মোহাম্মদপুরে গৃহকর্মী জান্নাতী হত্যা
গৃহকর্ত্রীর স্বীকারোক্তি
নিজস্ব প্রতিবেদক
🕐 ৯:০২ পূর্বাহ্ণ, অক্টোবর ২৬, ২০১৯
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে শিশু গৃহকর্মী জান্নাতী হত্যার ঘটনায় গৃহকর্ত্রী রোকসানা পারভিন (৩৮) আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। শুক্রবার (২৫ অক্টোবর) দুপুরে আদালতে হত্যার কথা স্বীকার করেন রোকসানা পারভিন। এছাড়াও মামলার অপর আসামি রোকসানা পারভিনের স্বামী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সাঈদ আহমেদ পলাতক রয়েছেন।
গতকাল মোহাম্মদপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আবদুল আলীম এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেন। এর আগে গত মঙ্গলবার রাতে জান্নাতীকে সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। জান্নাতী মোহম্মদপুরের স্যার সৈয়দ রোডের একটি ছয়তলা ভবনের এক তলায় কাজ করত। ওই ফ্ল্যাটটি পিরোজপুরের পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সাঈদ আহমেদের। সেখানে থাকতেন তার স্ত্রী রোকসানা পারভিন, সপ্তম শ্রেণি পড়ুয়া ছেলে ও বোন। ঘটনার দিন সাঈদ আহমেদও বাসায় ছিলেন। নাম না প্রকাশ করার শর্তে পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, রোকসানা বলেন মারধরের পর জান্নাতী অজ্ঞান হয়ে রান্নাঘরে পড়ে যায়। ওই অবস্থাতেই দুই ঘণ্টার রোকসানা পারভিন স্বীকারোক্তিতে তার স্বামীর সম্পৃক্ততা সম্পর্কে তথ্য দেননি এবং আরও অনেক কিছুই চেপে গেছেন বলে ধারণা করছে পুলিশ।
এদিকে সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ মর্গ সূত্র জানায়, জান্নাতীর শরীরের নতুন-পুরোনো অসংখ্য আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। তারা ধারণা করছেন মৃত্যুর আগে জান্নাতী ধর্ষণেরও শিকার হয়েছিল।
গত বৃহস্পতিবারের এই ঘটনায় বাড়ির গৃহকর্ত্রী রোকসানা পারভিনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হেফাজতে নেয় পুলিশ।
তথ্যসূত্রে জানা যায়, পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সাঈদ আহমেদ চাকরি সূত্রে যখন বগুড়ায় ছিলেন তখন আট বছর বয়সে জান্নাতী ওই বাড়িতে কাজ নেয়। এরপর সাঈদের পরিবার ঢাকায় চলে এলে জান্নাতীও তাদের সঙ্গে ঢাকায় আসে। ঘটনার দিনও গৃহকর্তা সাঈদ আহমেদ বাসায় ছিলেন। তবে গণমাধ্যমের সামনে আসেননি তিনি।
ওইদিন বগুড়ার গাবতলী থেকে জান্নাতীর বাবা জানু মোল্লা ঢাকা আসেন বলেন, ‘গত মঙ্গলবার ভোরে ফোনে জানানো হয় মেয়ে অসুস্থ। দেখতে চাইলে তাড়াতাড়ি ঢাকায় আসেন।’ জানু মোল্লা আরও বলেন, ‘খবর পেয়ে ঢাকায় এসে দেখি মেয়ে মারা গেছে। মেয়ের গায়ে অনেক দাগ।’
মোহাম্মদপুর থানার ওসি জি জি বিশ্বাস বলেন, ‘গত মঙ্গলবার রাত সোয়া ১২টায় সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ থেকে ফোনে জানানো হয়, এক দম্পতি একটি মেয়েকে মৃত অবস্থায় জরুরি বিভাগে নিয়ে এসেছেন। পরে পুলিশ হাসপাতালে গিয়ে লাশের ময়নাতদন্ত করতে বলে।