ছেলেধরা সন্দেহে নারীকে পিটিয়ে হত্যা: ৫শ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা
নিজস্ব প্রতিবেদক
🕐 ৮:৫৭ পূর্বাহ্ণ, জুলাই ২১, ২০১৯
রাজধানীর উত্তর বাড্ডায় ছেলেধরা সন্দেহে গণপিটুনিতে এক নারী নিহত হওয়ার ঘটনায় অজ্ঞাত ৪০০ থেকে ৫০০ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। নিহতের ভাগিনা নাসির উদ্দিন শনিবার রাতে বাড্ডা থানায় এ মামলা করেন।
মামলায় উল্লেখ করা হয়, অতর্কিতভাবে ওই নারীকে স্কুলের অভিভাবক, উৎসুক জনতাসহ অনেকে গণপিটুনি দেয়। এতে তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে আনুমানিক ৪০০ থেকে ৫০০ জন অজ্ঞাত ব্যক্তি জড়িত।
বাড্ডা থানার ডিউটি অফিসার এসআই মাসুদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। বাড্ডা থানার এসআই সোহরাব হোসেনকে মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।
এর আগে শনিবার সন্ধ্যায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিহতের মরদেহ শনাক্ত করেন তার ভাগিনা ও বোন রেহানা। তারা জানায়, নিহতের নাম তসলিমা বেগম রেনু।
বাড্ডা থানায় দায়ের করা মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, রেনু তার মেয়েকে ভর্তি করার জন্য স্কুলে যান। কিন্তু মানসিক অসুস্থতার কারণে তার আচরণ অস্বাভাবিক ছিল। এজন্য স্কুলের অনেকেই তাকে ছেলেধরা হিসেবে সন্দেহ করছিল। প্রধান শিক্ষক তার সঙ্গে কথা বলার জন্য রুমে নিয়ে যান। কিন্তু স্কুল প্রাঙ্গণে তার অস্বাভাবিকতা দেখে অনেকেই বের করে মারধর করতে চাইছিলেন।
প্রধান শিক্ষক রেনুকে বাইরে বের না করলে, স্কুলের কিছু অভিভাবক ও বাইরে থেকে আসা উৎসুক জনতা রুমের গেট ভেঙে তাকে 'ছেলেধরা' বলে মারধর করে। গুরুতর আহত অবস্থায় ঢামেকে নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক রেনুকে মৃত ঘোষণা করেন।
পদ্মা সেতুর জন্য মানুষের মাথা ব্যবহারের উদ্ভট গুজবের রেশ কাটতে না কাটতেই ছেলেধরা গুজবে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে চারদিকে। শনিবার এক দিনেই রাজধানী ঢাকাসহ কয়েকটি জেলায় ছেলেধরা সন্দেহে পিটিয়ে মেরে ফেলা হয়েছে তিনজনকে। গণপিটুনিতে আহত হয়েছেন অন্তত সাতজন। সব মিলিয়ে গত এক সপ্তাহে দেশের কয়েকটি জেলায় গণপিটুনিতে মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে অন্তত নয়জনে। গণপিটুনির শিকার অধিকাংশই নারী, মানসিক ভারসাম্যহীন এবং মাদকাসক্ত।