স্বাস্থ্য মন্ত্রীর ছেলের নির্দেশে বনানীর প্রেসক্রিপশন পয়েন্ট বন্ধ করা হয়েছে
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
🕐 ৩:৪০ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ২৪, ২০২৩

স্বাস্থ্য মন্ত্রীর ছেলে রাহাত মালেকের নির্দেশে আইন আদালতকে তোয়াক্কা না করে বনানীর প্রেসক্রিপশন পয়েন্ট বন্ধ করে দিয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন প্রতিষ্ঠানটির নির্বাহী পরিচালক খন্দকার আবুল খায়ের।
আজ রোববার দুপুরে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ক্রাইম রিপোর্টার্স ইউনিটিতে তিনি এসব কথা বলেন।
খন্দকার আবুল খায়ের বলেন, প্রেসক্রিপশন পয়েন্ট লি: বিগত ১৬ বছর ধরে কোনোপ্রকার অভিযোগ ছাড়াই সুনামের সাথে চিকিৎসা সেবা পরিচালনা করে আসছে। কম খরচে উন্নত চিকিসা দিয়ে প্রতিষ্ঠানটি ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। প্রতিষ্ঠানে প্রায় ২০০ কর্মকর্তা ও কর্মচারী নিয়মিত চিকিৎসা সেবার সাথে জড়িত। ৫০জন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক নিয়মিত চেম্বার করে উন্নত চিকিৎসা সেবা দিয়ে আসছে। গুলশান-বনানীর মতো অভিজাত এলাকায় এত কম খরচে উন্নত চিকিৎসা সেবা আর কেউ দিতে পারেনি। ফলে প্রতিদিন হাজারো রোগী এখানে সেবা নিতে ভীড় করতো। একদিকে করোনা অন্যদিকে ডেঙ্গু মহামারীতে সারাদেশের হাসপাতালগুলোতে ঠাঁই নেই। তারা রোগ নির্ণয় করতে পরীক্ষা করাতে পারছে না। ফলে মৃত্যুকোলে ঢলে পড়ছে অসংখ্য মানুষ। সেখানে প্রেসক্রিপশন পয়েন্টের মতো একটি স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠান স্বাস্থ্য অধিদপ্তরকে ব্যবহার করে একটি কুচক্রি মহল বেআইনিভাবে বন্ধ করে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছে। স্বাস্থ্যমন্ত্রীর ছেলে রাহাত মালেকের নির্দেশেই তা করা হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ করতে আইন আদালতকে তোয়াক্কা করা হয়নি, শুধুমাত্র ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে নিয়মবহির্ভূতভাবে জোরপূর্বক তা করা হয়েছে। আমাদের এ সেবামূলক প্রতিষ্ঠান ও ভবনটি দখল করাই তাদের মূল উদ্দেশ্য।
তিনি বলেন, গত ১৮ মে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের একটি পরিদর্শন দল কোন কিছু না জানিয়ে হঠাৎ প্রেসক্রিপশন পয়েন্ট ডায়াগনস্টিক সেন্টার পরিদর্শন করে। পরবর্তীতে ২২মে একটি চিঠিতে প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে নিরাপদ রক্ত পরিসঞ্চালন আইন অমান্য; অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের মাধ্যমে জনগণের হয়রানি; মেয়াদ উত্তীর্ণ রি-এজেন্ট এবং অদক্ষ জনবলের মাধ্যমে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার অভিযোগ আনা আনা হয়। একই সঙ্গে কোন প্রকার কারণ দর্শানোর নোটিশ না দিয়ে ডায়াগনস্টিক সেন্টার বন্ধ ও লাইসেন্স স্থগিত করার আদেশ দেয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এই আদেশের বিরুদ্ধে প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে আপিল করলে তা অগ্রাহ্য করে ৭ জুন চিঠি দেয়। পরে নিয়মানুযায়ী স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে আপিল করলেও তারা রহস্যজনকভাবে নিশ্চুপ ভূমিকা পালন করে। পরবর্তীতে এই আদেশের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে রিট করেছি। রিটটি এখন শুনানির অপেক্ষায় রয়েছে। মহামান্য হাইকোর্ট খুললে সেটির শুনানি হবে।
তিনি বলেন, বিষয়টি নিয়ে আমরা যখন উচ্চ আদালতে রিট করলেও বিগত ১০ জুন ম্যাজিস্ট্রেট ইরতেজা হাসান, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক ডা: আহমেদুল কবির, পরিচালক ডা: আদনান, ডা: বেলাল, ডা: মইনুলের নেতৃত্বে বনানী থানার পুলিশ সদস্যদের নিয়ে মোবাইল কোর্ট বসায় এবং প্রতিষ্ঠানে কর্মরত স্টাফদের বের হয়ে যেতে নির্দেশ দেয়। হাইকোর্টে এ বিষয়ে একটি রিট আছে এবং হাইকোর্টে শুনানি হবে জানালে পুলিশ চলে যায়। কিন্তু ম্যাজিস্ট্রেট বসে থাকেন। এরই মধ্যে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে একটি আদেশপর চিঠি আনান। চিঠিতে ৭ কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ করে মালামাল সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়। ম্যাজিস্ট্রেট নিজ হাতে আমাদের চিঠি দিয়ে স্থান ত্যাগ করেন।
