ছেলেধরা সন্দেহে নারীকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় আটক আরও ২
নিজস্ব প্রতিবেদক
🕐 ১১:২২ পূর্বাহ্ণ, জুলাই ২৩, ২০১৯
রাজধানীর উত্তর বাড্ডায় ছেলেধরা সন্দেহে গণপিটুনিতে এক নারী নিহত হওয়ার ঘটনায় আরও দুই যুবককে আটক করেছে পুলিশ। মোবাইল ফোনের ভিডিও ফুটেজ দেখে সোমবার রাতে বাড্ডার হোসেন মার্কেট ও তেঁতুলতলা এলাকা থেকে তাদের আটক করা হয়।
এরা হলেন- মো. কামাল ও আবুল কালাম আজাদ। এ নিয়ে এ ঘটনায় ছয়জনকে আটক করা হলো। এদের মধ্যে একজন স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। আর বাকি তিনজনকে আদালতে হাজির করে রিমান্ড আবেদন করা হয়েছে।
বাড্ডা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আবদুর রাজ্জাক জানান, ভিডিও ফুটেজ দেখে কালাম ও আজাদকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তারা উত্তর বাড্ডায় থাকত।
এর আগে এ ঘটনায় রোববার রাতে মো. শাহীন, জাফর হোসেন, শহিদুল ইসলাম ও বাচ্চু মিয়া নামে চারজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তাদের সোমবার আদালতে হাজির করা হলে তিনজনকে চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। জাফর হোসেন ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিলে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।
এ ঘটনায় নিহতের ভাগিনা নাসির উদ্দিন গত শনিবার রাতে অজ্ঞাত ৪০০ থেকে ৫০০ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেছে।
বাড্ডা থানায় দায়ের করা মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, রেনু তার মেয়েকে ভর্তি করার জন্য স্কুলে যান। কিন্তু মানসিক অসুস্থতার কারণে তার আচরণ অস্বাভাবিক ছিল। এজন্য স্কুলের অনেকেই তাকে ছেলেধরা হিসেবে সন্দেহ করছিল। প্রধান শিক্ষক তার সঙ্গে কথা বলার জন্য রুমে নিয়ে যান। কিন্তু স্কুল প্রাঙ্গণে তার অস্বাভাবিকতা দেখে অনেকেই বের করে মারধর করতে চাইছিলেন।
প্রধান শিক্ষক রেনুকে বাইরে বের না করলে, স্কুলের কিছু অভিভাবক ও বাইরে থেকে আসা উৎসুক জনতা রুমের গেট ভেঙে তাকে 'ছেলেধরা' বলে মারধর করে। গুরুতর আহত অবস্থায় ঢামেকে নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক রেনুকে মৃত ঘোষণা করেন।
পদ্মা সেতুর জন্য মানুষের মাথা ব্যবহারের উদ্ভট গুজবের রেশ কাটতে না কাটতেই ছেলেধরা গুজবে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে চারদিকে। রাজধানী ঢাকাসহ কয়েকটি জেলায় ছেলেধরা সন্দেহে পিটিয়ে মেরে ফেলা হয়েছে বেশ কয়েকজনকে। গণপিটুনিতে আহত হয়েছেন আরো অনেকে। সব মিলিয়ে গত এক সপ্তাহে দেশের কয়েকটি জেলায় গণপিটুনিতে মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে অন্তত নয়জনে। গণপিটুনির শিকার অধিকাংশই নারী, মানসিক ভারসাম্যহীন এবং মাদকাসক্ত।