তিনজনকে ছুরিকাঘাত আইসিউই রোগীর
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
🕐 ১০:৫৭ পূর্বাহ্ণ, জুলাই ২৫, ২০২১
করোনার লক্ষণ নিয়ে আইসিইউতে ভর্তি থাকা এক রোগীর বিরুদ্ধে দুই নার্স ও এক ওয়ার্ডবয়কে ছুরি মারার অভিযোগ উঠেছে। ঘটনাটি ঘটেছে রাজধানীর উত্তরায় শিন শিন জাপান হাসপাতাল প্রাইভেট লিমিটেডে। এ ঘটনায় হাসপাতালের ম্যানেজার মো. শরিফুল ইসলাম উত্তরা পশ্চিম থানায় একটি এজাহার দায়ের করেছেন। অপরদিকে অভিযুক্ত পাল্টা দাবি করে বলেছেন, তাকে হত্যার চেষ্টা করা হলে তিনি আত্মরক্ষায় ছুরিকাঘাত করেন। আইসিইউর মতো স্পর্শকাতর স্থানে ছুরি আসলো কীভাবে-রোগীকে কেউ দিয়েছেন, নাকি ভর্তির আগে থেকে রোগীর সাথে ছিল; নাকি অপারেশনের ছুরি-তা এখানো নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
এজাহারে শরিফুল ইসলাম বলেছেন, শ্বাসকষ্ট হওয়ায় গত ১৮ জুলাই ভোর ৪টার দিকে সবুজ পিরিস (৩৫) এই হাসপাতালে ভর্তি হন। তিনি মুন্সীগঞ্জ জেলার সিরাজদীখান উপজেলার শুলপুর গ্রামের মৃত সেন্টু পিরিসের ছেলে। করোনা সিমটম থাকায় রোগীকে আলাদাভাবে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছিল। আইসিইউতে ভর্তি থাকা অবস্থায় ২২ জুলাই দিবাগত রাত দেড়টার দিকে হঠাৎ অতর্কিতে হত্যার উদ্দেশে নার্স মিতু রেগো (২৪), ইমনা আফরোজ কাকলি (৪০) এবং ওয়ার্ডবয় মো. সাগরের (২৫) হাতে ও পেটে ছরিকাঘাত করেন। তাদের চিৎকারে হাসপাতালের দর্শনার্থী অন্যান্য ডাক্তার এবং স্টাফরা ঘটনাস্থলে গিয়ে শান্ত কারার চেষ্টা করেন। সবুজ পিরিস উশৃঙ্খল আচরণসহ লাফালাফি করতে থাকেন। পরবর্তীতে স্টাফরা আসামির হাত থেকে রক্তমাখা চাকু উদ্ধার করে হেফাজতে নেন। একই সাথে আহতদের উদ্ধার করে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়। মিতু এবং কাকলির অবস্থা আশঙ্কাজনক। তারা এ হাসপাতালে আইসিউইতে চিকিৎসাধীন। এছাড়া সাগর ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন। আসামিও তাদের হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে বলে ২৩ জুলাই দায়ের করা এজাহারে তিনি উল্লেখ করেন।
গতকাল শনিবার দুপুরে মুঠোফোনে কথা হলে শরিফুল ইসলাম জানান, নার্স দুজনের অবস্থার উন্নতি হয়েছে। এছাড়া ওই রোগীকে চিকিৎসার জন্য শুক্রবার ইউনাইটেড হাসপাতালে নিয়ে গেছে। রোগী কেন নার্সদের ছুরি মেরেছেন তারও নির্দিষ্ট করে কিছু এজাহারে উল্লেখ নেই। তবে নার্সদের একটি সংবাদ পোর্টালে বলা হয়েছে-‘নার্স মিতুর কাছে রোগী ঘুমের ইনজেকশন চেয়েছিল। মিতু ঘুমের ইনজেকশন দিতে অস্বীকৃতি জানায়। তিনি বলেন, ডাক্তারের অনুমতি ছাড়া দেয়া যাবেনা। সেই আক্রোশে এক ঘন্টা পর মিতুকে ডেকে রোগী নাটকীয়ভাবে কম্বল মুড়ি দিয়ে শুয়ে থাকে এবং মিতু আসামাত্রই তার পেটে দুইবার ছুরিকাঘাত করে। এরপর অন্য নার্সকেও ৪ বার ছুরিকাঘাত করে।’
রোগী সবুজ সাংবাদিকদের জানান, তর্কবিতর্কের একপর্যায়ে হাসপাতালের নার্স ও ওয়ার্ডবয় মিলে তাকে মেরে ফেলতে চেয়েছিল। তিনি আত্মরক্ষায় ছুরিকাঘাত করেছেন। এ বিষয়ে উত্তরা পশ্চিম থানার ওসি শাহ মো. আক্তারুজ্জামান ইলিয়াস বলেন, অভিযোগটি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।