‘সিজার কমিয়ে আনতে কাজ করছে নারী ও শিশু হাসপাতাল’
শাহিনুর রহমান শাহিন, সাভার
🕐 ৮:২১ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ২৪, ২০২২

বাংলাদেশে মায়েদের স্বাভাবিক সন্তান প্রসবের তুলনায় সিজারিয়ান অপারেশনের মাধ্যমে সন্তান প্রসবের হার অনেক বেশী। অত্যন্ত আশঙ্কাজনকভাবে এর হার বেড়ে যাচ্ছে এবং সাধারণ মানুষ আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে।
বাংলাদেশে সিজারিয়ান সেকশনের হার অন্যান্য দেশের তুলনায় সব্বোর্চ ৬৭ভাগ। ঠিক কোন পরিসংখ্যান না থাকলেও বর্তমানে এর হার ৮০ ভাগেরও উপরে। তবে আশুলিয়ার নারী ও শিশু হাসপাতালে এর হার কমিয়ে আনতে দীর্ঘদিন ধরেই কাজ করছে। তাদের ২০২২ সালে সেপ্টেম্বরের পরিসংখ্যান অনুযায়ী এর হার কমে ৩৭ ভাগে নেমেছে।
সোমবার দুপুরে আশুলিয়ার নারী ও শিশু হাসপাতালের কনফারেন্স কক্ষে এক সাংবাদিক সম্মেলনে এসব তথ্য জানান হাসপাতালটির প্রধান নির্বাহী ডা: দবির উদ্দিন আহাম্মেদ।
এসময় তিনি জানান, সিজারিয়ান অপারেশনের সঠিক কোন তথ্য না থাকলে দিন দিন এর হার বৃদ্ধি পাচ্ছে। তবে মাতৃস্বাস্থ্য সুরক্ষা ও জনসচেতনতার স্বার্থে সিজারিয়ান অপারেশন কমিয়ে আনতে এবং অনাকাঙ্খিত ঝুঁকি কমাতে স্বাভাবিক প্রসবে উদ্ভুদ্ধ করে যাচ্ছে আশুলিয়ার নারী ও শিশু হাসপাতাল। এ হাসপাতাল থেকে আগে সিজারিয়ানের মাধ্যমে সন্তান প্রসব করা নারীও এখান থেকে দ্বিতীয় সন্তান স্বাভাবিকভাবে প্রসব করা হয়েছে।
তিনি জানান, হাসপাতালটি সিজারিয়ান অপারেশন কমিয়ে আনার লক্ষে দীর্ঘদিন ধরেই কাজ করে যাচ্ছে। বছরে গড়ে প্রায় ২ হাজার ডেলিভারির মধ্যে বিগত ২০১৭ সাল পর্যন্ত সিজারিয়ান ডেলিভারির হার ছিল ৫৭%-৭৩% পর্যন্ত। ২০১৭ ও ২০১৮ সালে নারী ও শিশু হাসপাতালের নিজস্ব স্টাডি প্রটোকলে ১১ টি ইটারভেশনাল, প্রসূতি চিকিৎসক ও নার্সদের বিশেষ প্রশিক্ষণ এবং মায়েদের কাউন্সিলিংয়ের মাধ্যমে ২০১৬ সালে ৬৮% থেকে কমে ২০১৮ সালে ৪২% এ নেমে আসে।
সিজারিয়ান অপারেশনের হারকে কমিয়ে আনার লক্ষ্যে বিল এন্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশন নারী ও শিশু হাসপাতালটিকে প্রধান পার্টনার করে ২ বছর মেয়াদী একটি রিসার্চ প্রজেক্ট নিয়ে কাজ করছে। এর সাথে আরো দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের সাতটি হাসপাতাল সংযুক্ত রয়েছে। যা ২০২১ সালের আগস্ট মাসে শুরু হয়।
এরই মধ্যে মাতৃস্বাস্থ্য সুরক্ষা ও জনসচেতনতার স্বার্থে ওই প্রকল্পের আওতায় বিগত এক বছরে প্রসূতি চিকিৎসক ও নার্সদের বিশেষ ট্রেইনিং ম্যানুয়্যাল তৈরী করে তাদেরকে ১৩ টি ইনটারভেনশন সহ রোগীর পাশে থেকে হাতে কলমে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। এছাড়া প্রতিটি পার্টনার হাসপাতালে সিটিজি মেশিন, ডপলার মেশিন, ভেন্টোজ মেশিন, ম্যানিকুইন, লেবার বেড ও ওয়র্মার সহ স্বাভাবিক সন্তান প্রসবের জন্য প্রয়োজনীয় সকল যন্ত্রপাতি সরবরাহ করা হয়েছে।
এক বছরের কার্যক্রমে স্বাভাবিক সন্তান প্রসবকে উৎসাহিত করা হয়েছে এবং প্রায় সবগুলি পার্টনার হাসপাতালেই সিজারিয়ান অপারেশনের প্রবনতা কমিয়ে আনা হয়েছে। যা ২০২২ এর সেপ্টেম্বর মাসের পরিসংখ্যান অনুযায়ী নারী ও শিশু হাসপাতালে সিজারিয়ান অপারেশনের হার অনেক কমিয়ে বর্তমানে ৩৭% নেমেছে।
সাংবাদিক সম্মেলণে এসময় নারী ও শিশু হাসপাতালের উপ-ব্যবস্থাপক হারুন অর রশিদ, গাইনী বিভাগের প্রধান প্রফেসর ডাঃ ফেরদৌসী বেগম এবং পরিচালক (গবেষণা) ডাঃ খোরশিদ তালুকদারসহ হাসপাতালের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারী বৃন্দ।
সংবাদ সম্মেলনে এসময় স্বাভাবিক প্রসবের মাধ্যমে মা হয়েছেন তাদের বেশ কয়েকজন অভিজ্ঞতা ব্যক্ত করেন।
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
