ঢাকা, বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪ | ১১ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

জুলহাজ-তনয়ের খুনিই সাঁতারকুলে পুলিশের উপর হামলাকারী

নিজস্ব প্রতিবেদক
🕐 ৩:১৪ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ১৬, ২০১৯

২০১৬ সালের ২৫ এপ্রিল রাজধানীর কলাবাগানের নিজ বাসায় ইউএসএআইডি কর্মকর্তা জুলহাজ মান্নান তার বন্ধু থিয়েটারকর্মী মাহবুব হত্যাকাণ্ডে জড়িত আসাদুল্লাহ (২৫) সাঁতারকুলে পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায়ও জড়িত বলে জানিয়েছে পুলিশ। পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম এন্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলাম বুধবার দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে এক সাংবাদিক সন্মেলনে এ তথ্য দেন। এর আগে কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট (সিটিটিসি) জুলহাজ-তনয় হত্যার মূল সন্দেহভাজন আসাদুল্লাহ ওরফে ফখরুল ওরফে ফয়সাল জাকির ওরফে সাদিককে মঙ্গলবার রাতে গাজীপুরের টঙ্গি এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে।

সংবাদ সম্মেলনে মনিরুল ইসলাম বলেন, “আমরা বিভিন্ন সময় বলেছি যে আনসার আল ইসলামের একাধিক গ্রুপ থাকে। অর্থাৎ একটা থাকে অপারেশনাল গ্রুপ বা কিলার গ্রুপ, আরেকটা থাকে ইনটেল গ্রুপ যারা ইনটেলিজেন্স কালেকশন করে। আমরা নিশ্চিত হয়েছি যে জুলহাজ-তনয় হত্যাকাণ্ডে সাতজন উপস্থিত ছিল। এর মধ্যে পাঁচজন ছিল কিলার গ্রুপের সদস্য এবং দুইজন ছিল ইনটেল গ্রুপের সদস্য।”

তিনি আরো বলেন, “হত্যাকাণ্ডের সময় বাসার দারোয়ানকেও আহত করা হয়েছিল। পাঁচজন কিলার গ্রুপের সদস্য জুলহাসের বাসায় গিয়েছিল। তাদের মধ্যে দারোয়ানদের আটকে রেখেছিল তিনজন আর দুইজন ভেতরে ঢুকেছিল।”

কিলার গ্রুপের ওই পাঁচজনের মধ্যে আসাদুল্লাহ ওরফে ফখরুল ওরফে ফয়সাল জাকির ওরফে সাদিক ও আরাফাত এ দু’জনকে পুলিশ গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছে বলে জানান সিটিসি প্রধান। তিনি জানান, আরাফাত স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে জানিয়েছে যে, সেও এই পাঁচজনের একজন ছিল।

এছাড়া ইনটেল গ্রুপের জাবেদ ও সায়মন নামের দুইজনসহ জুলহাজ-তনয় হত্যাকাণ্ডে জড়িত মোট চারজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে যাদের মধ্যে তিনজনই সরাসরি জড়িত ছিল ওই ঘটনায়।

সিটিসি প্রধান বাড্ডার সাঁতারকুলে জঙ্গি আস্তানায় অভিযান চলাকালে পুলিশের ওপর হামলার ঘটনার কথা স্মরণ করে বলেন, সেই ঘটনার সঙ্গেও গ্রেফতার আসাদুল্লাহ ওরফে ফখরুল জড়িত ছিল এবং ওই সময় আহত পুলিশ কর্মকর্তা এই ব্যক্তিই তাকে আঘাত করেছিল এবং তার সঙ্গে থাকা সরকারি অস্ত্রটি ছিনিয়ে নিয়েছিল বলে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

মনিরুল ইসলাম আরো জানান, আসাদুল্লাহকে আদালতে হাজির করে রিমান্ড আবেদন করা হবে। তিনি বলেন, রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদের পর তার কাছ থেকে আরো তথ্য পাওয়া যাবে বলে আমরা আশা করছি।

উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের ২৫ এপ্রিল বিকেলে কলাবাগানের লেক সার্কাস এলাকায় ৫/৭ যুবক পার্সেল দেয়ার কথা বলে জুলহাজ মান্নানের বাসায় ঢুকে তাকে এবং তার বন্ধু তনয়কে কুপিয়ে হত্যা করে। সমকামীদের অধিকার নিয়েও কাজ করতেন ইউএসএআইডি কর্মকর্তা জুলহাজ মান্নান। এছাড়াও তিনি সমকামীদের নিয়ে সাময়িকী ‘রূপবান’ এর সম্পাদকও ছিলেন। তার বন্ধু মাহবুব রাব্বী তনয় ছিলেন লোকনাট্য দলের কর্মী এবং ‘শিশু নাট্য প্রশিক্ষক’ হিসেবেও পিটিএ নামে একটি প্রতিষ্ঠানে তিনি কাজ করতেন।

এ হত্যাকাণ্ডের পর আল-কায়েদা ভারতীয় উপমহাদেশ (একিউআইএস) শাখা ঘটনার দায় স্বীকার করলেও দেশীয় নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন আনসারুল্লাহ বাংলা টিমকেই এর জন্য অভিযুক্ত করে পুলিশ।

 
Electronic Paper