শিশু সানিনের ডিএনএতে মিলবে মায়ের লাশ?
নিজস্ব প্রতিবেদক
🕐 ৩:১১ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ২২, ২০১৯
পাঁচ বছরের শিশু সানিন। গত বুধবার রাতে রাজধানীর চকবাজারে আগুনের ঘটনায় সানিনের মা বিবি হালিমা বেগম শিলা (২৫) নিখোঁজ রয়েছেন। আগুন লাগার কিছুক্ষন আগে একটু বাড়ির নিচে গিয়েছিল সানিনের মা। সবাই বলছে, তার মা আর নেই, তবে শিশুটি বুঝে উঠতে পারছে তাদের ভাষা। আজ শুক্রবার মামার সঙ্গে এই শিশুটি এসেছে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। মায়ের লাশ খুঁজে পেতে মেয়ে সানিনের ডিএনএ নমুনা নিয়েছেন চিকিৎসকেরা।
সানিনের জন্য ঔষধ আনতে গিয়েছিলেন তার মা শিলা, আর সানিন খুজে নিতে এসেছে তার মায়ের লাশ। চকবাজারে আগুনের ঘটনায় ডিএনএ নমুনা দিতে হাসপাতালে আসা স্বজনদের কাছ থেকে জানা যাচ্ছে টুকরো টুকরো সব কষ্টের গল্প। সানিনের মা শিলার গল্পও জানা গেল তাঁর স্বজনদের কাছ থেকে।
চকবাজারে অগ্নিকাণ্ডের স্থান থেকে ২০০ গজ দূরেই পরিবার নিয়ে থাকতেন শিলা। শিলার স্বামী মোহাম্মদ সুমন। তিনি চকবাজারেই ব্যাগের ব্যবসা করেন। বুধবার রাতের আগুন তাঁদের বাসা পর্যন্ত যায়নি। তবে ‘ভাগ্য’ শিলাকেই আগুনের কাছে নিয়ে গেছে।
শিলার বোনের স্বামী মো. বেলাল হোসেন জানালেন, ঘটনার দিন রাতে সানিন একটু অসুস্থ ছিল। তার বাবা সুমন ছিলেন কর্মস্থলে। তাই শিলা তাঁর এক বোন ও দুই শিশুসন্তানকে বাসায় রেখে নিচে গিয়েছিলেন ওষুধ কিনতে। তিনি সেই যে গেছেন, আর ফেরেননি।
পরিবারের সদস্যদের ধারণা, নিচে ওষুধ কিনতে গিয়ে শিলা হয়তো ভয়াবহ আগুনের কবলে পড়েন। হয়তো তিনি আর নেই। শনাক্ত না হওয়া লাশের ভেতরে শিলা থাকতে পারেন—এমনটা ভেবে ডিএনএ নমুনা দিতে এসেছেন তাঁরা।
প্রসঙ্গত, বুধবার রাত পৌনে ১১টার দিকে চুড়িহাট্টা শাহী মসজিদের পেছনের একটি ভবন থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়। পরে তা পাশের ভবনগুলোতে ছড়িয়ে পড়ে। সর্বশেষ রাত ৩টার দিকে স্থানীয়দের সহায়তায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন ফায়ার সার্ভিসের প্রায় ২০০ কর্মী। এ ঘটনায় শেষ পর্যন্ত প্রাণহানির সংখ্যা ৮১ জন। পুড়ে কয়লা হয়ে যায় এই ৮১ জন মানুষ, আহত হন ৪৫ জনেরও বেশি। ৯ জনকে বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়েছে। তাদের মধ্যে সবার অবস্থাই আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।