ঢাকা, বুধবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৪ | ৩ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

বাঞ্ছারামপুরে বিলুপ্তপ্রায় বাবুই পাখি

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি
🕐 ৯:৫১ অপরাহ্ণ, মে ১৫, ২০১৮

‘বাবুই পাখিরে ডাকি বলিছে চড়াই, কুঁড়ে ঘরে থেকে করো শিল্পের বড়াই’। কবি রজনীকান্ত সেনের কালজয়ী কবিতাটি আজও মানুষের মুখে মুখে। কবিতাটি মানুষের অন্তরে গেঁথে থাকলেও কালের বিবর্তনে হারিয়ে যাচ্ছে প্রকৃতির কারিগর।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর উপজেলাসহ পাশর্^বর্তী হোমনা, মুরাদনগর ও নবীনগর অঞ্চলে এক সময় বাবুই পাখির বাসা দেখা গেলেও এখন আর তা চোখে পড়ে না।
বর্ষা আগমনের পূর্বেই সাধারণত বাবুই পাখি বৃষ্টির পানির হাত থেকে বাঁচতে ও প্রজননের জন্য নতুন বাসা বুনে। অথচ এখন সেটির দেখা মেলা ভার। গ্রামবাংলায় এখন আর আগের মতো বাবুই পাখির বাসা চোখে পড়ে না। কালের বিবর্তনে বিলুপ্তির পথে বাবুই পাখি।
বাবুই পাখি তালগাছের পাতায় দল বেধে বাসা বাঁধে। তাদের বাসা সুউচ্চ তালগাছ আরও নয়নাভিরাম করে তোলে। এমন নিপুণ কারিগরি বাসা আর কোনো পাখি বুনতে পারে না। মানুষের পক্ষেও সম্ভব নয় এমন সুন্দর বাসা তৈরি করা। প্রবল ঝড়-বৃষ্টি ও বাতাসেও টিকে থাকে তাদের বাসা। খড়ের ফালি, ধানের পাতা, তালের কচিপাতা, ঝাউ ও কাঁশবনের লতাপাতা দিয়ে উঁচু তালগাছে চমৎকার আকৃতির বাসা তৈরি করে বাবুই পাখি। একান্নবর্তী পরিবারের মতো এক গাছে দলবদ্ধ বাসা বুনে এদের বাস। বাবুই পাখি একাধারে শিল্পী, স্থপতি এবং সামাজিক বন্ধনেরও প্রতিচ্ছবি। শক্ত বুণনের এ বাসা টেনেও ছেড়া কঠিন। দিনে দিনে উজাড় হচ্ছে তালগাছ। তার সঙ্গে উজাড় হচ্ছে বাবুই পাখির বাসা। কয়েক বছর পূর্বেও গ্রামগঞ্জের তাল, নারিকেল ও সুপারি গাছে বাবুই পাখির বাসা চোখে পড়ত। কিন্তু এখন আগের মতো চোখে পড়েনা বাবুই পাখির বাসা। এসব বাসা শুধু শৈল্পিক নিদর্শনই ছিল না, মানুষের মনে চিন্তার খোরাক যোগাত। বাবুই পাখির অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো এরা রাতের বেলায় ঘর আলোকিত করার জন্য জোনাকি পোকা ধরে নিয়ে বাসায় রাখে। সকাল হলেই আবার তাদের ছেড়ে দেয়। পাখি প্রেমিক সাবেক বাঞ্ছারামপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান দুধ মিয়া বিএসসি বলেন, ‘বর্তমানে যেমন তাল জাতীয় গাছ হারিয়ে যাচ্ছে ঠিক তেমন হারিয়ে যাচ্ছে বাবুই পাখি। আগের মতো তালগাছও নাই আর বাবুই পাখিও নাই।’

 
Electronic Paper