ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪ | ১১ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

২৬ মার্চের মধ্যেই ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল করুন: ডা. জাফরুল্লাহ

নিজস্ব প্রতিবেদক
🕐 ৩:৫৭ অপরাহ্ণ, মার্চ ০৬, ২০২১

২৬ মার্চের মধ্যেই ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল করুন: ডা. জাফরুল্লাহ

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনকে কালাকানুন উল্লেখ করে আগামী ২৬ মার্চের মধ্যেই এ আইন বাতিলের দাবি জানিয়েছেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও ভাসানী অনুসারী পরিষদের চেয়ারম্যান ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। তিনি বলেন, নিরাপত্তার জন্য অন্য আইন আছে, প্রয়োজনে সেটি সংশোধন করুন, কিন্তুডিজিটাল নিরাপত্তা আইন সংশোধনের নামে প্রতারণা করবেন না। এটি অবশ্যই কবরদিতে হবে। ৬ মার্চ, শনিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বাংলাদেশ লেবার পার্টি আয়োজিত এক মানববন্ধনে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এ কথা বলেন তিনি। 

লেখক সাংবাদিক মোশতাক আহমেদ হত্যার প্রতিবাদে এবং ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের দাবিতে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। এতে এনডিপির সভাপতি ক্বারী আবু তাহেরের সভাপতিত্বে আরো বক্তৃতা করেন, বাংলাদেশ লেবারপার্টির চেয়ারম্যান ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, গণস্বাস্থের প্রেস উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম মিন্টু, ইসলামী ঐক্যজোটের নেতা মাওলানা শওকত আমিন, মনিরুজ্জামান মনির, দেশ বাঁচাও মানুষ বাঁচাও আন্দোলনের সভাপতি কে এম রকিবুল ইসলাম রিপন প্রমুখ।

ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ব্যাংক লুট, শেয়ারবাজার লুটপাট কারীদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়া হয় না, কিন্তু ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় এখন প্রায় এক হাজার মানুষকে কারাগারে রাখা হয়েছে। একটি কার্টুন আঁকলে কি এমন ক্ষতি হয় প্রশ্ন করে তিনি বলেন, কারাগারে মোশতাক আহমদকে বিনা চিকিৎসায় মরতে হয়েছে। এখন কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে যদি চিকিৎসা দেওয়া না হয়, এ কারণে তার যদি মৃত্যু হয় তাহলে এর জন্য কে দায়ী হবে। সরকার ও প্রধানমন্ত্রীকে এর দায় নিতে হবে। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুও তার বইতে কারাগারে চিকিৎসা ভালো না থাকার বিষয়টি লিখে গেছেন। এখনও দেশের কারাগার গুলোতে ভালো চিকিৎসক ও চিকিৎসা ব্যবস্থা নেই। জরুরি ইসিজি, হার্টের চিকিৎসা ব্যবস্থা নেই। এগুলোর উন্নয়ন না করা বঙ্গবন্ধুকেই অসম্মান করার সামিল।

করোনার টিকা নেয়ায় প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানিয়ে ডা. জাফরুল্লাহ বলেন, আপনাকে এতদিন টিকা নেয়ার আহবান জানিয়ে আসছিলাম। কিন্তু আপনি ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রী আসার পর করোনা টিকা নিয়েছেন। কিন্তু এ টিকা আপনি ঘরে না বসে যদি বিএসএমএমইউতে এসে নিতে তাহলে দেখতেন টিকা দেয়ার ক্ষেত্রে কেমন ব্যবস্থাপনা চলছে। তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, আপনি টিকা নিয়েছেন কিন্তু এটি কোন টিকা তা জনগনের জানার অধিকার রয়েছে। আপনি কি জনগনকে যে টিকা দিচ্ছেন সে টিকা নিয়েছেন, নাকি ভারতের কোন বিশেষ টিকা নিয়েছেন, নাকি অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা নিয়েছেন তা জনগনকে জানান।

দেশে কালো মেঘ দেখা যাচ্ছে মন্তব্য করে জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ভারতীয়পররাষ্ট্র মন্ত্রী জয়শংকর এসেছেন। তিনি গদবাঁধা নানা কথা বলছেন। তিনি বলছেন সীমান্তে বিনা বিচারে আর মারা হবে না। কিন্তু তোমরা ফেলানি হত্যার বিচার কি করেছো? সীমান্তে প্রতি সপ্তাহে আমাদের মানুষকে হত্যা করছে। তিনি বলেন, ভারত কানেকটিভিটি চাচ্ছে। কানেকটিভিটি কি? গুজরাটের পণ্য আসামে যেতে পারেনা। তারা আমাদের উপর দিয়ে পণ্য নিয়ে যাবে। তারা সুলভ মূল্যে খাবে। আমার রক্তের বিনিময়ে অর্জিত দেশের উপর দিয়ে যাবে; এটা হতে পারে না।

দেশে ১৯৭৪ সালের মত দুর্ভিক্ষের আভাস দেখা যাচ্ছে জানিয়ে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, দুর্যোগের ঘনঘটা দেখতে পাচ্ছি। মার্কিন খাদ্য সংস্থার রিপোর্ট মতে দেশে এ বছর এক মেট্রিক টন ধান কম উৎপাদন হয়েছে, গম কম উৎপাদন হয়েছে ৭ মেট্রিক টন। এজন্য দেশে আবার বঙ্গবন্ধুর ’৭৪ এর আমলের মত পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে। তিনি বলেন, সরকার বাইরে থেকে খাদ্য আমদানির চিন্তা করছে, কিন্তু যে কৃষকরা আমাদের বাঁচিয়ে রেখেছে তাদের কথা চিন্তা করছে না। বরং নিজ দলের ব্যবসায়ীদের প্রণোদোনা দিচ্ছেন। যারা লুটপাটের রাজা। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী আমরা আপনার কল্যাণ চাই। আপনাকে আমরাজীবিত দিখতে চাই। আপনি উজবুক মন্ত্রীদের কথা শুনবেন না। দেশে কোন সমস্যাদেখা দিলে মন্ত্রীদের তখন খুঁজে পাওয়া যাবে না। এজন্য আপনাকেই সিদ্ধান্তনিতে হবে।

তিনি বিরোধী দলের উদ্দেশ্যে বলেন, এখন সময় এসেছে সব দলমতের মানুষকে সাথে নিয়ে রাজপথে নামার। দেশে পরিবর্তন ছাড়া শান্তি আসবে না। আপনারা ঘরে বসে থাকবেন না, রাজপথে নেমে আসুন।

 
Electronic Paper