ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪ | ১২ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

স্কুলে ছাত্রীকে মারধরে শিক্ষক

প্রতিবাদ করায় ওসির রুমে রক্তাক্ত ভাই

নিজস্ব প্রতিবেদক
🕐 ১১:১৭ পূর্বাহ্ণ, জুলাই ০৭, ২০১৯

বোনকে মারধরের প্রতিবাদে স্কুলের গভর্নিং বডির বিরুদ্ধে মানববন্ধন করতে চাওয়ায় আল-আমিন নামে এক ব্যক্তিকে থানায় নিয়ে মারধর করার অভিযোগ উঠেছে। গতকাল শনিবার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (ক্র্যাব) মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে নির্যাতন বর্ণনা করে এই অভিযোগ করেন আল-আমিন।

আল-আমিন বলেন, ‘আমার বোন তামান্না আক্তার মুক্তি রূপনগরের কামাল আহম্মেদ মজুমদার স্কুল অ্যান্ড কলেজের পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী। সে স্কুলের শাপলা নামের একজন শিক্ষিকার বাসায় প্রাইভেট পড়ত। গত জুনে আমরা তার কাছে প্রাইভেট পড়ানো বন্ধ করি। উনি আমাদের কাছে ২০ দিনের বেতন পেতেন। এই টাকা না দেওয়ায় শাপলা ক্লাসের মৌমিতা নামে এক শিক্ষার্থীকে দিয়ে আমার বোনকে মারধর করায়। এতে আমার বোন মারাত্মকভাবে আহত হয়। তাকে দুটা পরীক্ষা দিতে দেওয়া হয়নি।’

আল আমিন বলেন, ‘আহত বোনের বিচার চাইতে আমি স্কুলে যাই। বিচার না পেয়ে স্কুলের বিরুদ্ধে মানববন্ধন করার ঘোষণা দেই। তখন গভর্নিং বডির সদস্য সুইটি আক্তার শিনু আমাকে নিয়ে রূপনগর থানায় যান। সেখানে ইন্সপেক্টর (তদন্ত) মোকাম্মেল আমাকে মারধর করেন এবং তৎকালীন ওসি শাহ আলমের রুমে নিয়ে যান। সেখানে আমি ওসি শাহ আলম, মোকাম্মেল এবং সুইটি ছিলেন। তখন মোকাম্মেল আমাকে মারতে থাকেন। ওসি সাহেব আমাকে সুইটির কাছে মাফ চাইতে বলেন। আমি সুইটির কাছে মাফ চাই। উনি আমাকে গালি দিয়ে বলেন, ‘পা ধরে মাফ চা।’ আমি পা ধরে মাফ চাইলে ইন্সপেক্টর মোকাম্মেল আমাকে নিয়ে থানা হাজতে ঢোকান।

তিনি আরও বলেন, ‘একই দিন আমাকে তিনবার হাজতে ঢোকানো হয়, আবার তিনবার বের করানো হয়। পরে সাদা কাগজে স্বাক্ষর নিয়ে আমাকে থানা থেকে ছাড়া হয়।’

আল-আমিন ও তামান্নার বাবা মুক্তিযোদ্ধা তোফাজ্জল হোসেন বলেন, ‘থানার তদন্ত অফিসার (মোকাম্মেল) আমার ছেলেকে বলেছেন, এটা নিয়ে বাড়াবাড়ি করলে তোকে মিথ্যা মামলা দিয়ে সারা জীবন জেলে কাটানোর ব্যবস্থা করব, নতুবা ক্রসফায়ার দিয়ে মেরে ফেলব।’

তিনি আরও বলেন, ‘বিষয়টি সুরাহার জন্য সুইটি, মোকাম্মেল ও থানার এসআই কামরুল আমার কাছে ৫০ হাজার টাকা দাবি করেন। অন্যথায় হয়রানির পরিমাণ আরও বাড়ানো হবে বলে জানানো হয়। এ কথা শোনার পর আমি আমার ছেলেকে কয়েক দিনের জন্য বাড়ির বাইরে পাঠিয়ে দেই।’

মারধর, টাকা দাবি ও মিথ্যা মামলায় ধরিয়ে দেওয়ার হুমকির বিষয়ে জানতে চাইলে সুইটি আক্তার শিনু বলেন, ‘এসব অভিযোগ বানোয়াট। এটা স্কুলের ব্যাপার, ছাত্রীর সঙ্গে ছাত্রীর মারামারি হয়েছে। আপনারা স্কুলে আসেন, সবার সঙ্গে কথা বলে রিপোর্ট করেন। এ বিষয় নিয়ে যখন তারা আমার কাছে আসে, তখন ছেলেটির (আল-আমিন) সঙ্গে আমার কথা কাটাকাটি হয়, একপর্যায়ে সে আমাকে ধাক্কা দেয়। আমি পুলিশে ফোন দিলে, পুলিশ এসে তাকে ধরে নিয়ে যায়। আমার এক মামার অনুরোধে আমি তার বিরুদ্ধে মামলা করিনি।’

রূপনগর থানা সূত্রে জানা যায়, থানার তৎকালীন ওসি শাহ আলম বদলি হয়ে বর্তমানে মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) বিভাগে রয়েছেন। থানায় মোকাম্মেল হক নামে একজন পুলিশ কর্মকর্তা রয়েছেন, যার পদবি ইন্সপেক্টর-অপারেশন্স।

হুমকির বিষয়ে ইন্সপেক্টর-অপারেশন্সের মোকাম্মেলের কাছে জানতে দুবার তার সরকারি মোবাইলে ফোন দেওয়া হলেও তিনি রিসিভ করেননি।

 
Electronic Paper