ঢাকা, বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪ | ১০ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

পথচারীদের জন্য ইফতার

ছাইফুল ইসলাম মাছুম
🕐 ২:৩৯ অপরাহ্ণ, মে ২৮, ২০১৯

দীর্ঘ রিকশার সারি। পাশে সুশৃঙ্খলভাবে দাঁড়িয়ে বিভিন্ন বয়সী নারী-পুরুষ। সবার মুখে ক্লান্তির ছাপ। অপেক্ষমাণ মানুষের চোখ গুনছে সময়। ইফতারের আগে পান্থপথের এসইএল সেন্টারের সামনে এমন দৃশ্য চোখে পড়বে। এ বছর রমজানের প্রথম দিন থেকেই পথচারীদের হাতে প্রতিদিন ইফতার তুলে দিচ্ছে এসইএল চ্যারিটেবল ফাউন্ডেশন। এখানে বিনামূল্যে ইফতার পেতে ভিড় করেন ব্যস্ত পথচারী, শ্রমিক থেকে শুরু করে কর্মজীবীরা।

প্রতিষ্ঠানটির এমন উদ্যোগে স্বস্তিদায়ক ইফতারের সুযোগ পাচ্ছেন প্রতিদিন প্রায় চারশ মানুষ। উদ্যোক্তারা জানিয়েছেন, বিনা পয়সার ইফতার কর্মসূচি চলমান থাকবে রমজানজুড়ে। ?রাজধানীর পান্থপথে ইফতার বিতরণের সময় বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় কথা হয় ফাউন্ডেশনের সমন্বয়ক ইবনুল সাইদ রানার সঙ্গে।

‘কেন এমন উদ্যোগ- জানতে চাইলে রানা বলেন, ‘জনবহুল সড়কে আমাদের ভবন। এই সড়কে ইফতারের সময় অনেক মানুষ যাতায়াত করে। অনেক মানুষের ইফতার করার উপায় থাকে না। আমরা ভাবলাম এ সময় কিছু ইফতার নিয়ে বসলে কেমন হয়। এতে রোজাদার মানুষ হাতের নাগালে ইফতার করার সুযোগ পাবেন। পথে বিড়ম্বনায় পড়তে হবে না।’

তিনি আরো বলেন, ‘আইডিয়াটা এসেছিল গত বছর রমজানের দুই দিন আগে। প্রথম রমজানে টার্গেট ছিল ৫০ থেকে ১০০ জন পথচারীকে ইফতার করানো। কিন্তু রমজানের দুই দিন যাওয়ার পর আমরা দেখলাম, শুধু পথচারী নন, আশপাশের শ্রমজীবী মানুষ, পাশের বাংলাদেশ স্পাইন অ্যান্ড অর্থোপেডিক হাসপাতাল, বিআরবি হাসপাতাল, শমরিতা হাসপাতালের রোগী ও রোগীর আত্মীয়স্বজন আসতে শুরু করেছেন। তখন আমরা সংখ্যা বাড়িয়ে দিই। এ বছর আমরা প্রথম রোজা থেকেই ইফতার বিতরণ করছি।’

তিনি জানান, প্রতিদিন ইফতারে ছোলা, মুড়ি, পিয়াজু, বেগুনি, শসা, খেজুর, শরবত, খিচুড়ি দেওয়া হয়। কখনো কখনো মোরগ পোলাও দেওয়া হয়। প্রতিষ্ঠানটি নিজেদের ব্যবস্থাপনায় তৈরি করছেন এই খাবার।

প্রতিদিন ৫টা ৫০ মিনিটে এসইএল সেন্টারের সামনে ইফতার সামগ্রী আনেন প্রতিষ্ঠানের কর্মীরা। স্বেচ্ছাসেবকরা সন্ধ্যা ছয়টা থেকে টেবিল বসিয়ে প্লেটে প্লেটে সাজিয়ে রাখেন ইফতার আইটেম। ৬টা ৩০ মিনিটে শৃঙ্খলার সঙ্গে উপস্থিত সবার মাঝে ইফতার বিলিয়ে দেওয়া হয়। ইফতার আয়োজনে স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে কাজ করছেন রাজধানীর বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া একদল শিক্ষার্থী। রমজানের প্রথম দিন থেকে যুক্ত রয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগীত বিভাগের শিক্ষার্থী ওমর ফারুক। খোলা কাগজকে তিনি বলেন, ‘সামাজিক দায়বদ্ধতার জায়গা থেকে এসইএল চ্যারিটেবল ফাউন্ডেশনের ইফতার আয়োজনে যুক্ত হয়েছি।’

সাইদ রানা বলেন, ইফতারে এমন ভিন্ন উদ্যোগ নিতে পেরে খুব ভালো লাগছে। আমরা গত বছর থেকে পথচারীদের ইফতার বিতরণ শুরু করেছি, তবে এই কাজটা আরও দশ বছর আগে শুরু করতে পারলে ভালো হতো। খুব সহজে এত মানুষের সেবা করা সম্ভব, এটা ইফতার বিতরণের মাধ্যমে উপলব্ধি করতে পারছি। আগামী বছর থেকে রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে বিনা পয়সায় ইফতার বিতরণের ইচ্ছার কথা জানান।

 
Electronic Paper