহী অফিসার স্থানীয় উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বা সাধারণ সম্পাদক কারো মতামত নেওয়ার প্রয়োজন মনে করেননি।
অনেকে বলছেন, আগে যদিও গোপনে মাদক বিকিকিনি হতো, তা এখন প্রকাশ্যেই হবে। সরকারের সামাজিক ও সম্প্রীতি কমিটিতে থাকার সুযোগ নিয়ে চিহ্নিত এসব মাদককারবারি প্রশাসনের প্রভাব খাঁটিয়ে এলাকার পাড়া-মহল্লা মাদকের আখড়ায় পরিনত করবে বলেও ক্ষোভ প্রকাশ করেন। একইসাথে সরকার বিরোধীরা নির্বাচনকে সামনে রেখে আইনশৃঙ্খলা বিরোধী কর্মকাণ্ডে মেতে উঠবে বলে ধারণা পোষণ করেছেন তারা।
অভিযোগের বিষয়ে লোহাগাড়া “সামাজিক ও সম্প্রীতি” কমিটির সদস্য মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, মাদককারবারি হিসেবে তার বিরুদ্ধে উঠা অভিযোগ উদ্দ্যেশ্যপ্রনোদিত। আর স্থানীয় এমপির প্রতিনিধি হিসেবে তিনি কমিটিতে রয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার শরীফ উল্লাহ বলেন, আমি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে পাঠানো ফরমেট অনুসরন করে এই কমিটি গঠন করেছি। স্থানীয় এমপি কাকে প্রতিনিধি করেছেন, সেটা এমপি মহোদয়ই বুঝবেন।