ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪ | ১২ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

রাজধানীর বাজারদর

ইলিশে আগুন, স্বস্তি নেই নিত্যপণ্যেও

নিজস্ব প্রতিবেদক
🕐 ১০:৪৬ পূর্বাহ্ণ, এপ্রিল ১২, ২০১৯

পাশাপাশি দোকানে বিক্রি হওয়া ইলিশগুলো মোটামুটি একই ওজনের। কিন্তু দুই দোকানির হাঁকা দামে মিল নেই। ৮০০ গ্রাম ওজনের একহালি ইলিশের দাম একজন হাঁকেন ৩ হাজার ২০০, আরেকজন সাড়ে ৪ হাজার টাকা। গতকাল শান্তিনগর বাজারের চিত্র এটি। বেশি দার হাঁকানো বিক্রেতা দাবি করেন, তার ইলিশগুলো তাজা। মহিদুল ইসলাম নামে ওই বিক্রেতা বলেন, হিমাগারে রাখা ইলিশগুলো কম দামে বিক্রি হচ্ছে। একই মাছ হিমাগারের না হলে দর অনেক বেশি। গত কয়েকদিনে তাজা মাছের দাম অস্বাভাবিক হারে বেড়ে গেছে। যদিও দ্বিতীয় বিক্রেতা তার মাছগুলো হিমাগারে ছিল বলে স্বীকার করেননি। তিনি বলেন, ভোরে আড়ত থেকে যে যেমন দামে কিনতে পেরেছে, লাভ রেখে সে তেমন দামেই বিক্রি করছে।

এদিকে ঝড়বৃষ্টির প্রভাব পড়েছে বাজারে। নিত্যপণ্যের প্রায় সবগুলোরই দাম বেড়ে গেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর কারওয়ানবাজার, রামপুরা, শান্তিনগর, মালিবাগ, হাজীপাড়া, খিলগাঁও অঞ্চলের বিভিন্ন বাজার ঘুরে ব্যবসায়ী ও ক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এমন তথ্য পাওয়া গেছে। সবজি, মাছ, মাংসের ব্যাপক চড়া দামে প্রায় দুই মাস ধরে এক প্রকার অস্বস্তিতে রয়েছেন রাজধানীবাসী। এর সঙ্গে রমজান সামনে রেখে সবজির দাম নতুন করে বেড়েছে।

ক্রেতাদের অভিযোগ সিন্ডিকেট করে সবজির দাম বাড়ানো হচ্ছে। রোজার সময় যাতে নতুন করে দাম বাড়ার অভিযোগ না ওঠে, সে জন্য রোজার একমাস আগেই সব পণ্যের দাম বাড়িয়ে নেওয়া হচ্ছে। বাজারে কার্যকরী মনিটরিং না থাকায় মুনাফালোভী ব্যবসায়ী চক্র এ অপচেষ্টা চালাচ্ছে।

বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বয়লার মুরগির কেজি আগের সপ্তাহের মতো বিক্রি হচ্ছে ১৬৫ টাকা থেকে ১৭৫ টাকা। তবে লাল লেয়ার মুরগি কিছুটা কমে ২১০ থেকে ২২০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে; যা গত সপ্তাহে ছিল ২৩০ থেকে ২৫০ টাকা। আর পাকিস্তানি কক মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২৭০ থেকে ২৮০ টাকা কেজিতে, যা গত সপ্তাহে ছিল ২৯০ থেকে ৩১০ টাকা কেজি। গরুর মাংসের কেজি সাড়ে ৫০০ টাকা। আগের মতো বাজার ভেদে গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৫৩০ থেকে ৫৬০ টাকা কেজিতে। মাংসের দামের পাশাপাশি স্বস্তি দিচ্ছে না ডিমের দামও। সপ্তাহের ব্যবধানে ডিমের দাম নতুন করে না বাড়লেও খুচরা পর্যায়ে একপিস ডিম ১০ টাকার নিচে মিলছে না। আর পাইকারিতে ডিমের ডজন বিক্রি হচ্ছে ১০৫ থেকে ১১০ টাকা।

সপ্তাহের ব্যবধানে অপরিবর্তিত রয়েছে মাছের দাম। তেলাপিয়া মাছ বিক্রি হচ্ছে ১৬০ থেকে ১৮০ টাকা কেজি। পাঙ্গাশ বিক্রি হচ্ছে ১৫০ থেকে ১৮০ টাকা কেজি। রুই ৩৫০ থেকে ৬০০ টাকা, পাবদা ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা, টেংরা ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা, শিং ৩০০ থেকে ৫০০ টাকা এবং চিতল মাছ বিক্রি হচ্ছে ৫০০ থেকে ৮০০ টাকা কেজিতে। এদিকে তিন সপ্তাহ ধরে চড়া দামে বিক্রি হওয়া সবজির দাম এখনও চড়াই রয়েছে। বরবটি গত সপ্তাহের মতো ৭০ থেকে ৮০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। পটল বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৬০ থেকে ৮০ টাকায়। একই দামে বিক্রি হচ্ছে ঢেঁড়স, কচুর লতি ও করলা। শিম বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৬০ টাকা কেজিতে। লাউ বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকা, ফুলকপি ৫০ থেকে ৬০ টাকা পিস। আর ধুন্দল বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকা কেজি। বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৬০ টাকা, মুলা ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজি। বাজারে নতুন আসা সজনে ডাঁটা বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ১০০ টাকা কেজি। গত সপ্তাহেও সবজির দাম এমন ছিল। দাম অপরিবর্তিত থাকা অন্য সবজিগুলোর মধ্যে কাঁচা পেঁপে বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৫০ টাকা কেজি। পাকা টমেটো বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৫০ টাকা, শসার কেজি ৫০ থেকে ৭০ টাকা, গাজর বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৪০ টাকা কেজি দরে।

তবে দাম অপরিবর্তিত থাকার তালিকা রয়েছে পিয়াজ ও কাঁচামরিচ। বাজার ভেদে দেশি পিয়াজ বিক্রি হচ্ছে ২৫ থেকে ৩০ টাকা কেজিতে। আমদানি করা ভারতীয় পিয়াজ আগের মতোই ২০ থেকে ২৫ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। কাঁচামরিচের পোয়া (২৫০ গ্রাম) বিক্রি হচ্ছে ১০ থেকে ২০ টাকা।

 
Electronic Paper