ইউএনও’র ‘সামাজিক ও সম্প্রীতি’ কমিটিতে মাদককারবারি!
জামালুদ্দিন হাওলাদার, চট্টগ্রাম
🕐 ৯:৩০ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ১১, ২০২২
মাদক কারবারি, সরকার বিরোধী ও বিতর্কিত ব্যাক্তিদের নিয়ে চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার “সামাজিক ও সম্প্রীতি কমিটি” গঠন করা হয়েছে অভিযোগ উঠেছে। এই নিয়ে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে স্থানীয় রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ও সচেতন মহলের মাঝে। তাদের ভাষ্য, তালিকাভুক্ত মাদককারবারি ও সরকার বিরোধীদের হাতে যখন সমাজের শৃঙ্খলার দায়িত্ব তুলে দেওয়া হয়, সেখানে শান্তি শৃঙ্খলা থাকবেই বা কতটুকু!
অনেকে বলছেন, আগে যদিও গোপনে মাদক বিকিকিনি হতো, তা এখন প্রকাশ্যেই হবে। সরকারের সামাজিক ও সম্প্রীতি কমিটিতে থাকার সুয়োগ নিয়ে চিহ্নিত এসব মাদককারবারি প্রশাসনের প্রভাব খাঁটিয়ে এলাকায় পাড়া-মহল্লা মাদকের আখড়ায় পরিনত করবে বলে বলেও ক্ষোভ প্রকাশ করেন। একইসাথে সরকার বিরোধীরা নির্বাচনকে সামনে রেখে আইনশৃঙ্খলা বিরোধী কর্মকাণ্ডে মেতে উঠবে বলে ধারণা পোষণ করেছেন।
লোহাগাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার শরীফ উল্লাহ জানান, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে পাঠানো ফরমেট অনুযায়ি দেশের অন্যান্য জেলা ও উপজেলার ন্যায় চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলা প্রশাসনও গত ১লা সেপ্টেম্বর “সামাজিক ও সম্প্রীতি” নামক একটি কমিটি গঠন করেছে। এতে স্থানীয় সংসদ সদস্য প্রফেসর ড. আবু রেজা মোহাম্মদ নদভীকে প্রধান উপদেষ্টা এবং লোহাগাড়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জিয়াউল হক চৌধুরী বাবুলকে উপদেষ্টা করা হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে সভাপতি করে মোট ৪৬ সদস্য বিশিষ্ট্য এই কমিটি গঠন করা হয়।
ইউএনও বলেন, ধর্মীয় উগ্রবাদ, জঙ্গীবাদ, সহিংসতা ও সন্ত্রাসবাদ প্রতিহত এবং অসাম্প্রদায়িক চেতনায় দর্মীয় ও সামাজিক বন্ধন এগিয়ে নিতে প্রধানমন্ত্রী কার্যালয় থেকে এই কমিটি গঠন করা হয়েছে।
তবে সচেতন মহলের অভিযোগ, কমিটির ১২ নম্বরের থাকা মোহাম্মদ মিজানুর রহমান স্থানীয়ভাবে বিতর্কিত এবং মাদক কারবারি হিসেবে চিহ্নিত। ইতিপূর্বে তার মাদক বিকিকিনির ফোনালাপ নিয়ে বিভিন্ন সময় গণমাধ্যমে সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশ হযেছে। এছাড়া কমিটির ৪১ নম্বরে থাকা আমিনুল ইসলাম জামায়াতের ছাত্রসংগঠন ইসলামী ছাত্রশিবিরের কর্মী তারা দাবিকরেন।
লোহাগাড়া উপজেলা আওয়ামীলীরীগের সাধারণ সম্পাদক সালাহ উদ্দিন হিরু বলেন, এই কমিটির বিষয়ে আমি কিছুই জানতান মান। তবে ফেসবুকের মাধ্যমে এধরনের একটি কমিটি দেখেছি, যা নিয়ে এরাকায় ব্যাপক সমালোচনা হচ্ছে। এসব সমালোচনার পক্ষে সত্যতাও আছে। কিন্তু কিভাবে সরকারের এমন একটি কমিটিতে মাদককারবারি ও বিতর্কিতরা স্থান পায় আমার বোধগম্য হচ্ছে না।
তিনি আরও বলেন, এই কিমিটি গঠনের বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার স্থানীয় উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাধারণ সম্পাদক কারো মতামত নেওয়ার প্রয়োজন মনে করেননি।
অভিযোগের বিষয়ে লোহাগাড়া “সামাজিক ও সম্প্রীতি” কমিটির সদস্য মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, তার বিষয়ে উঠা মাদককারবারির অভিযোগটি উদ্দ্যেশ্যপ্রনোদিত। প্রতিপক্ষ একটি মহল তার বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এই প্রোপাগান্ডা ছড়াচ্ছে। তিনি বলেন, কমিটিতে স্থানীয় এমপির প্রতিনিধি তিনি আছেন।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার শরীফ উল্লাহ বলেন, আমি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে পাঠানো ফরমেট অনুসরন করে এই কমিটি গঠন করেছি। আর যার বিষয়ে কথা বরা হচ্ছে উনি স্থানীয় এমপির প্রতিনিধি। এমপি কাকে প্রতিনিধি করেছেন, সেটা এমপি মহোদয়ই বুঝবেন।