ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪ | ১০ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

হরণী ও চানন্দী ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন

প্রতিদ্বন্ধী প্রার্থীদের প্রস্তাবক ও সমর্থকদের অপহরণের অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক, নোয়াখালী
🕐 ৫:১২ অপরাহ্ণ, মে ১৯, ২০২২

প্রতিদ্বন্ধী প্রার্থীদের প্রস্তাবক ও সমর্থকদের অপহরণের অভিযোগ

নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলার হরণী ও চানন্দী ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্ধী প্রার্থীদের প্রস্তাবক ও সমর্থকদের অপহরণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় নোয়াখালী জেলা প্রশাসক ও সিনিয়র জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা বরাবরে বুধবার রাতে লিখিত অভিযোগ ও বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় নোয়াখালী প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন করেছেন ওই দুটি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও সদস্য পদের মনোনয়ন প্রত্যাশিরা। মানববন্ধন শেষে জেলা প্রশাসক ও জেলার সিনিয়র নির্বাচন কমকর্তার কাছে পূণরায় অভিযোগ জমা দেন।

অভিযোগে জানা গেছে, আগামি ১৫ জুন হরণী ও চানন্দী ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনে চেয়ারম্যান ও সদস্য পদে প্রতিদ্বন্ধী প্রার্থীদের প্রস্তাবক ও সমর্থকদের ৪ জনকে বুধবার সন্ধ্যায় তুলে নেয় সাবেক এমপি মোহাম্মদ আলীর সন্ত্রাসী বাহিনী। গত ২৫ এপ্রিল তফসিল ঘোষনা হয়। তফসিল ঘোষণার পর থেকে প্রার্থীগণ হাতিয়া উপজেলা নির্বাচন অফিস থেকে মনোনয়ন সংগ্রহ করার কথা থাকলেও বর্তমান এমপির (আয়শা আলী) স্বামী মোহাম্মদ আলীর সমর্থিত সন্ত্রাসীরা মনোনয়ন সংগ্রহ করতে বাধা দেয়, পরবর্তীতে নির্বাচন কমিশনের নির্দেশ মোতাবেক জেলা ও সুবর্ণচর উপজেলা নির্বাচন অফিসে প্রার্থীগণ মনোনয়ন সংগ্রহ ও জমা দেন। বিভিন্ন চরাঞ্চল থেকে চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের দিয়ে আমাদের নির্বাচনী এলাকায় প্রার্থী, প্রস্তাবকারী ও সমর্থনকারীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রার্থীতা তুলে নিতে হামলা ও হুমকি প্রদান করে। তফসিলকৃত দুটি ইউনিয়নে ভোটাররা আতঙ্কিত অবস্থায় আছে। নির্বাচনী প্রচারণার ব্যাপারে কমিশনের সিদ্ধান্ত না থাকলেও সাবেক সংসদ মোহাম্মদ আলীর প্রার্থীগণ সকল ধরণের প্রচার প্রচারণা করে যাচ্ছেন। অপরদিকে আমাদের প্রার্থীগণকে হুমকি দিয়ে আসছে। প্রার্থীগণ ভয়ে বাড়ি থেকে বের হতে পারছে না।

হরণী ইউনিয়নের ২ নং ওয়ার্ডের সদস্য প্রার্থী দ্বীন ইসলাম জানান, আমার প্রতিপক্ষ মেহরাজ ভাইয়ের লোকেরা গতকাল দুপুরের দিকে আমার সমর্থণকারী আলাউদ্দিনকে ধরে নিয়ে “আমি প্রস্তাবকারী নই’ মর্মে লিখিত নিয়ে বৃহস্পতিবার ছেড়ে দেয়।

হরণী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান প্রার্থী মুশফিকুর রহমান জানান, ১ নং ওয়ার্ডের সদস্য প্রার্থী মাহবুবুর রহমান সোহেলের প্রস্তাবকারী আবুল কালামকে তুলে নিয়ে অপর প্রতিদ্ব›দ্বী প্রার্থী মিরাজ ‘প্রস্তাবকারী নই’ লিখিত নিয়ে ছেড়ে দেয়। এভাবে বিভিন্ন প্রার্থীর মোট ৫ জন প্রস্তাবকারী ও সমর্থণকারীকে তুলে নিয়ে লিখিত নিয়ে ছেড়ে দেয়। নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দী প্রার্থীদের নানাভাবে হুমকি ধমকি দেয়া হচ্ছে। ইতোমধ্যে অনেক প্রার্থী এলাকা ছেড়েছেন সন্ত্রাসীদের ভয়ে।

হরণী ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ডের প্রার্থী শাহেনা আক্তারের প্রস্তাবকারী আলেয়া বেগম ও সমর্থণকারী আবদুল করিমকে ধরে নিয়ে তারা প্রস্তাবকারী ও সমর্থণকারী নয় মর্মে স্বাক্ষর করানো হয়।

মানববন্ধনে অংশ নেয়া চানন্দী ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ড থেকে সদস্য পদে মনোনয়ন প্রার্থী আয়শা খাতুন জানান, বুধবার স্থানীয় মিলন মাস্টার তার জামাতার কাছে ৫ লাখ টাকা চায়। নির্বাচনের প্রার্থী হওয়ায় তার নাকি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। তাই, তোমার শাশুড়িকে বলো আমার ৫ লাখ টাকা দিয়ে নির্বাচন করতে। আর না হয় নির্বাচন থেকে সরে যেতে বলো। তা না হলে তোমার বিপদ আছে।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে একাধিবার হাতিয়ার সাবেক সাংসদ মোহাম্মদ আলী দেশ রূপান্তরকে বলেন, এ ধরণের অভিযোগ সম্পুর্ণ মিথ্যা, সাজানো। নোংরামি করা এদের কাজ। এটা তারা করবে। তিনি বলেন, কারা করছে, কি জন্য করছে আপনারা(সাংবাদিকরা) খোজ নেন।

জেলা সিনিয়র নির্বাচন কর্মকর্তা মো. মেছবাহ উদ্দিন জানান, এ বিষয়ে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। অভিযোগকারীদের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও হাতিয়া থানায় লিখিত অভিযোগ দিতে বলা হয়েছে।

 
Electronic Paper